সাত রাজার ধন মানিক তাঁর সংগ্রহে কিছু কম নেই। দুনিয়ার নামী-দামি হিরে, চুনি, পান্না, মুক্তো— কী নেই। দুনিয়ার সব থেকে দামি হিরের নেকলেসও নাকি রয়েছে শ্লোকা মেহতা অম্বানীর কাছেই। বিয়েতে উপহার পেয়েছিলেন। সেই হিরের নেকলেস নাকি এখন বাজার থেকেই হাপিস! কী ভাবে?
মোওয়াদ সংস্থার তৈরি একটি হিরের নেকলেস রয়েছে শ্লোকার। সেই নেকলেসে বসানো রয়েছে দুর্লভ এক সোনালি হিরে। নেকলেসটি এখন আর নেই।
দুনিয়ার নাম করা গয়না প্রস্তুত এবং বিক্রয়কারী সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম হল মোওয়াদ। উনিশ শতকে তৈরি হয়েছিল এই গয়নার সংস্থা। দুর্লভ হিরে, জহরত দিয়ে গয়না বানায় তারা। সেই সংস্থার তৈরি হিরের হার রয়েছে শ্লোকার।
সংবাদমাধ্যমের খবর, শ্লোকাকে বিয়েতে ওই হিরের হার দিয়েছিলেন মুকেশ এবং নীতা অম্বানী। হারটির দাম তখন ছিল প্রায় ৪৫১ কোটি টাকা।
২০১৯ সালের ৯ মার্চ মুকেশ-নীতার ছেলে আকাশের সঙ্গে বিয়ে হয় শ্লোকার। সেই বিয়েতে বড় বউমাকে উপহার দিয়েছিলেন অম্বানীরা।
কেন বিশেষ সেই নেকলেস? সেই নেকলেস গলায় পরলে মনে হবে, দু’দিক থেকে নেমে এসেছে দু’টি পাতার ছড়া। নীচে ঝুলছে সোনালি হিরে। সেই সোনালি হিরেই হল নেকলেসের মূল বৈচিত্র।
সেই সোনালি হিরে ১৯৮০ সাল নাগাদ আফ্রিকার কঙ্গোতে মিলেছিল। খনি থেকে উত্তোলন করা পাথরের মধ্যে সেই সোনালি হিরে খুঁজে পেয়েছিল নাকি ছোট্ট এক মেয়ে।
নেকলেসে বসানোর আগে সেই হিরে বিভিন্ন প্রদর্শশালায় প্রদর্শিত হয়েছিল। ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনেও প্রদর্শিত হয়েছিল সেই হিরে।
এর পরেই মোওয়াদ সংস্থা সেই হিরে বসিয়ে তৈরি করে অমূল্য নেকলেস। ২০১৩ সালে দোহায় একটি প্রদর্শনীতে প্রথম বার জনসমক্ষে আনা হয়েছিল নেকলেসটি।
ওই ‘নিখুঁত’ সোনালি হিরের ওজন ৪০৭.৪৮ ক্যারট। ওই হিরের জন্যই নাকি নেকলেসটির অত দাম। হলুদ হিরে ছাড়াও নেকলেসে রয়েছে ৯১টি সাদা ঝকঝকে হিরে, যেগুলির মোট ওজন ২০০ ক্যারেট।
ওই ৯১টি সাদা হিরে এক-একটি এক আকারে কাটা হয়েছে। কোনওটি গোলাকৃতি বা চৌকো, কোনওটি ডিম্বাকৃতি, কোনওটি আবার হৃদয়ের আকারের। সেই হিরেগুলিকে ধরে রেখেছে গোলাপি সোনার শাখা-প্রশাখা।
নেকলেসটির নাম ‘মোওয়াদ ল’ইনকম্পারেবল’। দুনিয়ার সব থেকে দামি নেকলেসের শিরোপা পেয়েছে সে। এর বর্তমান দাম ৬ কোটি আমেরিকান ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় ৪৯২ কোটি টাকা।
২০২২ সালে সদবি নিলামঘরে এই নেকলেস প্রদর্শন করা হয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছিল, নেকলেসের নীচে ঝোলা সেই সোনালি হিরে নতুন করে কাটা হয়েছে। এর ফলে সেই হিরের গভীরতা আর ঔজ্জ্বল্য আরও বেড়ে গিয়েছিল।
নতুন করে হিরে কেটে পালিশের কারণে নেকলেসের ওজন কমে গিয়েছিল ১০৪.৩৮ ক্যারেট। সোনালি হিরের ওজন কমে গিয়ে হয়েছিল ৩০৩.১০ ক্যারেট।
জানা গিয়েছে, এ ভাবেই নাকি শ্লোকার সেই নেকলেস হারিয়ে গিয়েছে। পেয়েছে নতুন রূপ।
হিরে ব্যবসায়ীর মেয়ে শ্লোকাকে প্রায়ই দামি গয়না পরে সাজতে দেখা যায়। শ্লোকার সংগ্রহে এ রকম দামি হিরের গয়না আরও রয়েছে।
নিজের বিয়েতে লাল জরদৌসি লেহঙ্গার সঙ্গে হিরে বসানো কুন্দন আর পোলকির গয়না পরেছিলেন শ্লোকা। চোকারের সঙ্গে রানিহার শোভা পেয়েছিল শ্লোকার গলায়। সঙ্গে ম্যাচিং করা দুল, নথ আর টিকলি-টায়রা।
শ্লোকার বিয়ের হার-দুলে হিরের সঙ্গে বসানো ছিল সবুজ পান্না। শ্লোকার বিয়ের সেই হারের দাম ছিল নাকি প্রায় ৩ কোটি টাকা। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয়েছিল হিরেগুলি। এ রকম বহু হিরের গয়না নাকি রয়েছে অম্বানীর পুত্রবধূর।