বড় বড় তারকা বা ধনী ব্যক্তিরা তাঁদের নিজস্ব বিমানে করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভ্রমণ করেন। তবে সাধারণের কাছে এই ধরনের বিমানে চেপে ভ্রমণ করা স্বপ্ন। চাপতে না পারলেও এই সব ব্যক্তিগত বিমানের ভিতরে কী আছে এবং সেখানে কী কী হয়, তা নিয়ে কিন্তু সাধারণের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই।
প্রাইভেট জেটের ভিতরে কী কী হয় তা নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন এক বিমানসেবিকা। ওই বিমানসেবিকা একটি বিলাসবহুল ব্যক্তিগত বিমানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওই বিমানসেবিকা নিজের অভিজ্ঞতার কথা সংবাদমাধ্যম ‘দ্য এক্সপ্রেস’-এর সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন।
বিমানসেবিকা জানান, বিলাসবহুল ব্যক্তিগত বিমানে ভ্রমণকারী বেশির ভাগই মানুষই সাধারণত ব্রিটেন এবং আমেরিকার ধনী মানুষ। ছুটি উপভোগ করতে বা বন্ধু-পরিবারের সঙ্গে ভাল সময় কাটাতেই এই ধনী ব্যক্তিরা বিদেশযাত্রা করেন।
বিমানসেবিকার দাবি, এই বিমানে চড়ার যা খরচ, তা থেকেই বোঝা যায় যে যাঁরা প্রাইভেট জেটে চড়েন তাঁরা কেবল ধনী নন, অতি ধনী।
কোন কোন ধনী ব্যক্তি বা তারকার সঙ্গে তিনি প্রাইভেট জেটে সফর করেছেন তা অবশ্য প্রকাশ্যে আনতে চাননি ওই বিমানসেবিকা। তবে জানান, এক জন নামী ইউটিউবারও এক বার প্রাইভেট জেটে তাঁর সঙ্গে যাত্রা করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘‘এক বার আমি আমেরিকার এক ধনী যাত্রী এবং তাঁর বান্ধবীর সঙ্গে ভ্রমণ করেছিলাম। আমেরিকা থেকে আমরা ইউরোপে আসি। ইউরোপে এসে দেখি সেখানে তাঁর আরও এক বান্ধবী আছেন। এই সব দেখেও আমাকে খুব স্বাভাবিক আচরণ করতে হয়েছিল। এ রকম ঘটনা আমার চোখে আগে পড়েনি। বিশ্রী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারত।’’
ওই বিমানসেবিকা আরও বলেন, ‘‘কেউ আমাকে ওই ব্যক্তির একাধিক বান্ধবী থাকার বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানাননি। ওই ব্যক্তি বিমানে চাপার পর বিমানচালক আমাকে তাঁর বান্ধবীদের বিষয়ে জানান।’’
আরও একটি অদ্ভুত অভিজ্ঞতার কথা তিনি ভাগ করে নেন। তিনি বলেন, ‘‘এক বার এক যাত্রী নিকটাত্মীয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যাচ্ছিলেন এবং সেখানে যাওয়ার পথে তিনি আমার কাছে মদ চান। কিন্তু শেষকৃত্যে যাচ্ছেন শুনে আমি বিমানের মধ্যে কোনও মদ্যপানের ব্যবস্থা রাখিনি।’’
মদ না দেওয়া সত্ত্বেও ওই যাত্রী তাঁকে ভাল বখশিস দেন বলে ওই বিমানসেবিকা জানান। ভারতীয় টাকায় এখনও পর্যন্ত তিনি সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বখশিস পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।
কিছু কিছু যাত্রী এই ধরনের বিমানে চড়ে অভব্য আচরণ করেন বলেও বিমানসেবিকা উল্লেখ করেন। তবে কোন কোন তারকা বা ধনী ব্যক্তি অভদ্র ব্যবহার করেছেন তা নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি।
বিমানসেবিকা জানান, অনেকে বাজে ব্যবহার করলেও বেশির ভাগ যাত্রীই তাঁদের যাত্রা উপভোগ করেন। কেউ কেউ বিমানে নাচগান করে ফুর্তি করেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
কোনও যাত্রী কম সময়ের জন্য প্রাইভেট বিমানে চাপলে তাঁদেরও আমোদ-প্রমোদের সমস্ত ব্যবস্থা করা থাকে বলেও ওই বিমানসেবিকা জানিয়েছেন।