ছবিমুক্তির পর নির্মাতা থেকে শুরু করে তারকাদের নজর বক্স অফিসের অঙ্কের খেলার দিকেই থাকে। কখনও এক জন তারকার অভিনয়ের জোরেই ছবি বক্স অফিসে বাজিমাত করে। কখনও আবার বহু জনপ্রিয় তারকা একই ছবিতে অভিনয় করলেও তা মুখ থুবড়ে পড়ে।
২০১১ সালে আনিস বাজ়মির পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘থ্যাঙ্ক ইউ’। অক্ষয় কুমারের সঙ্গে এই ছবিতে অভিনয় করেন ববি দেওল, সুনীল শেট্টি, ইরফান খানের মতো তারকারা।
‘থ্যাঙ্ক ইউ’ ছবিতে অভিনয় করেন সোনম কপূর, রিমি সেন, সেলিনা জেটলির মতো অভিনেত্রীরা। অতিথিশিল্পী হিসাবে অভিনয় করতে দেখা যায় বিদ্যা বালনকে। ৪৭ কোটি টাকা বাজেটে তৈরি এই ছবিটি বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়।
বাস্তবের পাশাপাশি ক্যামেরার সামনেও জুটি হিসাবে রণবীর সিংহ এবং দীপিকা পাড়ুকোনকে পছন্দ করেন দর্শক। দুই তারকা অভিনীত ‘গোলিয়োঁ কি রাসলীলা রাম-লীলা’, ‘পদ্মাবত’ ছবিদু’টি বক্স অফিসে দুর্দান্ত ব্যবসা করে। কিন্তু এই জুটির অন্য একটি ছবি বক্স অফিসে ফ্লপ করে।
২০২১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘৮৩’। রণবীর এবং দীপিকার সঙ্গে এই ছবিতে অভিনয় করেন হার্ডি সান্ধু, অ্যামি ভির্কের মতো অনেকে। ছবিটি মুক্তির পর বক্স অফিসে লক্ষ্মীর মুখ দেখেনি।
২০১৮ সালে আদিত্য চোপড়ার প্রযোজনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ঠগ্স অফ হিন্দোস্তান’। অমিতাভ বচ্চন, আমির খান, ক্যাটরিনা কইফ, ফতিমা সানা শেখের মতো জনপ্রিয় তারকাদের নাম এই ছবির সঙ্গে জুড়লেও বক্স অফিসে অঙ্কের খেলায় জিততে পারেনি ছবিটি।
বড় পর্দায় রামায়ণের কাহিনি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন বলি পরিচালক ওম রাউত। ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আদিপুরুষ’ ছবিতে কৃতি শ্যানন, সইফ আলি খানের মতো বলি তারকাদের পাশাপাশি অভিনয় করেন দক্ষিণী ফিল্মজগতের জনপ্রিয় তারকা প্রভাস। এই ছবিটিও বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।
কর্ণ জোহরের প্রযোজনায় ২০১৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘কলঙ্ক’। এই ছবিতে সঞ্জয় দত্ত এবং মাধুরী দীক্ষিতের মতো তারকাদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন আলিয়া ভট্ট, বরুণ ধওয়ান, সোনাক্ষী সিন্হার মতো একাধিক তারকা-সন্তান। তারকাখচিত এই ছবিটিও বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি।
২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘এলওসি: কার্গিল’ ছবিতেও দেখা গিয়েছিল তারকাদের ভিড়। অভিনেতাদের তালিকায় ছিলেন সঞ্জয় দত্ত, সইফ আলি খান, অজয় দেবগন, অভিষেক বচ্চন, সুনীল শেট্টি, অক্ষয় খন্না, সঞ্জয় কপূর, রাজ বব্বর, মনোজ বাজপেয়ীরা। ছিলেন দক্ষিণী তারকা নাগার্জুনও।
‘এলওসি: কার্গিল’ ছবিতে ছিলেন রবিনা টন্ডন, করিনা কপূর খান, রানি মুখোপাধ্যায়, এষা দেওল, মহিমা চৌধুরী, ইশা কোপিকর, নম্রতা শিরোদকরের মতো বহু অভিনেত্রী। বলিউডের একাধিক জনপ্রিয় তারকা এই ছবিতে অভিনয় করা সত্ত্বেও ছবিটি বক্স অফিসে ব্যবসা করতে পারেনি।
২০০৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার ঘরানার ছবি ‘ব্লু’। এই ছবিতে বলিউডের ‘খিলাড়ি’ অক্ষয় কুমারের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন সঞ্জয় দত্ত, লারা দত্ত এবং জায়েদ খান। ক্যাটরিনা কইফ এবং কবীর বেদী এই ছবিতে ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ছবিটি বক্স অফিসে অঙ্কের খেলা দেখাতে ব্যর্থ হয়।
অক্ষয়ের আরও একটি ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। সেই ছবিতেও অক্ষয়ের সঙ্গে ছিলেন একাধিক তারকা। ২০০২ সালে মুক্তি পায় ‘জানি দুশমন: এক আনোখি কাহানি’। সুনীল শেট্টি, আদিত্য পাঞ্চোলি, শরদ কপূর, আফতাব শিবদাসানি, আরশাদ ওয়ারসি এবং মনীষা কৈরালার মতো তারকা। ছবিতে অভিনয় করেন বলি গায়ক সোনু নিগমও। বক্স অফিসে ফ্লপ হওয়া ছবিগুলির মধ্যে এই ছবিটি অন্যতম।
আশির দশকে মুক্তি পাওয়া একটি তারকাখচিত ছবিও বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়। ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, রাজ বব্বর, জীতেন্দ্র, বিনোদ খন্না, পরভিন ববি, নীতু সিংহ কপূরের মতো অনেকেই ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ ছবিতে অভিনয় করেন। কিন্তু ছবিটি মুক্তির পর তেমন ব্যবসা করতে পারেনি। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, ছবিটি তিন ঘণ্টা দীর্ঘ হওয়ায় নাকি দর্শকের ধৈর্যচ্যুতি হয়েছে। ছবির দৈর্ঘ্য কমালে সেটি ভাল ব্যবসা করত।