একেবারে পাশের বাড়ির পড়শি নয়, তবে কাছেই বাস তার। পৃথিবী থেকে একটি মাত্র গ্রহের দূরত্বে রয়েছে বৃহস্পতি। তার উপগ্রহে নতুন ভৌগোলিক ক্রিয়াকর্মের হদিস পেল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
তাদের পাঠানো মহাকাশযানে ধরা পড়েছে বৃহস্পতির উপগ্রহ ইয়ো (আইও)-র অভ্যন্তরের ছবি।
বৃহস্পতির উপগ্রহগুলিকে কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করছে নাসার মহাকাশযান জুনো।
ইয়ো থেকে তার দূরত্ব প্রায় ৫০ হাজার মাইল। সেখান থেকে তোলা ছবি পৃথিবীতে পাঠিয়েছে জুনো।
ছবিতে দেখা গিয়েছে, বৃহস্পতির এই উপগ্রহের মধ্যে রয়েছে অজস্র আগ্নেয়গিরি। প্রত্যেকটিই জীবন্ত।
এই অজস্র জীবন্ত আগ্নেয়গিরি থেকে অনবরত নির্গত হচ্ছে গনগনে লাভা। ধোঁয়া এবং ছাইতেও ভরে রয়েছে উপগ্রহপৃষ্ঠ।
গত ৫ জুলাই ইয়ো উপগ্রহের ছবি তুলেছে নাসার মহাকাশযান। সম্প্রতি সেই ছবি প্রকাশ করেছে নাসা।
জুনোর কার্যকলাপ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন নাসার গবেষক স্কট বলটন। তিনি বলেছেন, ‘‘জুনোর পাঠানো ছবিগুলি দেখে আমাদের গোটা দল খুবই উচ্ছ্বসিত। প্রতি মুহূর্তেই আমরা কিছু না কিছু নতুন তথ্য হাতে পাচ্ছি।’’
স্কট আরও বলেন, ‘‘মূলত বৃহস্পতির উপর নজরদারি করতেই জুনো তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এই মহাকাশযান যে ভাবে বৃহস্পতির উপগ্রহগুলির উপরেও নজর রাখছে, তা দেখে আমরা আপ্লুত।’’
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ইয়ো একটি আস্ত আগ্নেয়গিরির দেশ। এই উপগ্রহে রয়েছে হাজার হাজার আগ্নেয়গিরি।
অধিকাংশই জীবন্ত। অনবরত অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছে সেগুলি থেকে। এই উপগ্রহকে গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
কী ভাবে সেখানে মুহুর্মুহু আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ঘটে চলেছে, সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।
সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। সূর্য থেকে তার দূরত্ব প্রায় ৭৪ কোটি ৭৭ লক্ষ কিলোমিটার। পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব প্রায় ৭১ কোটি ৫০ লক্ষ কিলোমিটার।
বহু উপগ্রহ গুরুগ্রহকে ঘিরে রয়েছে। বিজ্ঞানীদের পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বৃহস্পতির ৮০টি উপগ্রহ এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার করা গিয়েছে। সৌরজগতের আর কোনও গ্রহকে কেন্দ্র করে এত সংখ্যক উপগ্রহ প্রদক্ষিণ করে না।
বৃহস্পতির উপগ্রহগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ইউরোপা, গ্যানিমিড, ক্যালিস্টো, হিমালিয়া, এলারা, সিনোপ, ইয়ো, অ্যানানকে, লেদা প্রভৃতি। উপগ্রহগুলিকে যথাসাধ্য পর্যবেক্ষণ করে নাসা ও অন্যান্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলি।