Parag Agrawal

সত্য, সুন্দর, অঞ্জলি, পরাগ... বিশ্ব প্রযুক্তির শীর্ষে ক্রমেই পাল্লা ভারী হচ্ছে ভারতীয়দের

এখন থেকে বছর খানেক পরে যদি দেখেন মার্ক জাকারাবার্গের ‘ফেসবুক’-এর দায়িত্ব কোনও ভারতীয় সামলাচ্ছেন, তবে কি খুব অবাক হবেন?

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:৩৫
Share:
০১ ১৩

এখন থেকে বছর খানেক পরে যদি দেখেন মার্ক জাকারাবার্গের ‘ফেসবুক’-এর দায়িত্ব কোনও ভারতীয় সামলাচ্ছেন, তবে কি খুব অবাক হবেন? অথবা অ্যাপলের টিম কুক সাদরে তাঁর জায়গাটি ছেড়ে দিলেন কোনও আইআইটি প্রশিক্ষিত ভারতের যুবককে! খুব বিস্ময় বোধ করবেন কি?

০২ ১৩

যে ভাবে বিশ্বের প্রযুক্তি ক্ষেত্র ক্রমেই ভারতীয়দের আপন করে নিচ্ছে, ভারতীয় মেধায় মুগ্ধ হচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে ভরসা করছে ভারতের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষিত বিশেষজ্ঞদের উপর, তাতে এমনটা মনে করা কি খুব ভুল হবে যে আগামী দিনে ভারতীয়রাই বিশ্ব প্রযুক্তি ক্ষেত্রকে শাসন করবে?

Advertisement
০৩ ১৩

টুইটারের যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি যা করলেন তাতে এমন ভাবনা অস্বাভাবিক নয়। জ্যাক লিখেছেন, টুইটার ছেড়ে যেতে তাঁর দুঃখ হলেও তিনি খুশি। কারণ তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নিচ্ছেন পরাগ আগরওয়াল নামের এক ভারতীয় যুবক। আইআইটি শিক্ষিত ওই যুবকের উপর কেন তাঁর ভরসা রয়েছে তার ব্যাখ্যা দিয়ে জ্যাক লিখেছেন, ছেলেটিকে তাঁর বেশ কিছু দিন ধরেই ভাল লাগতে শুরু করেছে। বহু জটিল পরিস্থিতিতে সংস্থাকে বাঁচিয়েছেন তিনি। ওঁর মধ্যে এমন কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট আছে যা জ্যাক মনে করেন তাঁর নিজের মধ্যেও ছিল। পরাগের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন জ্যাক। জানিয়েছেন, পরাগের হাতে সংস্থাকে ছেড়ে তিনি নিশ্চিন্ত।

০৪ ১৩

জ্যাকের ওই সিদ্ধান্তের পর পরাগ নাম লিখিয়েছেন সেই ক্লাবে যার সদস্য সুন্দর পিচাই, সত্য নাদেলা, অরবিন্দ কৃষ্ণরা। এঁরা প্রত্যেকেই ভারতীয় এবং এই মুহূর্তে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের আন্তর্জাতিক স্তরের নামজাদা সংস্থাগুলির চূড়ায় বসে আছেন। যাঁদের পাল্লা ক্রমেই ভারী হচ্ছে বিশ্ব প্রযুক্তির ক্ষেত্রে। পরাগের এই পূর্বসূরিরা কারা? দেখে নেওয়া যাক—

০৫ ১৩

সত্য নাদেলা (মাইক্রোসফ্ট)। হায়দরাবাদে জন্ম। মা ছিলেন সংস্কৃতের শিক্ষক। বাবা আইএএস অফিসার। সত্যর পড়াশোনা মনিপাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে। সেখান থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক। সত্য ২০১১ সালে মাইক্রোসফটে যোগ দেন। স্টিভ বামারের কাছ থেকে সিইও-র দায়িত্ব নেন ২০১৪ সালে। পরে মাইক্রোসফটের চেয়ারম্যানও করা হয় তাঁকে। এখন তাঁর বয়স ৫৪।

০৬ ১৩

সুন্দর পিচাই (গুগল, অ্যালফাবেট)। মা স্টেনোগ্রাফার, বাবা ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার। সুন্দরের জন্ম মাদুরাই শহরে। স্কুলের শিক্ষা চেন্নাইয়ে শেষ করে খড়্গপুর আইআইটি থেকে স্নাতক হন। ২০০৪ সালে গুগলে যোগ দেন। ২০১৫ সালে গুগলের সিইও হিসেবে বেছে নেওয়া হয় সুন্দরকে। তাঁর আগে এই দায়িত্বে ছিলেন ল্যারি পেজ। পরে ২০১৯ সালে গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেটেরও সিইও হন তিনি। বয়স এখন ৪৯।

০৭ ১৩

শান্তনু নারায়ণ (অ্যাডোবে)। ৫৮ বছরের এই দক্ষিণ ভারতীয়র আমলেই ফুলে ফেঁপে লক্ষ্মী লাভ করেছে অ্যাডোবে। জন্ম, বেড়ে ওঠা হায়দরাবাদে। পড়াশোনা ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৯৮ সালে অ্যাডোবে-তে যোগ দেন শান্তনু। ২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে ব্রুস সিজেনকে সরিয়ে তাঁকে সিইও হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। ২০১৮ সালে তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাডোবে ১০ হাজার কোটি ডলারের মূলধনের সীমা পেরোয়।

০৮ ১৩

অরবিন্দ কৃষ্ণ (আইবিএম)। অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী জেলার এক তেলুগু পরিবারে জন্ম অরবিন্দের। বাবা সেনাকর্তা। মা সমাজকর্মী। ইনিও আইআইটির ছাত্র। ১৯৯০ সালে আইবিএমে যোগ দেন অরবিন্দ। ২০২০ সালের জানুয়ারিকে তাঁকে আইবিএমের সিইও পদে নিয়োগ করা হয়। তাঁর পূর্বসূরি ছিলেন গিনি রমেটি। ২০২১ সালে চেয়ারম্যান হন। অন্যতম প্রভাবশালী এগজিকিউটিভ কর্তার তকমা দেওয়া হয় তাঁকে। বয়স ৫৮।

০৯ ১৩

সঞ্জয় মেহরোত্র (মাইক্রন)। স্যানডিস্ক-এর যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সংস্থা। ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সিইও ছিলেন। পরে অবশ্য ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল সংস্থাটি কিনে নেয়। একবছর পর ২০১৭ সালে প্রায় ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সঞ্জয় মাইক্রন টেকনোলজির সিইও হিসেবে নিযুক্ত হন। তাঁর পূর্বসূরি মার্ক দুরকান অবসর ঘোষণার পর ওই পদে বেছে নেওয়া হয় সঞ্জয়কে। জন্ম কানপুরে। স্কুল শিক্ষাও সেখানেই। তবে সঞ্জয় স্নাতক হন আমেরিকার বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এখন বয়স ৬৩।

১০ ১৩

নিকেশ অরোরা (পালো অল্টো নেটওয়ার্কস)। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটির ছাত্র নিকেশ কাজ করেছেন গুগলের সিনিয়র এগজিকিউটিভ হিসেবে। ২০১৮ সালে তাঁকে পালো অল্টো নেটওয়ার্কসের সিইও পদে নিয়োগ করা হয়। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে জন্ম। বাবা ছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনা কর্তা। গুগল ছাড়াও সফট ব্যাঙ্ক, আভিভা, এয়ারটেলে কাজ করেছেন। ইয়াহু জাপানের চেয়ারম্যানও ছিলেন নিকেশ। বয়স ৫৩।

১১ ১৩

জয়শ্রী উল্লাল (আরিস্টা নেটওয়ার্ক)। লন্ডনে জন্ম। তবে বেড়ে ওঠা নয়াদিল্লিতে। পরে আবার উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে চলে যান। ক্লাউড নেটওয়ার্কিং সংস্থা আরিস্টা-র সিইও এবং সভাপতি পদে জয়শ্রীর নাম ঘোষণা করা হয় ২০০৮ সালে। ২০১৮ সালে সেরা সিইও-র পুরস্কারও পান।

১২ ১৩

রেবতী অদ্বৈতি (ফ্লেক্স)। বিআইটিএস পিলানির পড়াশোনা বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে। ২০১৯ সালে তাঁকে আমেরিকার বহুজাতিক ইলেকট্রনিক্স প্রস্তুতকারী সংস্থা ফ্লেক্সের সিইও পদে নিয়োগ করা হয়।

১৩ ১৩

অঞ্জলি সুদ (ভিমিও)। এই তালিকায় নবীনতম তিনি। বয়স ৩৮। তবে অঞ্জলি ভারতীয় হলেও তাঁর জন্ম মিশিগানে। বেড়ে উঠেছেনও সেখানেই। পড়াশোনা পেনসিলভিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১১ সালে এমবিএ করেন। ২০১৪ সালে ভিমিও তে যোগ দেন অঞ্জলি। সিইও নিযুক্ত হন তিন বছরের মধ্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement