সত্তরের দশক থেকে হিন্দি ফিল্মজগতে তারকাসমন্বিত ছবির প্রচলন শুরু হয়েছে। বক্স অফিসে মন্দ ব্যবসা করেনি সে ছবিগুলি। কিন্তু অক্ষয় কুমার, সুনীল শেট্টি এবং সানি দেওলের মতো বলিউডের তাবড় তারকাদের নিয়ে তৈরি ছবি মুক্তির পর বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। ছবির পরিচালক এই ঘটনায় এতটাই মুষড়ে পড়েন যে বলিপাড়া থেকে সরে যান তিনি। আর কোনও দিন পরিচালকের আসনে দেখা যায়নি তাঁকে।
একের পর এক ছবি পরিচালনা করে সত্তরের দশক থেকেই বলিপাড়ায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন রাজকুমার কোহলি। তাঁর পুত্র আরমান কোহলি অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
নব্বইয়ের দশকে একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন আরমান। কিন্তু কোনও ছবিই বক্স অফিসে লক্ষ্মীর মুখ দেখতে পারেনি। পর পর ছবিগুলি ফ্লপ হওয়ার পর বলিপাড়া থেকে পাঁচ বছরের সাময়িক বিরতি নেন আরমান।
২০০২ সালে রাজকুমারের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’। এই ছবিতে অক্ষয়, সুনীল এবং সানি-সহ বলিপাড়ার মোট ২২ জন তারকা অভিনয় করেন।
আরশাদ ওয়ারসি, সোনু নিগম, মনীষা কৈরালা, আদিত্য পাঞ্চোলি, রাজ বব্বর, অমরীশ পুরী, শরদ কপূর, জনি লিভারের মতো তারকা ‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবিতে অভিনয় করেন।
‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবিতে ইচ্ছাধারী নাগের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় রাজকুমার-পুত্র আরমানকে। পাঁচ বছর পর অভিনয়জগতে ফিরেছিলেন তিনি। তাই আরমানের কেরিয়ারের জন্য এই ছবির গুরুত্ব ছিল অনেক।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবিটি তৈরি করতে মোট ১৮ কোটি টাকা খরচ হয়। রাজকুমার ভেবেছিলেন এই ছবিটি মুক্তির পর ভাল ব্যবসা করবে। কিন্তু বিপরীত সুরে গান গেয়ে উঠল ছবিটি।
২০০২ সালের অগস্ট মাসে মুক্তির পর ‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। বলিপাড়া সূত্রে খবর, ছবিটি মুক্তির পর বক্স অফিস থেকে ১১ কোটি টাকা উপার্জন করে।
‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবির মাধ্যমে অভিনয়জগতে আত্মপ্রকাশ করেন সোনু। কিন্তু কেরিয়ারের প্রথম ছবি ফ্লপ হওয়ায় ভেঙে পড়েন সোনু।
রাজকুমার-পুত্র আরমান ভেবেছিলেন ‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবিতে অভিনয় করে তাঁর কেরিয়ারে গতি আসবে। কিন্তু ছবি মুক্তির পর সবই যেন বদলে গেল।
‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবিতে অভিনয় করেন রম্ভা, সিদ্ধার্থ রায়, কিরণ রাঠৌর, পিঙ্কি ক্যাম্পবেল, রজত বেদী এবং আফতাব শিবদাসানির মতো তারকা। ছবিটি সকলের কেরিয়ারে ব্যর্থতার ছাপ ফেলে।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ছবিটি ফ্লপ হওয়ায় মুষড়ে পড়েন রাজকুমার। তিনি ভেবেছিলেন এত জন বড়মাপের তারকার সঙ্গে কাজ করলে ছবি হিট হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
বক্স অফিসে ‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবিটি ফ্লপ হওয়ার পর ফিল্মজগৎ থেকে সরে যান রাজকুমার। পরবর্তী কালে আর কোনও ছবির পরিচালনার দায়িত্বে দেখা যায়নি তাঁকে।
‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবির পর হাতেগোনা দু’-তিনটি ছবিতে অভিনয় করেন আরমান। ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’ ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
গায়ক হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও অভিনয়জগতে তেমন সুনাম পাননি সোনু। ‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবির ব্যর্থতা তাঁর অভিনয়জীবনে এমন ছাপ ফেলে যে তার পর ‘কাশ আপ হমারে হোতে’, ‘লভ ইন নেপাল’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করলেও অভিনেতা হিসাবে ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা তৈরি করতে ব্যর্থ হন সোনু।