কথায় আছে, ‘যদি হও সুজন, তেঁতুল পাতায় ন’জন’। এমন সুজনদের দেখা মিলতে পারে মহারাষ্ট্রের দক্ষিণ মুম্বই এলাকায়।
সম্প্রতি সেখানকার এক কামরার একটি ফ্ল্যাটের ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ছবি দেখলে চমকে উঠতে পারেন যে কেউ।
নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে ওই এক কামরার ফ্ল্যাটের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন জনৈক ইউটিউবার। সেই ভিডিয়ো দেখেও চোখ কপালে উঠেছে নেটাগরিকেদের।
ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, এক ফালি একটা জায়গা দিয়ে একটি ঘরে ঢুকছেন এক জন। সেই সরু ঘরে এক শয্যার খাটে শুয়ে রয়েছেন আর এক জন।
সেই ঘরেই ঠাসাঠাসি করে রয়েছে ফ্রিজ, জামাকাপড় রাখার আলনা, এমনকি এসিও। এক শয্যার খাটের নীচে শোওয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে আর এক জনেরও।
পাশের ঘরটিই রান্নাঘর। একফালি রান্নাঘর দিয়েই ঢোকা যাবে শৌচাগারে। সেই শৌচাগারেই ঠাসাঠাসি করে রয়েছে জল গরম করার জন্য গিজ়ার, কমোড, ফ্লাশিং।
শৌচাগারে ঢোকার মুখেই দাঁড় করিয়ে রাখা রয়েছে ওয়াশিং মেশিন। রান্নাঘর কিংবা শোওয়ার ঘর, কোথাও একটা শিশুর পক্ষেও দু’হাত ছড়ানো সম্ভব নয়।
শৌচাগারেও এক জন মানুষ কোনও রকমে ঢুকে দরজাটুকু বন্ধ করতে পারবেন মাত্র। তবে হাত পা ছড়ানোর একটু জায়গা মিলবে।
ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, ছোট্ট একটা লোহার সিঁড়ি বেয়ে এক জন ছাদে উঠছেন। ছাদ বলতে তুলনায় প্রশস্ত একটা জায়গা। সেখানে রয়েছে অ্যাসবেসটসের আচ্ছাদন।
প্রায় জোর করেই এক টুকরো ঘরের পরিবেশ আনার চেষ্টা হয়েছে ছাউনি দেওয়া সেই ছাদেই। স্থানাভাবে যে টিভি সেট নীচে রাখা যায়নি, তা-ই তুলে আনা হয়েছে ছাদে।
যে যুবক ভিডিয়োটি করেছেন, তাঁকে মশকরা করে বলতে শোনা যাচ্ছে, “এটাই একমাত্র জায়গা, যেখানে আপনি মনের ইচ্ছা মতো সব কিছু করতে পারবেন।”
বিষয়টি নিয়ে ঠাট্টা শুরু হয়েছে সমাজমাধ্যমেও। নেটাগরিকেদের এক জন লিখেছেন, “বাবা! এর চেয়ে তো জেলখানাও ভাল।”
আর এক জন লেখেন, “ভিডিয়োটি দেখেই আমার দমবন্ধ লাগছে।” এক জন আবার মশকরা করে লিখেছেন, “এই যদি কারও ঘরের অবস্থা হয়, তবে আমার ঘর তো রাজপ্রাসাদ!”
তবে বিষয়টি যে মশকরার নয়, তা-ও মানছেন অনেকেই। বহু মানুষ জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে বাণিজ্যনগরীতে আসেন। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছনোর আগে অনেককেই কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।
মুম্বইয়ে তাই ফ্ল্যাটের দাম কিংবা ভাড়া, তা অনেকটাই বেশি। কিছু ক্ষেত্রে সাধারণের সাধ্যেরও বাইরে।
এই পরিস্থিতিতে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে অপেক্ষাকৃত কম টাকাতেই ফ্ল্যাট বা আবাসন খোঁজেন অনেকে। দক্ষিণ মুম্বইয়ে এই ধরনের এক কামরার ফ্ল্যাটের মূল্যও অবশ্য কম নয়। মাত্র আড়াই কোটি টাকা। থাকবেন নাকি এমন ফ্ল্যাটে?