ব্যাঙ্কে হাজার হাজার কোটি টাকা, সংগ্রহে বিলাসবহুল গা়ড়ি, দামি হিরে। ১০০ কোটি মূল্যের হিরে দিয়ে কাগজ চাপা দিতেন। তবে বহুল সম্পত্তির অধিকারী হয়েও স্বাধীন ভারতের প্রথম ‘বিলিয়নেয়র’-এর আচার-আচরণ ছিল একেবারেই বিপরীত।
১৯১১ সালে হায়দরাবাদের নিজ়াম হয়েছিলেন মির ওসমান আলি খান। প্রচুর ধনসম্পত্তি থাকার জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
কানাঘুষো শোনা যায়, কাগজ চাপা দেওয়ার জন্য ‘পেপারওয়েট’ হিসাবে ১০০ কোটি টাকা মূল্যের হিরে ব্যবহার করতেন ওসমান আলি।
আকাশপথে যাতায়াতের সুবিধার জন্য নিজস্ব বিমান সংস্থাই ছিল ওসমানের। বিলাসবহুল গাড়ি সংগ্রহে রাখার শখও ছিল তাঁর।
ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে দেখা যায়, ওসমানের সংগ্রহে ছিল ৫০টি রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়ি। সিলভার ঘোস্ট মডেলের গাড়িও ছিল তাঁর।
ইতিহাসবিদদের দাবি, ইংল্যান্ডের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বিয়ে উপলক্ষে দামি উপহার দিয়েছিলেন ওসমান। ৩০০টি হিরে বসানো হার রানিকে উপহার দিয়েছিলেন হায়দরাবাদের নিজ়াম।
১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় ভারতের সঙ্গে জুড়ে যায় হায়দরাবাদ। সেই সময় স্বাধীন ভারতের প্রথম ‘শত কোটিপতি’ হিসাবে পরিচিতি পান হায়দরাবাদের নিজ়াম ওসমান।
গোলকোন্ডার হিরের খনির দায়িত্ব ছিল ওসমানের উপর। নিজামের আয়ের মূল উৎসই ছিল এই খনি।
ইতিহাসবিদদের দাবি, ওসমানের সংগ্রহে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার হিরে ছিল। সংগ্রহে ছিল প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার অন্যান্য রত্নও।
১৯৪০ সালের তথ্য অনুযায়ী ১৭০০ কোটি টাকার সম্পত্তির অধিকারী ছিলেন ওসমান। বর্তমানে যার মূল্য ২৯ লক্ষ কোটি টাকার সমতুল্য। সেই সময় ইংল্যান্ডের ব্যাঙ্কে ৩০০ কোটি টাকা জমা রেখেছিলেন তিনি।
লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তির অধিকারী হয়েও ওসমানের আচার-আচরণ ছিল অতি সাধারণ। অধিকাংশ সময় সাধারণ পোশাক পরেই দেখা যেত তাঁকে।
ইতিহাসবিদদের দাবি, ধোপদুরস্ত থাকতেন না ওসমান। অগোছালো ভাবে থাকতেই পছন্দ করতেন তিনি।
ইতিহাসবিদদের দাবি, সারা বছরে মাত্র এক বার নিজের শোওয়ার ঘর পরিষ্কার করাতেন ওসমান। প্রয়োজন ছাড়া অকারণে খরচ করার পক্ষে ছিলেন না তিনি।
ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে জানা যায়, কোনও অতিথি দেখা করতে এলে তাঁকে এক কাপ চা এবং বিস্কুট ছাড়া বিশেষ কিছু খাওয়ানো পছন্দ করতেন না ওসমান।
ইতিহাসবিদদের দাবি, স্বভাবে নাকি কার্পণ্যের ছাপও ছিল ওসমানের। অতিথি আপ্যায়নের সময় বিশেষ টাকা খরচ করতে চাইতেন না তিনি।