ধর্ষণের অভিযোগে জেলবন্দি লিঙ্গায়েত গুরু শিবমূর্তি শরনারুর বিরুদ্ধে নতুন মামলা শুরু হল।
এ বার যৌন হেনস্থার অভিযোগ চার নাবালিকার। অভিযোগ, শিবমূর্তি তাদের দীর্ঘদিন ধরে যৌন হেনস্থা করে যাচ্ছেন।
নাবালিকাদের অভিযোগ, শিবমূর্তি ২০১৯ থেকে ২০২২ এর মধ্যে বহু বার তাদের যৌন নিগ্রহ করেছেন।
প্রসঙ্গত, মুরুঘা মঠ কর্নাটকে লিঙ্গায়েতদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই মঠেরই প্রধান শিবমূর্তি।
চার নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শিবমূর্তি এবং তাঁর ছয় সহযোগীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে নাম রয়েছে মঠের হস্টেলের ওয়ার্ডেনেরও। মঠের হস্টেলে নাবালিকাদের যৌন নিগ্রহের অভিযোগে পকসো ধারায় শিবমূর্তির বিরুদ্ধে এ নিয়ে দ্বিতীয় অভিযোগ দায়ের হল।
গত সেপ্টেম্বরের দুই নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় শিবমূর্তিকে।
গত ২৬ অগস্ট এই সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হয়। তার পরেই গ্রেফতার।
কর্নাটকে অত্যন্ত প্রভাবশালী এই মঠে যাতায়াত সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীদেরই।
শিবমূর্তি গ্রেফতার হলেও এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা শুরুর ঠিক আগে অগস্টে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী নিজে শিবমূর্তির সঙ্গে দেখা করেন। সেই সময়ই রাহুলকে লিঙ্গায়েত সম্প্রদায় ভুক্ত বলেও ঘোষণা করা হয় মঠের তরফে।
এ হেন শিবমূর্তির বিরুদ্ধেই ধর্ষণের একের পর এক অভিযোগ। এর আগে মঠের ভিতরে নাবালিকাদের নানা অছিলায় ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল শিবমূর্তির বিরুদ্ধে। সেই সময় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
শিবমূর্তির বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু হয়েছে। অভিযোগকারিণী এক জন দলিত হওয়ায় দলিত জাতি এবং জনজাতি রক্ষা আইনেও এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়।
কর্নাটকে লিঙ্গায়েত সমাজ অত্যন্ত প্রভাবশালী। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের সময়ও এ কথা মাথায় রাখে রাজনৈতিক দলগুলো। কংগ্রেস থেকে বিজেপি, জেডিএস থেকে অন্য কোনও দল— লিঙ্গায়েত সমাজের আশীর্বাদ ছাড়া কর্নাটকে ক্ষমতা দখল কার্যত অসম্ভব বলে মনে করা হয়।
কর্নাটকের স্থানীয় রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে লিঙ্গায়েত সমাজের প্রভাবের কথা বিবেচনা করেই অন্যান্য রাজনৈতিক দল চুপ থাকলেও শিবমূর্তির বিরুদ্ধে পথে নেমে আন্দোলন করছে রাজ্যের একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।