Debraj Chakraborty

‘অভিষেক-ঘনিষ্ঠ’ দেবরাজ বরাবরই ‘দাপুটে’, দলবদল, বহু লড়াই পেরিয়ে বিয়ে কীর্তনশিল্পী অদিতিকে

২০১৩ সালে বিধাননগর পুরনিগম এলাকায় একটি উপনির্বাচন হয়েছিল। জানা যায়, তখন টিকিট চেয়ে পূর্ণেন্দু বসুর কাছে দরবার করেছিলেন দেবরাজ। টিকিট না পেয়ে দল ছেড়ে দেন। যোগ দেন কংগ্রেসে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২২ ১৩:১২
Share:
০১ ২০

‘ভোট-পরবর্তী হিংসা’ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অদিতি মুন্সীর স্বামী তথা তৃণমূল কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীকে তলব করেছে সিবিআই। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছেন তিনি।

০২ ২০

দেবরাজ বর্তমানে বিধাননগরের তৃণমূল কাউন্সিলর এবং মেয়র পারিষদ। দীর্ঘ দিন ধরেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত তিনি। এক সময় কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর আপ্তসহায়ক ছিলেন এই যুব নেতা। ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতিও।

Advertisement
০৩ ২০

২০১৩ সালে বিধাননগর পুরনিগম এলাকায় একটি উপনির্বাচন হয়েছিল। সূত্রের খবর, তাতে টিকিট চেয়ে পূর্ণেন্দুর কাছে দরবার করেছিলেন দেবরাজ। তৃণমূল তাঁকে তখন টিকিট দেয়নি। পরে ২০১৫ সালের নির্বাচনের সময়ে ফের ভোটে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন দেবরাজ। টিকিট না পেয়ে দল ছেড়ে দেন।

০৪ ২০

বিধাননগরে ভোটে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে তৎকালীন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু ও তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনের সঙ্গে দেবরাজের বিবাদ চরমে উঠেছিল। জানা যায়, সেই বিবাদের জেরেই তৃণমূলের টিকিট পাননি তিনি।

০৫ ২০

২০১৫ সালে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের হাত ধরেন দেবরাজ। সেই সঙ্গে ছেড়ে দেন পূর্ণেন্দু বসুর আপ্তসহায়কের কাজও।

০৬ ২০

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর হাত থেকে দেবরাজ তুলে নেন কংগ্রেসের পতাকা। বিধাননগর পুরনিগম এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি।

০৭ ২০

ভোটের দিনই দেবরাজকে গ্রেফতার করেছিল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। বন্দি অবস্থায় তাঁকে ভোটে লড়তে হয়েছিল। ভোটে জিতে বিধাননগরের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এই যুব নেতা। জামিনে মুক্ত হয়ে কাউন্সিলর হিসাবে শপথ নেন তিনি। সেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূর্ণেন্দু বসুও।

০৮ ২০

কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই ‘হাত’ ছেড়ে ফের ঘরের ছেলে ফিরে আসেন ঘরে। তৃণমূলে ভবনে এসে তৃণমূলের তৎকালীন যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘাসফুলের পতাকা হাতে তুলে নেন।

০৯ ২০

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত দেবরাজ। ধীরে ধীরে রাজনীতির ময়দানে নিজের জায়গা পাকা করেন তিনি। বিধাননগর তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূলের এক জন ‘দাপুটে’ নেতা হিসাবে পরিচিত হন অচিরেই।

১০ ২০

কীর্তনশিল্পী অদিতি মুন্সীর সঙ্গে দেবরাজের বিয়ে হয় ২০১৮ সালে। তত দিনে সঙ্গীতের জগতে অদিতি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন। তাঁর গলায় কীর্তন শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে বার বার।

১১ ২০

২০১৫ সালে একটি জনপ্রিয় গানের রিয়্যালিটি-তে অংশগ্রহণ করেন অদিতি। বাকিদের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার গান করতেন তিনি। হিন্দি, বাংলা আধুনিক গানের মাঝে কীর্তনের সুর শ্রোতাদের নজর কেড়েছিল সহজেই।

১২ ২০

সেই মঞ্চ থেকে জনপ্রিয়তা লাভের পর অদিতির কেরিয়ারের গ্রাফ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক পেতে শুরু করেন তিনি। জেতেন একাধিক পুরস্কারও।

১৩ ২০

স্বামী দেবরাজের হাত ধরেই ধীরে ধীরে রাজনীতির ময়দানে পা রাখেন অদিতি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দমদমের সাংসদ সৌগত রায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। রাজারহাট গোপালপুর কেন্দ্র থেকে তাঁকে টিকিট দেয় তৃণমূল। ভোটে জিতেও আসেন।

১৪ ২০

রাজারহাট গোপালপুর কেন্দ্র থেকে পূর্ণেন্দু বসুকে সরিয়ে তৃণমূল দেবরাজের স্ত্রীকে টিকিট দেয়। জল্পনা ছড়িয়েছিল, অদিতিকে টিকিট দেওয়ার জন্য দেবরাজই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দরবার করেছেন।

১৫ ২০

বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একাধিক মঞ্চে এক সঙ্গে দেখা গিয়েছে অদিতিকে। মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে ভরা সভায় গান গেয়েও শুনিয়েছেন তিনি।

১৬ ২০

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিধাননগর পুরনিগমের ভোটে দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হয়ে মেয়র পারিষদ হন অদিতির স্বামী দেবরাজ। স্বামী-স্ত্রী উভয়েই বাংলার রাজনীতিতে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে।

১৭ ২০

সেই দেবরাজের ভূমিকাই এ বার ‘ভোট-পরবর্তী হিংসা’ মামলার তদন্তে সিবিআইয়ের আতশকাচের নীচে। তলব পেয়ে যথাসময়ে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে গিয়েছেন অদিতির স্বামী।

১৮ ২০

জানা গিয়েছে, ‘ভোট-পরবর্তী হিংসায়’ প্রসেনজিৎ দাস নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। বাড়ির বাইরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। তিনি বিজেপি কর্মী ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ২০২২ সালে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। এই ঘটনার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই মঙ্গলবার দেবরাজকে ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

১৯ ২০

সূত্রের খবর, এই ঘটনায় এফআইআরে নাম ছিল না দেবরাজের। পরে তদন্তে তাঁর নাম উঠে আসে। সে কারণেই তৃণমূলের ওই যুব নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

২০ ২০

সিবিআই দফতরে পৌঁছে দেবরাজ বলেন, ‘‘আমি আইন মেনে চলা নাগরিক। আমায় ডাকা হয়েছে। তদন্তের কাজে সহযোগিতা করতে আমি এসেছি। ভিতরে কী হবে ওঁরাই বলতে পারবেন। ওঁরা যা জানতে চাইবেন, আমার কাছে যা তথ্য রয়েছে, তা জানিয়ে আমি সাহায্য করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement