ভালই চলছিল তাঁর কর্মজীবন। সিনেমায় অভিনয়, আইটেম গান, সম্পর্কের গুঞ্জন... বেশ রসেবশেই ছিলেন ভোজপুরী অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা পণ্ডিত। কিন্তু ২০২১ সালে আচমকাই ফাঁস হয়ে যায় প্রিয়ঙ্কার ব্যক্তিগত ভিডিয়ো। এমএমএসকাণ্ডে নাম জড়ানোর পর কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় অভিনেত্রীকে।
ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর পুরো বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন অভিনেত্রী। সেই ঘটনার এক বছর পার হওয়ার পর সম্প্রতি মুখ খোলেন প্রিয়ঙ্কা।
প্রিয়ঙ্কার দাবি ছিল, তাঁর কেরিয়ার এবং ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কেউ উঠেপড়ে লেগেছে এবং সেই কারণেই এই ভিডিয়োতে তাঁর নাম জুড়ে দেওয়া হয়েছিল।
এই ভিডিয়োর কারণে তাঁর কেরিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রিয়ঙ্কা। ইতিমধ্যেই আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন প্রিয়ঙ্কা। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন তিনি। যদিও তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে, কেন এক বছর পর এই ঘটনা নিয়ে পুলিশি তদন্তের পথে গেলেন অভিনেত্রী? কেন ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই তিনি এই পদক্ষেপ করেননি?
কিন্তু কী ভাবে উত্থান হল অভিনেত্রীর? কী ভাবেই বা এমএমএসকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লেন?
১৯৯১-এর ৩০ জুন উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে প্রিয়ঙ্কার জন্ম।
প্রিয়ঙ্কার ছোটবেলাতেই তাঁর ভাইকে নিয়ে গুজরাতের আমদাবাদে চলে আসেন তাঁদের বাবা-মা।
বাবা-মার কী পেশার সঙ্গে যুক্ত, তা কোনও দিন প্রকাশ্যে আনেননি প্রিয়ঙ্কা।
তবে মাঝেমধ্যেই সমাজমাধ্যমে নিজের পরিবারের সঙ্গে ছবি শেয়ার করতে দেখা যায় প্রিয়ঙ্কাকে।
ছোট থেকেই নিজেকে পর্দার সামনে দেখার ইচ্ছা জাগে প্রিয়ঙ্কার। অভিনয়ের পাশাপাশি নাচের দিকেও তাঁর আকর্ষণ তৈরি হয়। ছোটবেলায় নাচের তালিমও নিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা।
প্রিয়ঙ্কার পড়াশোনা আমদাবাদেই। স্কুলের গণ্ডি টপকানোর পর তিনি আমদাবাদের একটি কলেজ থেকে স্নাতক হন।
হিন্দি সিনেমার অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বেশ কিছু দিন মুম্বইয়ের চক্কর কাটার পরও কোনও সুবিধা করতে পারেননি প্রিয়ঙ্কা।
এর পর নিজের ভাগ্যপরীক্ষা করতে ভোজপুরি সিনেমার জগতে প্রবেশের চেষ্টা করেন প্রিয়ঙ্কা। কিছু দিন প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে সেই সুযোগ আসে।
২০১৩ সালে ভোজপুরি সিনেমা ‘জিনা তেরি গালি মে বাবু’র মাধ্যমে ভোজপুরি ছবিতে আত্মপ্রকাশ করেন প্রিয়ঙ্কা।
প্রথম ছবির পরই ছবির দর্শকদের কাছ থেকে অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। বাড়তে শুরু করে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যাও।
প্রথম সিনেমাতেই সেরা নবাগতা অভিনেত্রী হিসাবেও পুরস্কার পেয়েছিলেন। তার পর থেকে তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ভোজপুরি সিনেমার শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী হিসাবে বিবেচিত হতে শুরু করেন প্রিয়ঙ্কা। ভোজপুরি ইন্ডাস্ট্রির প্রায় সমস্ত বড় অভিনেতার সঙ্গে তিনি অভিনয় করেছেন।
অভিনয় ছাড়াও প্রিয়ঙ্কা মডেল হিসাবে কাজ করেছেন। অনেক বিজ্ঞাপনের মুখ হিসাবেও কাজ করেছেন তিনি।
অভিনেতা প্রদীপ পাণ্ডে এবং পবন সিংহের সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল অভিনেত্রীর।
প্রিয়ঙ্কা অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলি হল ‘মাত দেন মেরি সওতান কো’, ‘বেহনোই জি’, ‘মেরে পেয়ার কো তুম ভুলা তো না দোগে’ এবং ‘পুলিশগিরি’।
কিন্তু এর মধ্যেই ২০২১ সালে তাঁর এমএমএসকাণ্ড প্রকাশ্যে আসে। মুখ থুবড়ে পড়ে তাঁর অভিনয় জীবন।