বাবা লোকসভার স্পিকার। কিন্তু রাজনীতির পথ বেছে নেননি কন্যা। বরং তিনি নজর কেড়েছেন অন্য ভাবে। প্রথম বারের চেষ্টায় ইউপিএসসির মতো কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইএএস আধিকারিক হয়েছেন ওম বিড়লার কনিষ্ঠ কন্যা অঞ্জলি বিড়লা।
১৯৯১ সালে অমিতা বিড়লার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন লোকসভার স্পিকার। আকাঙ্ক্ষা এবং অঞ্জলি নামে দুই কন্যাসন্তান রয়েছে তাঁদের।
২০১৯ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন অঞ্জলি। সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় ২০২০ সালের অগস্ট মাসে। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইএএস আধিকারিক হন বিড়লা-কন্যা।
ছোটবেলায় রাজস্থানের কোটার একটি স্কুলে ভর্তি করানো হয় অঞ্জলিকে। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর উচ্চশিক্ষার জন্য দিল্লি চলে যান তিনি।
দিল্লি চলে যাওয়ার পর সেখানকার একটি কলেজে ভর্তি হন অঞ্জলি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
কলেজে পড়াকালীন ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন অঞ্জলি। প্রথম বারের চেষ্টায় সেই পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি।
বর্তমানে রেল মন্ত্রকে আইএএস আধিকারিক হিসাবে চাকরি করেন অঞ্জলি।
পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অঞ্জলি বলেন, ‘‘পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি। আমার বাবাকে দেখেছি, তিনি কী ভাবে দেশবাসীর প্রতি দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। আমিও সমাজের জন্য কিছু করতে চাই। সে কারণেই এই পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’’
অঞ্জলি সাক্ষাৎকারে জানান, তাঁর দিদি আকাঙ্ক্ষা সব সময় তাঁকে পথ দেখিয়েছেন। প্রস্তুতির সময়ে অঞ্জলিকে অনুপ্রেরণাও দিয়েছেন তাঁর দিদি।
অঞ্জলির সাফল্যের খবর জানাজানি হতেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। নেটাগরিকদের একাংশ দাবি করেন যে, ইউপিএসসি দেওয়ার সময় কোনও পরীক্ষায় বসেননি তিনি। বাবার কারণে বিনা পরীক্ষায় আইএএস হয়েছেন অঞ্জলি।
কটাক্ষের প্রতিবাদ করেন অঞ্জলি। অন্যান্য পরীক্ষার্থীর মতো তিনিও পরীক্ষার সমস্ত নিয়মকানুন মেনেছেন বলে দাবি করেন বিড়লার কনিষ্ঠ কন্যা।
সমাজমাধ্যমে অঞ্জলির অনুগামী মহল নজরে পড়ার মতো। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা এক লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে। তবে বিতর্ক-সমালোচনায় জড়ানোর পর ইনস্টাগ্রাম থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলেছেন অঞ্জলি।
তৃতীয় মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্পিকার নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে এনডিএর মতবিরোধ তৈরি হয়। কোটা লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ওম বিড়লার বিরুদ্ধে স্পিকার নির্বাচনের ভোটে দাঁড়ান বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রার্থী, কংগ্রেসের আট বারের সাংসদ কেরলের দলিত নেতা কে সুরেশ। বুধবার লোকসভায় স্পিকার পদের নির্বাচনে জয়ী হন ওম বিড়লা।
গত লোকসভায়ও স্পিকার ছিলেন ওম বিড়লা। গত বছর শীতকালীন অধিবেশনে একই সঙ্গে ১০০ জনের বেশি সাংসদকে সাসপেন্ড করে নজির গড়েছিলেন তিনি।
স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে মাত্র তিন বার স্পিকার পদে ভোটাভুটি হয়েছে। প্রথম বার ১৯৫২ সালে। দ্বিতীয় বার ১৯৬৭ সালে। তৃতীয় বার জরুরি অবস্থার পরে, ১৯৭৬ সালে। বিরোধীদের যুক্তি, নরেন্দ্র মোদীর জমানাতেও ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’ ফিরে এসেছিল। তাই লোকসভার স্পিকার নির্বাচনেও ভোটাভুটির পুনরাবৃত্তি হয়েছে।