লখনউয়ে মুখোমুখি হয়েছে ভারত এবং ইংল্যান্ড। উত্তেজনা টানটান। এই ম্যাচে যদি ভারত জেতে, তা হলে টানা ছ’টি ম্যাচে জয় পাবে তাঁরা। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের দিকে এক পা এগিয়ে থাকবে। অন্য দিকে এই ম্যাচ হারলে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে পারে ইংল্যান্ড। যদিও খেলার প্রথমার্ধে কিছুটা ধাক্কা খায় ভারত। তবে সমর্থকদের উৎসাহে ভাটা পড়েনি।
রবিবার দুপুর ২টো থেকে লখনউয়ের একানা স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে খেলা। দর্শকাসন ছিল মোটামুটি পূর্ণ। হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। সেই প্ল্যাকার্ডে মজার সব বার্তা দিয়েছেন ভক্তেরা।
মহিলা মহলে যথেষ্ট জনপ্রিয় ব্যাটার শুভমন গিল। তিনি এই ম্যাচে ওপেন করতে নামেন। ১৩ বলে ৯ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। সেই শুভমনের উদ্দেশে এক মহিলা ভক্ত প্ল্যাকার্ডে লেখেন, ‘‘লাল, নীল ফুল, শুভমান গিল বিউটিফুল’’।
আর ভক্ত প্ল্যাকার্ডে লেখেন, তিনি ১৫ হাজার কিলোমিটার দূরে টেক্সাস থেকে আসছেন। উদ্দেশ্য, ‘মেন ইন ব্লু’ অর্থাৎ ভারতীয় দলকে উৎসাহ দেওয়া। যদিও শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচে ভারতের পারফরম্যান্স খুব একটা ভাল নয়। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৪.৩ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ৯৭ রান করেছে ভারত।
ভক্তেরা এক প্রকার নিশ্চিত, ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে ইংল্যান্ড হারতে চলেছে। এই বিশ্বকাপে তারা খুব একটা ভাল খেলতে পারেনি। এক ভক্ত পোস্টারে লিখেছেন, ‘‘লন্ডনে যাওয়ার রিটার্ন টিকিট মেক মাই ট্রিপ থেকে করিয়ে নাও ইংল্যান্ড। দীপাবলি উপলক্ষে ছাড় রয়েছে। সস্তা পড়বে।’’
এই ম্যাচের শুরুতে কোহলিকে নিয়ে ভক্তদের উচ্ছ্বাস ছিল চরমে। তাঁকে নিয়ে একাধিক প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মাঠে আসেন ভক্তেরা। দাবি করেন, কোহলির মতো ব্যাটারের সামনে আর কেউ টিকতে পারবে না।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোহলি যদিও ৯ বলে শূন্য করে আউট হয়েছেন। ভক্তদের তাঁর চার বা ছয় মারা দেখার সৌভাগ্য হয়নি।
যদিও তাতে দমতে নারাজ ভক্তেরা। এক ভক্ত প্ল্যাকার্ডে লিখেছেন, ‘‘ঈশ্বর, জীবনে ডাউনফল (পতন) দিলেও কামব্যাক যেন কোহলির মতো হয়, তা দেখো।’’
এক জন আবার সচিন এবং বিরাটের তুলনা টেনেছেন। তাঁর প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে, ‘‘সচিন ঈশ্বর হলে বিরাট ঈশ্বরের ঈশ্বর।’’
আর এক বিরাট-ভক্ত প্ল্যাকার্ডে লিখেছেন, ইংল্যান্ডের কাছে রানি থাকতে পারে। কিন্তু ভারতের কাছে ক্রিকেটের রাজা রয়েছেন।
অনুরাগ কাশ্যপের ‘গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর’ ছবির সংলাপ ধার করে এক ভক্ত লেখেন, ‘‘সবকা বদলা লেগা তেরা কোহলি’’।
ইংল্যান্ডকে হারানো নিয়ে এক ভক্ত আবার ‘লগান’ ছবির প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন। তিনি প্ল্যাকার্ডে লিখেছেন, ওই ছবিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল ভুবন (আমির খান)-এর দল, তেমন যেন এ বারও হয়। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রসঙ্গও টেনেছেন তিনি।
ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে তাঁদের বিশেষণ দিয়েও প্ল্যাকার্ড তৈরি করা হয়েছে। যেমন রোহিত ‘ধ্বংসকারী’। কোহলি ‘রক্ষক’। সিরাজ ‘আগুন’। গিল ‘উত্তরাধিকারী’। বুমরা ‘খুনে’।
রবিবার ভারতের ক্রিকেটারের হাতে কালো ব্যান্ড পরে লখনউয়ের মাঠে নামেন। ভারতীয় সাজঘরে থাকা কোচ রাহুল দ্রাবিড় ও ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠৌরের জার্সিতেও কালো ব্যান্ড দেখা গিয়েছে।
গত সোমবার, ২৩ অক্টোবর প্রয়াত হয়েছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বিষেণ সিংহ বেদী। ভারতীয় ক্রিকেটে বড় নাম ছিলেন বেদী। তাঁকে স্মরণ করেই কালো ব্যান্ড পরে নেমেছেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা।