Pakistani Astronauts

মহাশূন্যের দৌড়ে ভারতকে মাত দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা, ড্রাগনের প্রশিক্ষণ নিয়ে এ বার ব্যোমযাত্রায় পাকিস্তান

চিনের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে এ বার ব্যোমযাত্রার পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের নভোচরদের অন্তরীক্ষে আমন্ত্রণ জানাতে তৈরি বেজিংও।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৫ ১২:১৪
Share:
০১ ১৮
astronaut

‘মহাশূন্যের দৌড়’-এ ভারতকে হারাতে মরিয়া পাকিস্তান। সেই লক্ষ্যে এ বার অন্তরীক্ষে নভোচর পাঠাবে ইসলামাবাদ। অন্যান্য বিষয়ের মতো এই কাজেও চিনকে পাশে পেয়েছে শাহবাজ় শরিফ সরকার। মহাকাশ দর্শনের জন্য ড্রাগনের থেকে পাক নভশ্চরেরা প্রশিক্ষণ নেবেন বলেও জানা গিয়েছে।

০২ ১৮
spaceship

চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি বেজিঙের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘চায়না ম্যান্‌ড স্পেস এজেন্সি’ বা সিএমএসএর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ‘পাকিস্তান স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্পিয়ার রিসার্চ কমিশন’ বা সুপারকো। ইসলামাবাদের এই প্রতিষ্ঠানের নভোচরদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মহাশূন্যে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ড্রাগন সরকার।

Advertisement
০৩ ১৮
spaceship

সুপারকোর সঙ্গে চুক্তির পর এই ইস্যুতে বিবৃতি দিয়েছে চিনা মহাকাশচারীদের সংস্থা সিএমএসএ। তারা জানিয়েছে, তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশন থেকে পাক নভোচরদের অন্তরীক্ষে নিয়ে যাওয়া হবে। মহাকাশ গবেষণার প্রশ্নে দুই দেশ হাত মেলানোয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত খুলবে বলেও স্পষ্ট করেছেন চিনা সংস্থার কর্তাব্যক্তিরা।

০৪ ১৮

বিদেশি নভোশ্চরদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ছুতমার্গ রয়েছে বেজিংয়ের। পাকিস্তানের জন্য সিএমএসএ সেই ছক ভাঙছে বলে জানা গিয়েছে। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, এর নেপথ্যে মূলত দু’টি কারণ রয়েছে। প্রথমত, ইসলামাবাদের নভোচরদের মহাশূন্যে নিয়ে গিয়ে আমেরিকা ও রাশিয়ার পর্যায়ে নিজেদের তুলে ধরতে চাইছে ড্রাগনভূমির জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

০৫ ১৮

দ্বিতীয়ত, বর্তমান সময়ে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলি বহু ক্ষেত্রেই পারস্পরিক সহযোগিতা মেনে কাজ করে থাকে। এত দিন তাতে মুখ ফিরিয়ে ছিল চিন। এ বার সেই বৃত্তেও পা রাখতে চাইছে ড্রাগন। যুক্তরাষ্ট্রের নাসা বা মস্কোর রসকসমসকে ছাপিয়ে যাওয়াই যে সে দেশের প্রেসিডেন্ট তথা চেয়ারম্যান শি জিনপিঙের উদ্দেশ্য, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

০৬ ১৮

‘চায়না ম্যান্‌ড স্পেস এজেন্সি’-র এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে উপরের দিকে তুলে আনা। আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই কাজ করবে বেজিং। সেই লক্ষ্যেই আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছি।’’

০৭ ১৮

দুই মহাকাশ গবেষণা সংস্থার মধ্যে চুক্তির জন্য ইসলামাবাদের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে শাহবাজ় শরিফ ছাড়াও হাজির ছিলেন সিএমএসএর ডেপুটি ডিরেক্টর লিন জিকিয়াং এবং সুপারকোর চেয়ারম্যান মহম্মদ ইউসুফ খান।

০৮ ১৮

সূত্রের খবর, পাক নভোচারীদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করবে চিনা সংস্থা। এর পর চলবে তাঁদের প্রশিক্ষণ। মহাকাশচারীদের নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করতেই এক বছরের বেশি সময় লেগে যেতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যদিও এই নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

০৯ ১৮

সিএমএসএ সূত্রে খবর, পাক নভশ্চরেরা চিনে প্রশিক্ষণ নেবেন। পরবর্তী পর্যায়ে অল্প সময়ের জন্য অন্তরীক্ষ ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁদের। এই মিশনে সঙ্গী হিসাবে থাকবেন চিনা মহাকাশচারীরা। অন্তরীক্ষে থাকা বেজিঙের ‘তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশন’-এ পা রাখার সুযোগ পাবেন পাক নভশ্চরেরা।

১০ ১৮

সব মিলিয়ে দু’-তিন বছরের আগে মহাশূন্যে পা রাখতে পারবেন না পাক নভোচারীরা। সেই তারিখ এখনই ঘোষণা করেনি চিনা সংস্থা সিএমএসএ। তাঁদের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুরোটাই নির্ভর করবে ইসলামাবাদের মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়ায় উপর। তাঁরা বিষয়টি দ্রুত আয়ত্ত করতে পারলে ব্যোম-যাত্রাকে এগিয়ে আনা যাবে।’’

১১ ১৮

মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে চিন পাকিস্তান গাঁটছড়া দীর্ঘ দিনের। গত শতাব্দীর ৯০-এর দশকে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে ‘বদর-১’ নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি করে ইসলামাবাদ। এর সাহায্যে ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে চেয়েছিলেন পাক মহাকাশ গবেষকেরা।

১২ ১৮

১৯৯০ সালের ১৬ জুলাই চিনের ‘লং মার্চ টুই’ রকেটের সাহায্যে ওই কৃত্রিম উপগ্রহটিকে পৃথিবীর নিম্নকক্ষে স্থাপন করে সুপারকো। গত বছরের ৩ মার্চ দক্ষিণ চিনের হুনান প্রদেশ থেকে ‘চ্যাং-৬’ নামের রকেট উৎক্ষেপণ করে বেজিং। এর সাহায্যে চাঁদের কক্ষপথে ‘কিউবস্যাট’ নামের কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠান পাক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

১৩ ১৮

চিনা সংবাদ সংস্থা গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশন’-এর অনেক কিছুই এখনও তৈরি করা বাকি রয়েছে। বেজিংয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একে আরও উন্নত করার চেষ্টা করছেন। সেখানে গেলে মহাশূন্যের জীবন সম্পর্কে পাক নভশ্চরেরা একটা ধারণা পাবেন। মহাকাশচারীদের ক্ষেত্রে যা এক দুর্লভ অভিজ্ঞতা।

১৪ ১৮

মহাকাশ স্টেশনে অন্তরীক্ষযানকে নিয়ে যাওয়া এবং সেখান থেকে আবার ভূপৃষ্ঠে ফেরত আসা সবচেয়ে জটিল এবং বিপজ্জনক প্রক্রিয়া বলে মনে করা হয়। চিনা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের দাবি, এ ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন তাঁরা। ফলে এতে মহাকাশচারীদের জীবনহানির আশঙ্কা নেই।

১৫ ১৮

অ্যারোস্পেস নলেজ পত্রিকার মুখ্য সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান বলেছেন, ‘‘জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে চিন যে প্রভূত উন্নতি করেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু, নভোশ্চরদের পাঠিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে এখনও রাশিয়া বা আমেরিকার তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে বেজিং।’’

১৬ ১৮

পাক সংবাদ সংস্থা ডনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোট দু’জন মহাকাশচারীকে মহাশূন্যে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে সুপারকোর। ২০২৬ সালের মধ্যে তাঁদের যাবতীয় প্রশিক্ষণ শেষ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

১৭ ১৮

চিনা সংস্থার সঙ্গে চুক্তির পর পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ বলেন, ‘‘আগামী দিনে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে ইসলামাবাদ। তার জন্য একটি চমৎকার পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’

১৮ ১৮

মজার বিষয় হল, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর আগে পথ চলা শুরু করে পাকিস্তানের সুপারকো। এর প্রতিষ্ঠার সালটি ছিল ১৯৬১। সুপারকোর সদর দফতর রয়েছে বন্দর শহর করাচিতে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানের দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে এই প্রতিষ্ঠান।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement