৫০০ বা ২ হাজার টাকার এক-একটি কাগুজে নোট তৈরি করতে সরকারের কোষাগার থেকে কত টাকা খরচ হয়?
১০ হোক বা ২ হাজার টাকা— প্রতিটি ব্যাঙ্কনোট তৈরি করার জন্য কত টাকার ব্যয় হয়, তা জানতে চেয়ে কয়েক বছর আগে একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করা হয়েছিল। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে তার খতিয়ানও প্রকাশ পেয়েছিল।
কাগুজে নোটের খরচ সম্পর্কে জানানোর আগে পিছিয়ে যাওয়া যাক। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর। রাতারাতি ৫০০ এবং হাজার টাকার নোট বাতিল বলে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। যার ফলাফল নিয়ে আজও সরকার এবং বিরোধী, দু’পক্ষের বিতর্ক অব্যাহত।
মোদী সরকারের দাবি ছিল, কাগুজে নোটের ব্যবহার কমিয়ে ডিজিটাল লেনদেন বাড়ালে কালো টাকায় লেনদেন রোখা যাবে। যদিও বিরোধীদের দাবি, গত কয়েক বছরে ডিজিটাল লেনদেন বেড়েছে বটে। তবে নগদ লেনদেন যে কমে গিয়েছে, তা বলা যাবে না। করোনাকালে গৃহবন্দি অবস্থায়ও ব্যাঙ্কনোটের সংখ্যা এবং ব্যবহার, দুই-ই বেড়েছে বলে দাবি বিরোধীদের।
দেশের বাজারে কোন ব্যাঙ্কনোট কত পরিমাণ ছাড়া হবে, তা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরামর্শেই স্থির করে কেন্দ্র। কত সংখ্যক নোট ছাপার প্রয়োজন, তা স্থির করতেও শীর্ষব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হতে হয়। আমজনতার লেনদেনের চাহিদা মেটাতে কত টাকা বাজারে ছাড়া হবে, তা-ও মাথায় রাখতে হয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে।
রাজ্যসভায় একটি প্রশ্নের জবাবে গত বছর কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধরি বলেছিলেন, ‘‘২০১৮ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৩৩ কোটি ৬০ লক্ষটি ২ হাজার টাকার নোট বাজারে ছিল। যা বাজারের মোট নোটের ৩.২ শতাংশ। আর্থিক মূল্যের নিরিখে তা ৩৭.২৬ শতাংশ ছিল।’’
অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর বাজারে ব্যাঙ্কনোটের সংখ্যা আগের থেকে কমেছে। সে সময় ২ হাজার টাকার ২২ কোটি ৩০ লক্ষ নোট বাজারে ছিল। যা বাজারের মোট নোটের ১.৭৫ শতাংশ। আর্থিক মূল্যের নিরিখে তা ১৫.১১ শতাংশ।
২০১৮ সালে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে জনস্বার্থ মামলায় বিভিন্ন ব্যাঙ্কনোট ছাপানোর খরচ জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাতে জানা গিয়েছে, ২ হাজার টাকার একটি নোট তৈরি করতে সরকারের ৪.১৮ টাকা খরচ হয়।
নোটবন্দির পর ৫০০ টাকারও ভোলবদল হয়েছে। নতুন রূপের সেই টাকা বানাতে নোট প্রতি ২.৫৭ টাকা খরচ হয় সরকারের। অন্য দিকে, ১০০ টাকার একটি ব্যাঙ্কনোট বানাতে ১.৫১ টাকা খরচ হয়।
১০ এবং ৫০ টাকার একটি নোট তৈরির জন্য খরচ একই— ১.০১ টাকা। তবে ২০ টাকার জন্য ১ টাকা খরচ হয়।
ওই জনস্বার্থ মামলায় জানা গিয়েছে, ৫০০ টাকার পুরনো এবং নতুন নোট তৈরির খরচেও পার্থক্য রয়েছে।
৫০০ টাকার একটি পুরনো নোট তৈরি করতে খরচ হত ৩.০৯ টাকা। ফলে ওই মূল্যের একটি নতুন নোটে ৫২ পয়সা সাশ্রয় হয় সরকারের। যদিও এই হিসাবের গোটাটাই ২০১৮ সালের সময়কার।