রণবীর কপূর থেকে আলিয়া ভট্ট, বরুণ ধওয়ান থেকে জাহ্নবী কপূর— তারকা সন্তানদের অনেকেই হিন্দি ফিল্মজগতে পা রেখে নিজেদের পরিচিতি তৈরি করেছেন। কিন্তু বলিপাড়ায় এমন বহু তারকা রয়েছেন যাঁরা অভিনয়জগতে সফল হতে পারেননি।
উদয় চোপড়া থেকে তুষার কপূর— বড় পর্দায় এই তারকাসন্তানেরা অভিনয় করলেও জনপ্রিয়তা পাননি। হিন্দি ফিল্মজগতে কেরিয়ার গড়তে ব্যর্থ হলেও ব্যবসার ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন তাঁরা। তালিকায় আর কারা রয়েছেন জানেন কি?
বলি অভিনেতা জীতেন্দ্রের পুত্র তুষার কপূর। অভিনয়ে নামার আগে বলি পরিচালক ডেভিড ধওয়ানের সহকারী হিসাবে কাজ শুরু করেন তুষার।
২০০১ সালে ‘মুঝে কুছ কহেনা হ্যায়’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন তুষার। এই ছবিতে করিনা কপূর খানের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। তার পর একের পর এক রোম্যান্টিক ঘরানার ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় তুষারকে।
রোহিত শেট্টি পরিচালিত ‘গোলমাল’ ফিল্ম সিরিজ়ে অভিনয়ের পর জনপ্রিয়তা পান তুষার। তার পর বহু হিন্দি ছবিতে অভিনয় করলেও বক্স অফিসে সে ছবিগুলি ব্যবসা করতে পারেনি।
২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সিম্বা’ ছবির একটি গানে ক্যামিয়ো চরিত্রে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় তুষারকে। বর্তমানে নিজস্ব একটি প্রযোজনা সংস্থার অধিকর্তা তিনি।
অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘লক্ষ্মী’ ছবির প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন তুষার। ‘মারীচ’ নামে একটি ছবির প্রযোজনাও করেছেন তিনি।
বাবা এবং দাদা দু’জনেই বলিপাড়ার খ্যাতনামী ছবিনির্মাতা। যশ চোপড়ার কনিষ্ঠ পুত্র এবং আদিত্য চোপড়ার ভাই উদয়রাজ চোপড়া চেয়েছিলেন অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়তে। কিন্তু অভিনয়জগতে সফল হতে পারেননি তিনি।
২০০০ সালে ‘মহব্বতেঁ’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পা রাখেন উদয়। তার পর হাতে গুনে ১০টি ছবিও নিজের কেরিয়ারের ঝুলিতে ভরতে পারেননি তিনি।
বর্তমানে দাদা আদিত্যের সঙ্গে যশরাজ ফিল্মস সংস্থার কাজ সামলান উদয়। এই সংস্থার বিনোদন বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
নব্বইয়ের দশকে জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের তালিকায় নাম লিখিয়েছিলেন টুইঙ্কল খন্না। কিন্তু অভিনয় থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ২০০১ সালে বলি অভিনেতা অক্ষয় কুমারের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন টুইঙ্কল।
বর্তমানে প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন টুইঙ্কল। ‘খিলাড়ি ৭৮৬’ এবং ‘প্যাডম্যান’-এর মতো হিট ছবি প্রযোজনা করেছেন তিনি। তার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষায় একাধিক বইও লিখেছেন টুইঙ্কল।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে ‘ড্যাডি’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পা রেখেছিলেন ছবিনির্মাতা মহেশ ভট্টের কন্যা পূজা ভট্ট। ২০০১ সালে ইংরেজি ভাষার একটি ছবিতে অভিনয়ের পর সাময়িক বিরতি নেন পূজা।
সাময়িক বিরতির পর ‘সনম তেরি কসম’ এবং ‘সড়ক ২’ ছবিতে অভিনয় করেন পূজা। ২০২১ সালে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বম্বে বেগমস’ নামের ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করে দর্শকের প্রশংসা কুড়োন তিনি।
২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘চুপ: রিভেঞ্জ অফ দ্য আর্টিস্ট’ ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় পূজাকে। অভিনয়ের পাশাপাশি নব্বইয়ের দশক থেকে প্রযোজনা এবং পরিচালনার সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন মহেশ-কন্যা।
নব্বইয়ের দশকে হিন্দি ছবির পাশাপাশি একাধিক বিজ্ঞাপনী প্রচারের মুখ ছিলেন কবীর বেদীর কন্যা পূজা বেদী। বর্তমানে গোয়ায় নিজস্ব একটি সংস্থা গড়ে তুলেছেন তিনি।
বলিউডের প্রযোজক ভাশু বাগনানির পুত্র জ্যাকি বাগনানি। ‘ফালতু’, ‘অজব গজব লভ’, ‘ওয়েলকাম টু করাচি’, ‘ইয়াঙ্গিস্তান’-এর মতো একাধিক ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে জ্যাকিকে। কিন্তু অভিনয়জগতে তেমন পরিচিতি গড়ে তুলতে পারেননি তিনি।
বর্তমানে প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন জ্যাকি। ‘সর্বজিৎ’, ‘জওয়ানি জানেমন’, ‘কুলি নম্বর ওয়ান’, ‘বেল বটম’, ‘মিশন রানিগঞ্জ’, ‘বড়ে মিঞা ছোটে মিঞা’র মতো বহু হিন্দি ছবি প্রযোজনা করেছেন তিনি।
২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লভ স্টোরি ২০৫০’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন হরমন বাওয়েজা। বলি পরিচালক হরজসপাল বাওয়েজার পুত্র তিনি।
সাফল্যের স্বাদ না পেয়ে অভিনয় থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেন হরমন। বর্তমানে প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি।