নম্বর প্লেটে নম্বরের খেলা! গাড়ির দামকেও যেন টেক্কা দেয় তার নম্বর প্লেট। অর্থের নিরিখে যেন নম্বর প্লেটের নম্বরের সুরও চড়া। কোনও গাড়ির নম্বর প্লেটের দাম ৩৪ লক্ষ, আবার কোনও প্লেটের দাম ১০ লক্ষের গণ্ডি পার করেছে। এই নম্বর প্লেটগুলির বিশেষত্ব কী?
জেমস বন্ডের চরিত্র কমবেশি সকলেরই প্রিয়। এই চরিত্রের সঙ্গে জড়িত ০০৭ নম্বরটিও কারও অপরিচিত নয়। নিজের গাড়ির নম্বর প্লেটে এই নম্বরটিই রাখতে চান আমদাবাদের ব্যবসায়ী আশিক পটেল।
২০২০ সালে টয়োটা ফরচুনার মডেলের গাড়ি কেনেন আশিক। জেমস বন্ডের একনিষ্ঠ অনুরাগী তিনি। গাড়ি কেনার পর তার রেজিস্ট্রেশন নম্বরে ০০৭ নম্বরটি রাখতে চান তিনি। ইচ্ছানুযায়ী নম্বর প্লেট তৈরি করতে ৩৪ লক্ষ টাকা খরচও করেন আশিক।
অনলাইন মাধ্যমে নির্দিষ্ট নম্বর প্লেটের জন্য নিলাম শুরু হলে আশিক দেখেন ২৫ হাজার টাকা থেকে ০০৭ নম্বরযুক্ত প্লেটের নিলাম শুরু হয়েছে। কিন্তু আশিক কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাননি। ৩৪ লক্ষ টাকা দিয়ে নিজের পছন্দের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পান তিনি।
কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের বাসিন্দা কেএস বালগোপাল। পেশায় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার অধিকর্তা তিনি। এক কোটি টাকা খরচ করে নিজের জন্য পোরশে ৭১৮ বক্সটার মডেলের নীল রঙের একটি স্পোর্টস কার কেনেন তিনি।
২০১৯ সালে স্পোর্টস কারের জন্য পছন্দসই নম্বর প্লেটও কিনে ফেলেন কেএস বালগোপাল। তিনি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বরে ০ এবং ১ সংখ্যা দু’টির উপস্থিতি চেয়েছিলেন। নিলামের সময় ৩১ লক্ষ টাকা দিয়ে নিজের পছন্দমতো নম্বর প্লেটটি কেনেন তিনি।
স্পোর্টস কার ছাড়াও ল্যান্ড ক্রুসার এলসি ২০০ মডেলের একটি গাড়ি কিনেছিলেন কেএস বালগোপাল। ২০১৭ সালে গাড়িটি কেনার পর ০ এবং ১ সংখ্যা দু’টি ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট ছাঁচে নম্বর প্লেটটি তৈরি করতে চেয়েছিলেন তিনি। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ১ লক্ষ টাকা দিয়ে ‘বুকিং’ করার পর ১৮ লক্ষ টাকা খরচ করে নম্বর প্লেটটি কেনেন তিনি।
চণ্ডীগড়ের টায়ার প্রস্তুতকারী সংস্থার মালিক জগজিৎ সিংহ চহাল। ২০১২ সালে ১ কোটি টাকা খরচ করে ল্যান্ড ক্রুসার এলসি ২০০ মডেলের গাড়ি কেনেন তিনি। জগজিতের কাছে আরও যে দশটি গাড়ি রয়েছে, সেগুলির রেজিস্ট্রেশন নম্বরে ০০০১ নম্বরটি রয়েছে।
ল্যান্ড ক্রুসার এলসি ২০০ মডেলের গাড়ির ০০০১ নম্বরটি রাখতে চান জগজিৎ। নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন নম্বরযুক্ত নম্বর প্লেটটি নিলামে ১৭ লক্ষ টাকা দিয়ে কেনেন তিনি।
সূত্রের খবর, বিলাসবহুল গাড়ি ছাড়াও জগজিতের সংগ্রহে দশটি বাইক রয়েছে। প্রতিটি বাইকের নম্বর প্লেটে ১০০০ নম্বরটি দেখা যায়।
রাস্তার ধারে একটি ধাবায় কাজ করে রোজগার শুরু। সেখান থেকেই ‘ওয়েডিং ম্যানেজমেন্ট’ সংস্থার অধিকর্তা হয়ে ওঠেন রাহুল তানেজা। ২০১৮ সালে ১৬ লক্ষ টাকা দিয়ে নম্বর প্লেট কেনার জন্য শিরোনামে আসেন তিনি।
২০১৮ সালে দেড় কোটি টাকা খরচ করে একটি বিলাসবহুল গাড়ি কেনেন রাহুল। সেই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বরে ০০১ নম্বরটি যোগ করতে চান তিনি। তাই ১৬ লক্ষ টাকা খরচ করে রাহুল তাঁর গাড়ির জন্য বিশেষ নম্বরযুক্ত নম্বর প্লেট কেনেন।
২০১৮ সালের আগেও লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে গাড়ির জন্য নম্বর প্লেট কিনেছিলেন রাহুল। ২০১১ সালে একটি বিএমডব্লিউ ৫-সিরিজ়ের একটি কিনেছিলেন তিনি। তার নম্বর প্লেটটিও ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে কেনেন রাহুল। সূত্রের খবর, পরে তিনি গাড়িটি বিক্রি করে দিলেও নম্বর প্লেটটি নিজের কাছেই রেখে দেন।
প্রায় ১৩ কোটি টাকা খরচ করে রোলস রয়েস কালিনান মডেলের একটি গাড়ি কেনেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী। আরটিও সূত্রে খবর, এই গাড়ির নম্বর প্লেট কিনতে ১২ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন তিনি।
চলতি বছরের গোড়ায় ‘পাঠান’-এর সাফল্যের পর রোলস রয়েস কালিনান ব্ল্যাক ব্যাজ মডেলের গাড়ি কেনেন বলি অভিনেতা শাহরুখ খান। ৫৫৫ নম্বরযুক্ত নম্বর প্লেট কিনতে ৭০ হাজার টাকা খরচ করেন বলিউডের ‘বাদশা’।