Prince Harry

‘মুখের থেকে স্তনের দিকে বেশি নজর, চোখ দিয়ে নগ্ন করেন’ মডেলকে! ফাঁস হ্যারির গোপন জীবন

সম্প্রতি ‘স্পেয়ার’ নামে আত্মজীবনী লেখা শুরু করেন ব্রিটেনের যুবরাজ হ্যারি। কিন্তু তা প্রকাশের আগেই লেখনীর কিছু কিছু অংশ সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:৪৮
Share:
০১ ২১

বেলাগাম জীবনযাপনের নিরন্তর অভিযোগ থেকে স্ত্রী মেগানকে নিয়ে রাজবাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া। ইংল্যান্ডের যুবরাজ হ্যারিকে নিয়ে চর্চার শেষ নেই। কেউ বলেন তিনি ব্রিটেনের রাজপরিবারের অচলায়তন ভেঙে দেওয়া বজ্রনির্ঘোষ, কারও কাছে তিনি বেয়াদপ, যিনি মানেন না কোনও নিয়ম। রাজপরিবার তো বটেই, গোটা ব্রিটেনের সম্মানই নাকি ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছেন তিনি। তবে সুখ্যাতি হোক বা কুখ্যাতি, হ্যারি মানেই শিরোনাম।

ছবি: সংগৃহীত

০২ ২১

সম্প্রতি নেটফ্লিক্সের একটি তথ্যচিত্রে স্ত্রী মেগানের সঙ্গে দেখা গিয়েছে সাসেক্সের ডিউক হ্যারিকে। সেখানে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের বহু তথ্য প্রকাশ্যে আনেন হ্যারি। আবার সম্প্রতি ‘স্পেয়ার’ নামে আত্মজীবনী লেখার কাজও শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু তা প্রকাশের আগেই লেখনীর কিছু কিছু অংশ সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। তথ্যচিত্র এবং বইয়ের ফাঁস হওয়া বিভিন্ন অংশ নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

ছবি: সংগৃহীত

Advertisement
০৩ ২১

হ্যারির ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য ফাঁস হওয়া অবশ্য নতুন নয়। ব্রিটেনের রাজপরিবারের হাজার রকমের নিয়মকানুন। সেই নিয়মের তোয়াক্কা কোনও দিনই খুব একটা করেননি যুবরানি ডায়ানার ছোট ছেলে। সমালোচক মহলে কান পাতলেই শোনা যায়, ব্রিটেনে রাজপরিবারের কঠোর নিয়মকানুনের ভারে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন ডায়ানাও। নিজের আচরণে বার বার ইঙ্গিত দিতেন দ্রোহের। ছোট ছেলে বরাবরই হেঁটেছেন সেই পথে।

ছবি: সংগৃহীত

০৪ ২১

২০১২ সালে আমেরিকার লাস ভেগাসে আলোকচিত্রীদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে এক নগ্ন যুবকের ছবি। তাঁকে দেখতে অবিকল যুবরাজ হ্যারির মতো। কানাঘুষো শোনা যায়, হ্যারি নাকি স্ট্রিপ বিলিয়ার্ড খেলছিলেন সে রাতে। অর্থাৎ বিলিয়ার্ড খেলার ছলে নগ্ন হয়ে উল্লাসে মেতেছিলেন তিনি। ব্রিটেনের রাজবাড়ির তরফে অবশ্য সরকারি ভাবে এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করা হয়নি কখনও।

ছবি: সংগৃহীত

০৫ ২১

তবে ভেগাসের ঘটনা প্রথম নয়। এক সময় হ্যারির সঙ্গে উদ্দাম যৌনতা কার্যত সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পর্তুগিজ ফুটবলার এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর সতীর্থ হোসে ফন্টের বর্তমান স্ত্রী তথা খ্যাতনামী মডেল ক্যাসি সামনার সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন ২০০৪ সালে একাধিক বার তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন হ্যারি।

ছবি: সংগৃহীত

০৬ ২১

মডেল দাবি করেন, ১৯ বছর বয়সি হ্যারির সঙ্গে যখন তাঁর প্রথম আলাপ, তখন হ্যারি ‘চোখ দিয়েই’ নগ্ন করে দিচ্ছিলেন তাঁকে। যুবরাজের সবচেয়ে বেশি নজর ছিল মডেলের স্তনে। কথা বলার সময় মুখের থেকে তাঁর স্তনের দিকে বেশি ক্ষণ তাকিয়ে ছিলেন হ্যারি, এমনই দাবি করেন ক্যাসি। এই বিতর্কেও মুখে কুলুপ আঁটে ব্রিটেনের রাজপরিবার।

