অসমের কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে গিয়ে হাতির পিঠে চড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জিপে চড়েও কাজিরাঙার সৌন্দর্য উপভোগ করলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর জঙ্গল সাফারির ছবি ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে।
জঙ্গল সাফারিতে মোদীর পরনে ছিল জংলা ছাপের জামা এবং প্যান্ট, সঙ্গে হাফহাতা কালো জ্যাকেট। মাথায় গোল টুপি এবং গলায় মাফলার। পায়ে জলপাই রঙের মানানসই আঙুল ঢাকা জুতো।
জঙ্গল সাফারির সময় হাতির পিঠে চড়ে ক্যামেরায় চোখ দিতেও দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। ক্যামেরাবন্দি করেছেন একশৃঙ্গ গন্ডার এবং হরিণ।
প্রধানমন্ত্রীর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে কাজিরাঙার বুনো মোষ এবং বিভিন্ন পাখি। এর পাশাপাশি হাতির সঙ্গেও ছবি তুলিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সব ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে।
শনিবার ভোরে জঙ্গল সাফারিতে বেরিয়েছিলেন মোদী। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের এক কর্তা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী প্রথমে কোহরা রেঞ্জের মিহিমুখ এলাকায় হাতির পিঠে চড়েন।
মিহিমুখ এলাকায় কিছু অংশ পরিদর্শনের পরে ওই একই রেঞ্জের ভিতরে জিপ সাফারি করেন মোদী।
মোদীর সঙ্গে সাফারিতে গিয়েছিলেন জাতীয় উদ্যানের ডিরেক্টর সোনালি ঘোষ এবং অন্য ঊর্ধ্বতন বনকর্তারা।
দু’দিনের উত্তর-পূর্ব ভারত সফরে রয়েছেন মোদী। শুক্রবার বিকালে তেজপুর বিমানবন্দর পৌঁছন মোদী। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
তেজপুর বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে মোদী পৌঁছন পানবাড়ি হেলিপ্যাডে। সেখান থেকে গাড়িতে করে গোলাঘাট জেলার কাজিরাঙা যান সন্ধ্যায়। সারা রাস্তায় ফুল ছড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানান স্থানীয়েরা।
শুক্রবার মোদী রাত কাটিয়েছিলেন কোহরা রেঞ্জের অতিথিশালায়। শনিবার ভোরে সেখান থেকেই তিনি সাফারির জন্য বেরিয়ে যান।
এই প্রথম কাজিরাঙা সফরে এসেছেন মোদী। এর আগে ১৯৫৭ সালে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জওহরলাল নেহরু কাজিরাঙা অভয়ারণ্য পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীও দু’বার কাজিরাঙা গিয়েছিলেন। তবে তখন তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না।
দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীও ১৯৮৮ সালে কাজিরাঙা ভ্রমণে গিয়েছিলেন। তবে অতিথিশালায় মধ্যাহ্নভোজ সেরেই ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। অভয়ারণ্য পরিদর্শন করেননি। এর পর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মোদী শুক্রবার কাজিরাঙা গিয়েছেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় অনুযায়ী, ১৯৫৭ সালের পর মোদীই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট পরিদর্শন করলেন।
শনিবার সকালে কাজিরাঙা থেকে ফিরে অরুণাচল প্রদেশ গিয়েছেন মোদী। সেখান থেকে আবার অসমে ফিরে যোরহাটে ১৮,০০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্য এবং কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পগুলি হবে। শনিবার বিকালে লাচিত বরফুকনের ৮৪ ফুট উঁচু মূর্তিরও উন্মোচন করবেন মোদী। যোরহাটে একটি জনসভাতেও ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।