সকাল থেকেই পদ্মা সেতুতে প্রবল যানজট। থমকে গেল একের এক গাড়ি। নতুন সেতুকে সাক্ষী করে নিজস্বী তুলতে দেখা গেল অনেককে।
কিন্তু পদ্মা সেতু পার হতে কত টোল দিতে হবে? কী ভাবে আদায় হয় টোল?
পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে ইলেকট্রনিক্স টোল কালেকশন বুথ (ইটিসি) বসানো হয়েছে। যার মাধ্যমে মাত্র তিন সেকেন্ডেই স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলন্ত গাড়ি থেকে টোল আদায় করা যাবে।
ধাপে ধাপে সেতুর দুই প্রান্তের গেটে আধুনিক পদ্ধতিতে টোল আদায় হবে।
ধাপে ধাপে সেতুর দুই প্রান্তের গেটে আধুনিক পদ্ধতিতে টোল আদায় হবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট পদ্ধতিতে টোল আদায়ের জন্য গাড়ির উইন্ডশিল্ডে বিশেষ ধরনের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন কার্ড লাগাতে হবে।
ফাস্ট ট্র্যাকের মাধ্যমে এই প্রিপেড কার্ড থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে টোল কেটে নেবে ইটিসি বুথ।
অবশেষে পদ্মা সেতুর উপর যাতায়াতকারী যানবাহনের টোলের হার নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশের সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ এবং সেতু মন্ত্রণালয়ের তরফে টোলের যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে পদ্মা সেতুতে মোটরবাইককে দিতে হবে ১০০ বাংলাদেশি টাকা।
ছোট গাড়ি এবং প্রাইভেট গাড়িকে টোল দিতে হবে ৭৫০ বাংলাদেশি টাকা।
পদ্মা সেতুতে উঠলে যাত্রিবাহী বাসের টোল পড়বে ২০০০ বাংলাদেশি টাকা। একটু বড় বাসের ক্ষেত্রে ২,৪০০ টাকা, মাইক্রো এবং মিনিবাসের টোল ট্যাক্স যথাক্রমে ১,৩০০ এবং ১,৪০০ বাংলাদেশি টাকা।
মালবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে টোল ট্যাক্স বিভিন্ন। পাঁচ টন পর্যন্ত মাল নিয়ে গেলে সেই লরির ক্ষেত্রে ১,৬০০ টাকা টোল ট্যাক্স নেওয়া হচ্ছে। মাঝারি ট্রাকে (৫ থেকে ৮ এবং ১১ টন) ২,১০০ টাকা থেকে ২,৮০০ টাকা এবং বড় ট্রাকার জন্য নেওয়া হচ্ছে সাড়ে পাঁচ হাজার বাংলাদেশি টাকা।
পদ্মা সেতুর ফলে দুই বাংলার যাতায়াতের সুবিধা হয়েছে। এখন পদ্মা সেতু পথে কলকাতা থেকে ঢাকার দূরত্ব অন্তত ৫০ শতাংশ কমে যাবে। আগে কলকাতা থেকে ঢাকা, ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগত ১০ ঘণ্টা। সেটা এখন মোটামুটি চার ঘণ্টায় হয়ে যাবে। রেলপথে পৌঁছতে সময় লাগবে মোটামুটি সাড়ে ছ’ঘণ্টা।
শুধু যে কলকাতা-ঢাকার দূরত্ব কমাবে তা-ই নয়, পদ্মা সেতুর ফলে বঙ্গোপসাগর তীরের মংলা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব একশো কিলোমিটার কমে যাবে। সংশ্লিষ্ট বন্দর দু’টিকে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ফলে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সঙ্গে ভারতের মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ সুগম হবে।
দুই দেশই আশা করছে, শেখ হাসিনার সফরের আগেই ভারত-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির খুঁটিনাটি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। পদ্মা সেতু দু’দেশের বাণিজ্যেও নতুন সেতুবন্ধন করবে বলে আশা।
সব ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই শেখ হাসিনা ভারত সফরে আসতে পারেন এই পদ্মা সেতু দিয়েই।