ছবি: সংগৃহীত

০৭ ২১

ব্রিটেনের রাজপরিবারের বিরুদ্ধে প্রবল বিতর্কের মধ্যেও চুপ করে থাকার অভিযোগ নতুন নয়। সামাজিক অন্যায় থেকে হ্যারির মা ডায়ানার মৃত্যু, স্রেফ মুখে কুলুপ এঁটে বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়াই যেন দস্তুর ব্রিটিশ রাজপরিবারের। অনেকেই ভেবেছিলেন, হ্যারির উদ্দাম বোহেমিয়ান জীবনও রাজপরিবারের বিধিনিষেধের ভারে বদলে যাবে।

ছবি: সংগৃহীত

০৮ ২১

বদল এল বটে, কিন্তু সেই বদল রাজপরিবারের কতটা পছন্দের হল তা বলা মুশকিল। বোহেমিয়ান হ্যারি স্থিত হলেন বটে কিন্তু ব্রিটেনের রাজপরিবারের প্রথাগত ছাঁচে নয়। বরং কিছুটা মা ডায়ানার মতো। স্বাধীনচেতা মানুষ হিসাবে দেখা গেল তাঁকে। যিনি রাজপরিবারের আর পাঁচ জনের মতো উচ্চ আসনে থাকেন না, বরং সাধারণের সঙ্গে মেশেন। নিজের অনুভূতির কথা প্রকাশ করতে ভয় পান না।

ছবি: সংগৃহীত

০৯ ২১

কিন্তু যে রাজপরিবার এত নিয়মনীতির পাশে আবদ্ধ, সেখানে হ্যারি এমন ব্যতিক্রমী হলেন কী ভাবে? যাঁরা হ্যারিকে কাছ থেকে দেখেছেন, তাঁরা বলেন এই পরিবর্তনের পিছনে মূলত দু’টি বিষয় রয়েছে। হ্যারির ব্রিটিশ সেনায় যোগদান ও আরও পরে অভিনেত্রী মেগান মার্কেলের সঙ্গে প্রণয়।

ছবি: সংগৃহীত

১০ ২১

ব্রিটিশ সেনার অ্যাপাচে হেলিকপ্টারের চালকের কাজ নিয়ে আফগানিস্তানে যান হ্যারি। টানা ১০ বছর সেনাবাহিনীতেই কাটান। ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যরা জন্মসূত্রেই সেনার বিভিন্ন সাম্মানিক পদ পান। হ্যারি সেই ধারা ভেঙে আক্ষরিক অর্থেই সেনায় যোগ দেন। সেনায় চাকরি করতে গেলে যে অনুশাসন এবং দায়িত্ববোধ প্রয়োজন তার প্রত্যক্ষ প্রভাব দেখা যায় হ্যারির উপর।

ছবি: সংগৃহীত

১১ ২১

অভিনেত্রী মেগান মার্কেলের সঙ্গে হ্যারি ডেটিং শুরু করেন ২০১৬ সালের গ্রীষ্মে। ২০১৭-এর নভেম্বরে মেগানকে বিয়ের প্রস্তাব দেন হ্যারি। মেগানের সঙ্গে হ্যারির সম্পর্ক নিয়ে শুরু থেকেই প্রবল বিতর্ক শুরু হয়। গুঞ্জন ওঠে রাজপরিবারের অনেকেই মেগানকে মেনে নিতে পারেননি। যাবতীয় বিতর্কে মেগানের পাশেই দাঁড়াতে দেখা যায় হ্যারিকে। শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালে মে মাসে জুটি বাঁধেন দু’জন।

ছবি: সংগৃহীত

১২ ২১

মেগানকে বিয়ের ব্যাপারে যে পরিবারের অন্য সদস্যদের আপত্তি ছিল, সে কথা উঠে এসেছে হ্যারির আত্মজীবনীর ফাঁস হয়ে যাওয়া অংশেও। সেখানে লেখা দাদা উইলিয়াম নাকি হ্যারিকে নিষেধ করেন মেগানকে বিয়ে করতে। এমনকি মেগানের সম্পর্কে কটূক্তিও করেন। দুই ভাইয়ের ঝামেলা এমনই চরমে ওঠে যে উইলিয়াম হ্যারির জামার কলার ধরে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেও দেন দাদা উইলিয়াম।

ছবি: সংগৃহীত

১৩ ২১

ফাঁস হওয়া অংশের সত্যতা কতটা তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই যে পরিবারের সঙ্গে হ্যারি-মেগানের দূরত্ব বাড়ছিল, তা নজরে পড়তে থাকে। ২০১৯-এর জানুয়ারিতে নিজের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেন মেগান। রাজপরিবারের ঐতিহ্যের কথা মাথায় রাখলে যা বিরল।

ছবি: সংগৃহীত

১৪ ২১

২০২০ সালের জানুয়ারিতে হ্যারি এবং মেগানের অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসে। এমনকি বসবাসের দিক থেকেও দম্পতি ইংল্যান্ড এবং আমেরিকাতে ভাগাভাগি করে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। সেই বছরই একটি প্রকাশ্য সাক্ষাৎকারে দম্পতি পরিষ্কার জানান, রাজপরিবার এবং সংবাদমাধ্যম বার বার ভুল বুঝছে তাঁদের।

