আজ ১৫ অগস্ট। ৭৬ বছর আগে এই দিনেই স্বাধীনতা পেয়েছিল ভারত। আর তা নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই দেশ জুড়ে উৎসবের মেজাজ। ঘরে ঘরে পতাকা উত্তোলন করছেন দেশের সাধারণ মানুষ। চকোলেট-বিস্কুট-মিষ্টি বিতরণ শুরু হয়েছে স্কুলে স্কুলে।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশের প্রতিটি সরকারি ভবনে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
ঔপনিবেশিক শক্তির হাত থেকে ভারতের মুক্তি এবং দেশের স্বাধীনতা উদ্যাপন করতে পতাকা উত্তোলন করা হয়। পতাকাটি খুঁটির নীচের অংশে বাঁধা থাকে। দড়ি টেনে সেই পতাকা উত্তোলন করা হয়।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় পতাকা তৈরি করা হয়। তবে, দেশে সরকার স্বীকৃত পতাকা তৈরির সংস্থা রয়েছে একটিই।
ভারত সরকারের ‘ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস)’-এর তরফে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সংস্থা রয়েছে কর্নাটকের হুবলী জেলায়।
কর্নাটকের হুবলী জেলায় রয়েছে ‘কর্নাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সংযুক্ত সংঘ’। আর এটিই পতাকা তৈরির একমাত্র সংস্থা যা ভারত সরকার স্বীকৃত।
‘কর্নাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সংযুক্ত সংঘ’ সংস্থা রয়েছে হুবলী জেলার বেঙ্গেরি গ্রামে।
লাল কেল্লা, ইন্ডিয়া গেট, সংসদ ভবন, রাষ্ট্রপতি ভবন, প্রতিরক্ষা দফতর, প্রধানমন্ত্রীর দফতর-সহ বিভিন্ন মন্ত্রকে থাকা ভারতীয় পতাকাগুলি তৈরি হয় এখানে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী-সহ অন্যান্য মন্ত্রীর গাড়িতেও এই সংস্থার তৈরি পতাকা লক্ষ করা যায়।
‘কর্নাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সংযুক্ত সংঘ’ সংস্থাটি ১৯৪৭ সালে তৈরি হয়েছিল।
‘কর্নাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সংযুক্ত সংঘ’ মূলত মহিলা খাদি শিল্পী পরিচালিত একটি সংস্থা। এই সংস্থা কাপড়শিল্প সংক্রান্ত একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও চালায়।
স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবসের মতো ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের উদ্যাপন উপলক্ষে পতাকা তৈরির প্রচুর বরাত পায় হুবলী জেলার এই সংস্থা।
কর্নাটকের বাগালকোট থেকে পতাকা তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয়। পতাকা তৈরিতে মোট ১০০ জন বিশেষজ্ঞ এবং ১০০ জন তাঁতিকে নিযুক্ত করা হয়।
৩:২ অনুপাতে (দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ অনুযায়ী) ন’টি বিভিন্ন মাপে পতাকা তৈরি করা হয়। এর পর বরাত অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠনো হয় পতাকাগুলি।
জাতীয় পতাকা তৈরির বেশির ভাগ কাজই ‘কর্নাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সংযুক্ত সংঘ’ কর্মরত মহিলারাই করেন।
স্বাধীনতা দিবসের পাশাপাশি প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষেও প্রচুর পতাকা তৈরির বরাত পায় এই সংস্থা।
‘কর্নাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সংযুক্ত সংঘ’-এর ম্যানেজার অন্নপুরা দোদামণি সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, “স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবসে আমরা বিপুল সংখ্যক পতাকা তৈরির বরাত পাই। পতাকার কাপড় কাটা থেকে শুরু করে সেলাই করা এবং সেলাইয়ের পর সেই পতাকা নির্দিষ্ট জায়গায় সরবরাহ পর্যন্ত বেশির ভাগ কাজ সংস্থার মহিলা কর্মীরাই করেন।’’
দোদামণি আরও বলেন, ‘‘আমাদের সংস্থার ৯৫ শতাংশই মহিলা কর্মী। তবে জনাকয়েক পুরুষ কর্মীও রয়েছেন।”