আরও এক সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেন পরিষেবা পেতে চলেছে দেশবাসী। দ্রুত গতিতে এক শহর থেকে অন্য শহরে যাত্রীদের পৌঁছে দেবে অমৃত ভারত এক্সপ্রেস। শনিবার অযোধ্যায় দাঁড়িয়ে দু’টি অমৃত ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
একটি অমৃত ভারত উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা থেকে বিহারের দ্বারভাঙা পর্যন্ত যাতায়াত করবে। অন্যটি বাংলার মালদহ থেকে কর্নাটকের বেঙ্গালুরু পর্যন্ত চলাচল করবে। গতির সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের আরাম, স্বাচ্ছন্দ্যের দিকেও নজর রেখে তৈরি করা হয়েছে ট্রেনটি।
ট্রেনটি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে ছুটতে পারে। এতে যাতায়াত করতে পারবেন ১,৮৩৪ জন।
অমৃত ভারত এক্সপ্রেসের একেবারে সামনে এবং পিছনে দু’দিকেই থাকছে দু’টি ডব্লুএপি-৫ লোকোমোটিভ (পুশ-পুল) ইঞ্জিন। সেগুলি তৈরি হয়েছে আসানসোলের চিত্তরঞ্জনের চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কসে।
এর ফলে রুট বদলালে বা অন্য পথে গেলে ট্রেনটিতে নতুন করে ইঞ্জিন জুড়তে হবে না। বাঁচবে সময়। সে কারণে অনেক কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাবে অমৃত ভারত এক্সপ্রেস।
অমৃত ভারতে ২২টি নন-এসি কামরা রয়েছে। ফলে কম খরচেও যাতায়াত করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। ট্রেনে দু’টি মাল রাখার রেক, আটটি জেনারেল কামরা, যাতে বসে যাতায়াত করতে হবে, ১২টি স্লিপার কামরা রয়েছে। কামরাগুলি তৈরি হয়েছে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্র্যাল কোচ ফ্যাক্টরিতে।
এই ট্রেন দিন-রাত চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। প্রয়োজনে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থাও চালু করা হবে।
ট্রেনের কামরাগুলির মধ্যে নিরাপদে যাতায়াত এবং শব্দ, কম্পন কমাতে একটি সিল করা গ্যাংওয়ে রয়েছে। ট্রেনে বসে ঝাঁকুনিও অনুভব করতে হবে না তেমন। সে জন্য ‘জার্ক ফ্রি সেমি পার্মানেন্ট কাপলার’ রয়েছে।
ট্রেনে যাত্রীদের জন্য আরও কিছু সুবিধা রাখা হয়েছে। খাওয়ার জন্য কামরায় রয়েছে ফোল্ডিং টেবল। খেয়ে টেবলটিকে ভাঁজ করে রাখা যাবে।
প্রত্যেক আসনের পাশে মোবাইল রেখে চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে। আসনের পাশে জলের বোতল রাখার ব্যবস্থা থাকবে। প্রয়োজনে তা ভাঁজ করা যাবে।
শুধু যাত্রী নয়, চালকদের স্বাচ্ছন্দ্যের খেয়ালও রাখা হয়েছে ট্রেনে। অমৃত ভারত এক্সপ্রেসের দু’দিকেই চালকের যে কেবিন রয়েছে, তা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।
চালকের আসন এমন ভাবে নকশা করা হয়েছে, যাতে সামনের পথ পরিষ্কার ভাবে দেখা যায়। পাশাপাশি, কাজটা আরামদায়কও হবে।
মালপত্র রাখার কামরায় থাকছে সিসি ক্যামেরা। গার্ড রুমেও থাকছে নজরদারির ব্যবস্থা। নিরাপদ ভ্রমণের জন্য ট্রেনের ভিতরেও থাকছে সিসি ক্যামেরা। যাত্রীসুরক্ষার জন্য ট্রেনের ইঞ্জিনে কবচ যন্ত্র লাগানো হয়েছে।
প্রবীণ বা শারীরিক ভাবে বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা যাতে ট্রেনে ওঠানামা করতে পারেন, সে জন্য ট্রেনের প্রবেশপথে র্যাম্প রাখার ব্যবস্থা রয়েছে।
ট্রেন কোথায় রয়েছে, কত গতিতে চলছে, তা-ও জানা যাবে ইন্ডিকেশন বোর্ডে। যেমন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে দেখা যায়।
অমৃত ভারতের শৌচালয়েও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সেখানে হাত দিয়ে জলের কল ঘোরাতে হবে না। পায়ে চাপ দিলেই পড়বে জল। এতে জলের অপচয়ও কমবে বলে মনে করছেন রেল কর্তৃপক্ষ।