ছবি: সংগৃহীত

১৫ ২১

২০২১ সালের জানুয়ারিতে বাকিংহাম প্যালেস থেকে সরকারি ভাবে জানানো হয়, হ্যারি ও মেগান রাজপরিবারের সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। এর আগেই অবশ্য দম্পতি নিজেদের বাড়ি কিনেছেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। হ্যারির মা ডায়ানার মৃত্যু নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটাই ছিল রাজপরিবারের দস্তুর। সেই প্রথা ভেঙে মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেন হ্যারি।

ছবি: সংগৃহীত

১৬ ২১

তবে পরিবারের থেকে দূরে গেলেও বিতর্ক যে তাঁদের পিছু ছাড়ছে না, হ্যারির ফাঁস হওয়া আত্মজীবনীকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া উত্তেজনা তারই ইঙ্গিত। তবে শুধু মেগানকে কেন্দ্র করে নয়, আরও অনেক বিষয় নিয়েই শুরু হয়েছে চর্চা।

ছবি: সংগৃহীত

১৭ ২১

মা ডায়ানার মৃত্যুর পর বাবা চার্লস বিয়ে করেন বর্তমান কুইন কনসোর্ট ক্যামিলাকে। হ্যারি এবং দাদা উইলিয়াম নাকি বাবার দ্বিতীয় বিয়েতে তীব্র আপত্তি জানান। কিন্তু চার্লস সে কথা শোনেননি। বইয়ের ফাঁস হওয়া অংশে রয়েছে, আইনত পরিবারের অংশ হওয়ার আগে বিমাতা ক্যামিলার সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেন হ্যারি ও উইলিয়াম।

ছবি: সংগৃহীত

১৮ ২১

মায়ের মৃত্যুর সময় হ্যারির বয়স ছিল ১২। কিশোর বয়সে হ্যারি মায়ের মৃত্যু নিতে পারেননি। কিন্তু গোটা বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে ওঠে বাবা চার্লসের ব্যবহারে। ডায়ানার মৃত্যুর পর চার্লস হ্যারিকে এক বারের জন্যেও আলিঙ্গন করেননি। মায়ের মৃত্যু নিয়ে নিজেকে শান্ত করতে হ্যারি সেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির একটি দ্বিতীয় সংস্করণও তৈরি করেন। কিন্তু তাতে আরও বেড়ে যায় তাঁর অন্তরের অশান্তি। এমনই লেখা আছে বইয়ের ফাঁস হওয়া অংশে।

ছবি: সংগৃহীত

১৯ ২১

আফগানিস্তানে যুদ্ধে অংশ নেওয়া নিয়ে করা এক মন্তব্যেও শুরু হয়েছে বিতর্ক। আত্মজীবনীতে হ্যারি লিখেছেন, যুদ্ধ চলাকালীন তালিবানের অন্তত ২৫ জনকে হত্যা করেছেন তিনি। বইটিতে আদৌ এ কথা আছে কি না তা নিয়ে নিশ্চিত না হওয়া গেলেও বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তোপ দেগেছে আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। তাঁদের অভিযোগ, হ্যারির কাছে তালিবানরা নিছক দাবার ঘুটি ছাড়া কিছুই ছিলেন না।

ছবি: সংগৃহীত

২০ ২১

রাজনৈতিক ভাষ্যের পাশাপাশি চর্চা শুরু হয়েছে হ্যারির কৈশোর থেকে যৌবনে উত্তীর্ণ হওয়ার সময় করা বিভিন্ন কাজ নিয়েও। ফাঁস হওয়া অংশে হ্যারির স্বীকারোক্তি বলছে তিনি কৌমার্য হারান ১৭ বছর বয়সে। এমনকি কলেজে পড়ার সময় সেবন করতেন মাদকও।

ছবি: সংগৃহীত

২১ ২১

আত্মজীবনীর ফাঁস হওয়া অংশ বলে যে যে কথা প্রকাশ্যে এসেছে তার সত্যতা কতটা তা বোঝা যাবে বইটি প্রকাশের পরই। তবে ফাঁস হওয়া অংশ নিয়ে যেমন সমালোচনার ঝড় উঠেছে এক দিকে, তেমনই অন্য দিকে অনেকেই বলছেন, হ্যারিও এক জন মানুষ। রাজপরিবারের সদস্য বলে নিজের জীবনের ওঠাপড়া নিয়ে তিনি মুখ খুলতে পারবেন না, এমন ভাবা ঠিক নয়। সব মিলিয়ে বই প্রকাশের আগেই শিরোনামে হ্যারির স্পেয়ার।

ছবি: সংগৃহীত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement