২০০৯ সালে রয়্যাল এয়ারফোর্সের উদ্ধারকারী বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের যুবরাজ উইলিয়াম। বিপর্যয়স্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ চালাতেন তিনি। পরে ২০১৫ থেকে টানা দু’বছর বায়ুসেনার এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স চালিয়েছিলেন উইলিয়াম।
বায়ুসেনার যে সিকিং কপ্টারে চেপে যুবরাজ উদ্ধারকাজে যেতেন, সেটিকেই আজ ‘গ্ল্যাম্পিং পড’-এ বদলে ফেলা হয়েছে। এ জন্য খরচ পড়েছে ভারতীয় মুদ্রায় দু’কোটি ৩৬ লক্ষ টাকারও বেশি।
ইয়র্কশায়ারের শিল্পপতি বেন স্টোনহাউসের সৌজন্যে এই ভোলবদল। আবর্জনার গাদায় পড়েছিল তিনটি কপ্টার, যার মধ্যে দু’টি চালাতেন উইলিয়াম। সেগুলোকেই তুলে এনে নতুন রূপ দিলেন বেন।
পুরনো ভাঙাচোরা সেই কপ্টার এখন ‘গ্ল্যাম্পিং পড’। কী এই ‘গ্ল্যাম্পিং পড’? এখানে থাকে হোটেলের ঘরের মতো সুবিধা। ফারাক হল, এই পড বসানো থাকে একেবারে প্রকৃতির মাঝে।
তিনটির মধ্যে দু’টি কপ্টার থুড়ি পড রাখা হয়েছে স্কারবরোর কাছে পাইনউড পার্ক ক্যাম্পসাইটে। এই দু’টির মধ্যে একটি চালাতেন উইলিয়াম। তৃতীয় কপ্টারটি রূপান্তরিত হয়েছে একটি ক্যাফেতে। সমুদ্রের ধারেই রয়েছে সেই ক্যাফে। অতীতে এই তৃতীয় কপ্টারে চেপেই প্রথম বার উদ্ধারকাজে গিয়েছিলেন যুবরাজ উইলিয়াম।
১৯৭৮ সালে কাজে যোগ দিয়েছিল রয়্যাল এয়ারফোর্সের সি-কিং কপ্টারটি। উপসাগরীয় যুদ্ধ, ইরাক এবং আফগানিস্তানের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল এটি।
রয়্যাল নেভিতেও রয়েছে এই ধরনের সি-কিং কপ্টার। এ রকমই এক কপ্টার চালাতেন উইলিয়ামের কাকা যুবরাজ অ্যান্ড্রিউ। ১৯৮২ ফকল্যান্ড যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
২০১০ থেকে ২০১৩ সালে রয়্যাল এয়ারফোর্সের একটি হলুদ কপ্টার চালাতেন যুবরাজ। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট উইলিয়াম ওয়েলস হিসাবে।
কার্যকালে ১৫৬টি উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন উইলিয়াম। একটি অভিযানে ১৬ বছরের এক সাঁতারুকে উদ্ধার করেন।
যে তিনটি কপ্টারকে পডে পরিণত করা হল, সেগুলো বায়ুসেনার চাকরি থেকে অবসর নিয়েছিল ২০১৫ সালে। কপ্টারের কোনও অংশই বিক্রির মতো অবস্থায় ছিল না। তাই বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের থেকে ওই তিনটি কপ্টার কিনে নেন শিল্পপতি স্টোনহাউস। তার পর গত চার বছর ধরে তা মেরামত করে নতুন রূপ দিয়েছেন। বেন বলেন, ‘‘বায়ুসেনার এই কপ্টারগুলো আদতে কী রকম, ভিতরটা কত বড়, তা সাধারণ মানুষের অন্তত এক বার দেখা উচিত। বিশেষত বাচ্চাদের। বেশির ভাগ বাচ্চাই কোনও দিন এ ধরনের কপ্টার দেখেনি।’’
যদিও উইলিয়ামের কপ্টার চালানোর অভিজ্ঞতা বুঝে উঠতে পারবেন না সাধারণ মানুষ। কারণ কপ্টারের ভিতরের ভোল পুরোপুরি বদলে ফেলা হয়েছে।
ককপিটের রাবার আর ধাতব আসন এখন নরম গদি সাঁটা শয্যা, যেখানে ঘুমাতে পারবেন দু’জন। কপ্টারের ভিতরের আলমারি এখন বাচ্চাদের বিছানা। উইঞ্চ যন্ত্রটি বাচ্চাদের দোলনা।
এক-একটি পডে থাকতে পারবেন দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং তিন শিশু। এক রাতে থাকার খরচ পড়বে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।