মাঠে তাঁরা হেলায় ছক্কা মারেন। নয়তো ইয়র্কার দিয়ে বোল্ড করেন। কিন্তু মাঠের বাইরে এত সহজে কিস্তিমাত তারা সব সময় করতে পারেন না। মাত খেয়ে যান ‘বেটার হাফ’-দের কাছে। সম্প্রতি প্রাক্তন স্ত্রী আয়েশা মুখোপাধ্যায়ের কাছে জোর ধাক্কা খেয়েছেন ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ান। ঘরের ঝামেলা পৌঁছেছে আদালতে। তবে তিনি একা নন, স্ত্রীদের অভিযোগের কারণে মুখ পুড়েছে বেশ কয়েক জন ক্রিকেটারের।
আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন শিখর ধাওয়ান। অভিযোগ, শিখরের কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রাক্তন স্ত্রী আয়েশা মুখোপাধ্যায়। সম্মানহানির চেষ্টা করছেন। আয়েশা যাতে তাঁর বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে কুৎসা ছড়াতে না পারে, এই নিয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন শিখর।
গত বছর কিকবক্সার আয়েশার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শিখরের। শিখর জানিয়েছেন, আয়েশা তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দেবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন। আইপিএলে তাঁর দল দিল্লি ক্যাপিটালসের মালিক ধীরজ মলহোত্রকে মেসেজ করছেন। সেখানে তিনি শিখরের নামে কুৎসা করছেন বলে অভিযোগ ক্রিকেটারের। এতে তাঁর কেরিয়ার শেষ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা শিখরের।
দিল্লির পটীয়লা হাউস আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শিখর। তাঁর আবেদন সাড়া দিয়েছেন বিচারক হরীশ কুমার। তিনি বলেন, ‘‘আয়েশার নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ থাকতেই পারে। সেই অভিযোগ জানানোর পদ্ধতি রয়েছে। আয়েশা চাইলে আদালতে আসতে পারেন। কিন্তু এ ভাবে কারও সম্মানহানি করা যায় না।’’
বিচারক রায় দিয়ে জানিয়েছেন, শিখরের বন্ধু, আত্মীয়, সতীর্থ— কারও কাছে কোনও মেসেজ পাঠাতে পারবেন না আয়েশা। সমাজমাধ্যমেও কিছু লিখতে পারবেন না তিনি। কারণ, শুধুমাত্র এক জনের অভিযোগের ভিত্তিতে কারও চরিত্রহনন করা যায় না।
শিখরের মতো বিপাকে প্রাক্তন ক্রিকেটার বিনোদ কাম্বলিও। তাঁর স্ত্রী আন্দ্রেয়া কাম্বলির অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় তাঁকে মারধর করেছেন কাম্বলি। রেহাই দেননি তাঁদের ছেলেকেও। গত শনিবার বান্দ্রা থানায় এই নিয়ে অভিযোগ করেন আন্দ্রিয়া। কাম্বলির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে।
এই ঘটনার পর থেকে কাম্বলির ফোন বন্ধ। আন্দ্রেয়া থানায় অভিযোগে জানিয়েছেন, ‘‘ওঁকে শান্ত করার চেষ্টা করি। তার পরেও উনি আমাকে এবং আমার ছেলেকে মারধর করেন। আমাদের দিকে তেড়ে আসেন। রান্নার বাসনের হাতল দিয়ে মারেন। এর পর ব্যাট নিয়ে তেড়ে আসেন। আমি কোনও মতে তাঁকে থামাই। তার পর ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যাই।’’
গত রবিবার বিনোদ কাম্বলিকে নোটিস পাঠিয়ে তলব করে মুম্বই পুলিশ। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারের বয়ান রেকর্ড করা হবে। এই ঘটনার একমাত্র সাক্ষী কাম্বলির ১২ বছরের ছেলে।
বান্ধবীর জন্য ভাবমূর্তি নিয়ে টানাপড়েন হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের। বান্ধবী প্রকাশ্যে প্রতারণার অভিযোগ আনেন ক্লার্কর বিরুদ্ধে। চড়ও মারেন। সেই ঘটনার ভিডিয়ো করেন উপস্থিত এক জন।
গত ১০ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার নুসায় একটি রেস্তোরাঁয় এই কাণ্ড ঘটেছে। রেস্তরাঁর বাইরে দাঁড়িয়ে গোটা ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করেন এক জন। বান্ধবী ইয়ারবরো অভিযোগ করেন, প্রাক্তন বান্ধবী পিপ এডওয়ার্ডসের সঙ্গে এখনও সম্পর্ক রয়েছে ৪১ বছরের মাইকেলের। মাইকেল বার বার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তখন বান্ধবী চড় মারেন বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারকে।
প্রাক্তন সঙ্গীর অভিযোগের ভিত্তিতে জেল যেতে হচ্ছিল আর এক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারকে। তিনি মাইকেল স্লেটার। সিডনির আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, ১২ মাস চিকিৎসা করাতে হবে স্লেটারকে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওওয়ার পর স্লেটার এখন ধারাভাষ্য দেন। গত অক্টোবরে নিউ সাউথ ওয়েলস থানায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। অভিযোগ, প্রাক্তন বান্ধবীর পিছু নিয়েছিলেন তিনি। বার বার ফোন করে বিরক্ত করেছেন। ডজনখানেক মেসেজ করেছেন।
সিজনির আদালতের বিচারক জানিয়েছিলেন, মানসিক সমস্যা রয়েছে স্লেটারের। তাই তাঁকে মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ শামির বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনেছিলেন তাঁর স্ত্রী হাসিন জাহান। সেই অভিযোগ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। শামির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছিলেন হাসিন।
শুধু তাই নয়, শামির অন্য মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন হাসিন। এক পাকিস্তানি মডেলের দিকে আঙুল তুলেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, দুবাইয়ে গিয়ে ওই মডেলের সঙ্গে সময় কাটিয়েছিলেন শামি।
সেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তবে কলকাতা হাই কোর্ট সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে, প্রতি মাসে হাসিনকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে শামিকে।