কার্টুন চরিত্রের নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন রাতারাতি। বর্তমানে দক্ষিণী ফিল্মজগতে অল্লু অর্জুন, বিজয়ের মতো তাবড় তারকার ছবিতে কণ্ঠশিল্পী হিসাবে কাজ করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন সঙ্কেত মাত্রে।
১৯৮৮ সালের ২৭ জুলাই মুম্বইয়ে জন্ম সঙ্কেতের। স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করে মুম্বইয়ের একটি ডাবিং স্টুডিয়োয় কাজ করা শুরু করেন তিনি। কিন্তু কণ্ঠশিল্পী হিসাবে পেশা গড়ে তুলবেন তা ভাবেননি সঙ্কেত।
ডাবিং স্টুডিয়োয় কর্মরত থাকাকালীন সেখানকার এক মক্কেল সঙ্কেতকে হঠাৎ টিয়ার আওয়াজ নকল করে শোনাতে বলেন। অবিকল টিয়ার মতো আওয়াজ শোনানোর পর স্টুডিয়োর সকলের কাছে প্রশংসা পান সঙ্কেত।
‘বেন ১০ অ্যালিয়েন ফোর্স’ নামে একটি জনপ্রিয় কার্টুনের মুখ্যচরিত্র বেনের নেপথ্যকণ্ঠ হিসাবে প্রথম কাজ করেন সঙ্কেত। বেনের চরিত্রের নেপথ্যকণ্ঠ হওয়ার সময় ১০ ধরনের আলাদা আওয়াজ ব্যবহার করেন তিনি।
বেন চরিত্রের নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সঙ্কেত। এর পর বিভিন্ন দক্ষিণী ছবির হিন্দি ডাবিংয়ের সময়েও কণ্ঠশিল্পী হিসাবে কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
‘ডিজে: দেব্বারাজগন্নধাম’, ‘সাররাইনোড়ু’, ‘এস/ও সত্যমূর্তি’, ‘না পেরু সুরি’, ‘নাল্লু ইন্ডিয়া’র মতো দক্ষিণী ছবির হিন্দি ডাবিংয়ের ক্ষেত্রে তেলুগু অভিনেতা অল্লু অর্জুনের কণ্ঠ দিয়েছেন সঙ্কেত।
‘থুপাক্কি’ এবং ‘বিজয় দ্য মাস্টার’ ছবির হিন্দি ডাবিংয়ের সময় দক্ষিণী অভিনেতা বিজয়ের কণ্ঠ দিয়েছেন সঙ্কেত।
২০২২ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার ২’। এই ছবিতে অভিনয় করেন কন্নড় অভিনেতা যশ। ‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার ২’ ছবির হিন্দি ডাবিংয়ের সময় যশের নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী ছিলেন সঙ্কেত।
অল্লু অর্জুন, বিজয় এবং যশ ছাড়াও জুনিয়র এনটিআর, মহেশ বাবু, ধনুশ, সূর্য, বিশাল, রামচরণ, নিতিন, রাঘব লরেন্স-সহ একাধিক দক্ষিণী তারকার ছবিতে কণ্ঠ দিয়েছেন সঙ্কেত।
তামিল, তেলুগু, মরাঠি ছবির পাশাপাশি হলিউডি ছবিতেও কণ্ঠ দেন সঙ্কেত। ‘ইনগ্লোরিয়াস বাসটার্ডস’, ‘ডেডপুল’, ‘গ্রিন ল্যান্টার্ন’, ‘দ্য ক্রুডস’, ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা: দ্য ফার্স্ট অ্যাভেঞ্জার্স’, ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা: দ্য উইন্টার সোলজার’ এবং ‘দ্য মার্শিয়ান’-এর মতো একাধিক ইংরেজি ছবির হিন্দি ডাবিংয়ে কণ্ঠ দিয়েছেন সঙ্কেত।
‘ছোটা ভীম’ কার্টুনের জগ্গু হোক বা ‘দ্য লিজেন্ড অফ হনুমান’ কার্টুনের রাম— নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসাবে শোনা গিয়েছে সঙ্কেতকে।
‘নারুটো’, ‘বেব্লেড: মেটাল ফিউসন’, ‘ডিডেক্টিভ পিকাচু’তেও বিভিন্ন চরিত্রে কণ্ঠ দেন সঙ্কেত।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, প্রতিটি কাজের জন্য ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক আদায় করেন সঙ্কেত। তাঁর বার্ষিক আয় আনুমানিক তিন কোটি টাকা।
সমাজমাধ্যমে সঙ্কেতের অনুরাগী সংখ্যাও কম নয়। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা দেড় লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।
বর্তমানে কণ্ঠশিল্পী হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘ভয়েস ডাবিং’ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেন সঙ্কেত।