ব্যর্থতাই জীবনের শেষ নয়। বরং সাফল্যের প্রথম ধাপ। স্বপ্নের প্রতি আশা না হারিয়ে বরং জীবনের প্রতিটি ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন। মনের মধ্যে এই কথাগুলিই যেন গেঁথে নিয়েছিলেন তরুণী। তাই বার বার ব্যর্থ হয়েও হাল ছাড়েননি। কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে অন্যতম কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন আশনা চৌধরি। কোনও প্রশিক্ষণ ছাড়াই পরীক্ষা পাশ করে আইপিএস হন তিনি।
উত্তরপ্রদেশের হাপুর জেলার পিলখুয়া এলাকায় জন্ম আশনার। তাঁর বাবা কলেজে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। বাবা-মায়ের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে থাকতেন তিনি।
প্রথমে পিলখুয়ার একটি স্কুলে ভর্তি হলেও পড়াশোনার সূত্রে বার বার স্কুল বদল করতে হয় আশনাকে। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ এবং উদয়পুরের স্কুলেও পড়াশোনা করেন তিনি।
ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল আশনার। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৬.৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেন তিনি।
স্কুলের গণ্ডি পার করার পর উচ্চশিক্ষার জন্য দিল্লি চলে যান আশনা। সেখানকার একটি কলেজে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন।
২০১৯ সালে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়ে স্নাতক হন আশনা। তার পর উচ্চশিক্ষার জন্য দিল্লির একটি কলেজে ভর্তি হন তিনি।
স্নাতক হওয়ার পর বাবা-মায়ের কথা শুনে ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন আশনা। পাশাপাশি কলেজের পড়াশোনাও চালিয়ে যেতেন তিনি।
দিল্লি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে স্নাতকোত্তর করেন আশনা। পড়াশোনার পাশাপাশি সেখানকার একটি অসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্তও হন তিনি।
স্নাতক হওয়ার পর এক বছর ইউপিএসসির জন্য প্রস্তুতি নেন আশনা। ২০২০ সালে প্রথম বার পরীক্ষা দেন তিনি। কিন্তু প্রথম প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হন তিনি।
পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েও হতাশ হননি আশনা। আবার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার সিদ্ধান্তও নেন তরুণী।
২০২১ সালে আবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেন আশনা। কিন্তু দ্বিতীয় বারও পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি তিনি।
পর পর দু’বার ব্যর্থ হওয়ার পর ২০২২ সালে তৃতীয় বার ইউপিএসসি পরীক্ষা দেন আশনা। তৃতীয় বারের প্রচেষ্টা বিফলে যায়নি তরুণীর।
তৃতীয় বারের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন আশনা। ৯৯২ নম্বর পেয়ে সারা ভারত জুড়ে ১১৬ র্যাঙ্ক হয় তাঁর।
তিন বার ইউপিএসসি পরীক্ষা দেন আশনা। পর পর দু’বার ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়ার পাত্রী ছিলেন না তিনি। পড়াশোনার জন্য কোনও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হননি আশনা। বাড়িতে নিজেই প্রস্তুতি নিতেন।
কোনও রকম প্রশিক্ষণ ছাড়া বার তিনেকের প্রচেষ্টায় ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন আশনা। বর্তমানে উত্তরপ্রদেশে আইপিএস পদে নিযুক্ত রয়েছেন তিনি।
সমাজমাধ্যমেও নিজের পরিচিতি তৈরি করে ফেলেছেন আশনা। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় আড়াই লক্ষের বেশি অনুগামী রয়েছে তরুণী প্রভাবীর।