যৌনগন্ধী বিনোদনের খোঁজে পর্নোগ্রাফি সাইটগুলিতে চোখ রাখেন অনেকেই। প্রকাশ্যে না হলেও আড়ালে, দৈনন্দিন গোপন পরিসরে তাঁরা ঘুরে আসেন নীলছবির দুনিয়ায়।
পুরুষ, নারী নির্বিশেষে পর্ন সাইটে সকলেরই যাতায়াত অবাধ। কোনও কোনও দেশে অবশ্য পর্নোগ্রাফির বিশেষ বিশেষ সাইটে নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে সর্বত্রই নীলছবির গোপন দুনিয়ায় উন্মুক্ত নারীশরীর প্রাধান্য পেয়ে এসেছে বরাবর।
সম্প্রতি কিছু সমীক্ষায় পর্ন সাইটের চাহিদা সংক্রান্ত নতুন তথ্য উঠে এসেছে। নারীশরীরের এক বিশেষ অঙ্গ নাকি দর্শকদের আজকাল বেশি আকর্ষণ করছে।
স্তন বা যোনি নয়। এমনকি, চোখ, ঠোঁট, গালও সেই অঙ্গের ধারেকাছে নেই। নারীদেহের যে অঙ্গ মৌমাছির মতো দর্শকদের নীলছবির মৌচাকে টানছে, তা আদৌ ‘গোপন’ নয়।
কথা হচ্ছে পায়ের পাতা নিয়ে। সেখানেই নাকি লুকিয়ে আছে যাবতীয় ‘মধু’। পর্ন সাইটে ঢুকে ইদানীং পায়ের খোঁজ করছেন দর্শকেরা।
নারীর পা, বিশেষত পায়ের পাতাকে কেন্দ্র করে যৌন উত্তেজক ভিডিয়োর জন্য পর্ন সাইটে ঢুকে আলাদা করে ‘সার্চ’ করছেন অনেকেই। পর্ন হাব থেকে শুরু করে ‘অনলি ফ্যান’, নানা সাইটে পায়ের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্রিটেনের জনপ্রিয় পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইট ‘লাভহানি’। সেই সাইটের পরিচালকেরা নারীর পায়ের পাতাকে এই মুহূর্তে সবচেয়ে জনপ্রিয় কামোত্তেজক অঙ্গের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রেখেছেন।
২০২২ সালের পর্ন হাবের রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে তাঁদের সাইটে সবচেয়ে বেশি ‘সার্চ’ করা হয়েছে পায়ের পাতাকে কেন্দ্র করে যৌনতার ভিডিয়ো।
পায়ের পাতাকেন্দ্রিক যৌনতাকে বলে ‘ফুট ফেটিশিজম’। পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটগুলিতে এই শব্দবন্ধ যথেষ্ট পরিচিত। সম্প্রতি তা-ই উঠেছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
‘অনলি ফ্যান’ ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, মডেলরা সেখানে আগের চেয়ে পায়ের পাতার ছবি এবং ভিডিয়ো অনেক বেশি তৈরি করছেন এবং আপলোড করছেন। কারণ, পায়ের পাতা থেকে তাঁদের আয় আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে পর্নোগ্রাফি সাইটগুলির পরিসংখ্যানকে ছাপিয়ে গিয়েছে সকলের পরিচিত গুগল। গুগলের সার্চেও নাকি গত এক বছরে পায়ের পাতার কদর বেড়ে গিয়েছে অনেকখানি।
পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে ‘ফিট পিক্স ফর সেল’ অর্থাৎ পায়ের পাতার বিক্রয়যোগ্য ছবির জন্য সার্চ ১ হাজার ৪৩ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। বহু মানুষ পায়ের পাতা নিয়ে খোঁজাখুঁজি করেছেন গুগলেই।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক সময়ে যৌন আকর্ষণের ধরন বদলে গিয়েছে। মহিলাদের পায়ের পাতায় উত্তেজনার নতুন কেন্দ্র খুঁজে পেয়েছেন পর্নোগ্রাফির দর্শকেরা।
পায়ের পাতাকে নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করছেন মহিলারাও। অনেকেই পায়ের ত্বক আরও মসৃণ, আরও উজ্জ্বল করে তোলার জন্য সাজঘরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটাচ্ছেন।
পায়ের সম্পর্কে যৌনকল্পনার মাত্রা সবচেয়ে বেশি সমকামী পুরুষদের মধ্যে। ২১ শতাংশ সমকামী পুরুষ যৌনতার সময় পায়ের গড়ন কল্পনা করেন। সমকামী নারীদের ক্ষেত্রে এই হার ১১ শতাংশ।
বিপরীতকামী মহিলা এবং পুরুষের ক্ষেত্রেও পায়ের কল্পনা বিরল নয়। ৫ শতাংশ মহিলা এবং ১৮ শতাংশ পুরুষ পর্ন সাইটে পায়ের পাতায় মজে থাকেন।
পোশাকের আড়ালে থাকা অঙ্গগুলি বাদ রেখে কেন উন্মুক্ত পায়ের দিকে সকলের নজর ঘুরেছে, তা স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞেরাও এই প্রশ্নের উত্তর এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাননি। নীলছবির দুনিয়ায় পায়ের পাতা যেন এক অকারণ হুজুগ।