বাবা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অন্য দিকে কাকা বলিপাড়ার খ্যাতনামী অভিনেতা। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেনাবাহিনীতেই যোগ দিয়েছিলেন তিনি। পাঁচ বছর সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত থাকার পর অভিনয়ে নামেন। কিন্তু সইফ আলি খান, শাহিদ কপূর এবং সলমন খানের মতো তারকাদের সঙ্গে অভিনয় করেও তেমন প্রচার পাননি মহম্মদ আলি শাহ।
১৯৭৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মাসে জন্ম মহম্মদের। তাঁর বাবা জামিরুদ্দিন শাহ ছিলেন বলি অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহের দাদা। ভাই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও জামিরুদ্দিনের ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার।
স্বপ্নপূরণও করেছিলেন জামিরুদ্দিন। লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন তিনি। ছোট থেকে বাবাকে দেখার পর মহম্মদও সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন বোনেন।
স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর একটি কল সেন্টারে চাকরি শুরু করেন মহম্মদ। তার পর চেন্নাইয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হন তিনি। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
জম্মু ও কাশ্মীরে সীমান্তে লেফ্টেন্যান্ট পদে কর্মরত ছিলেন মহম্মদ। তার পর পদোন্নতি হয়ে ক্যাপ্টেন হয়েছিলেন তিনি।
ক্যাপ্টেন পদে উত্তীর্ণ হওয়ার পর উত্তর-পূর্ব ভারতে চলে যান মহম্মদ। পদোন্নতি হয়ে মেজর হন তিনি। পাঁচ বছর সেনাবাহিনীতে কাজ করেন তিনি।
২০০৭ সালে একটি জনপ্রিয় চ্যানেলের তরফে ভাষ্যকার হিসাবে কাজ করেন মহম্মদ। সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর কলকাতার একটি কলেজ থেকে মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।
পড়াশোনা শেষ করে পর পর দু’টি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন মহম্মদ। কর্মরত থাকাকালীন অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তাঁর।
থিয়েটার করতে শুরু করেন মহম্মদ। তার পর বড় পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। ২০১২ সালে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
২০১২ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘এজেন্ট বিনোদ’ ছবিতে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান মহম্মদ। সইফ আলি খান এবং করিনা কপূর খান অভিনীত এই ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
দু’বছরের বিরতির পর ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হায়দার’ ছবিতে ইরফান খান, তব্বু, শাহিদ কপূরের সঙ্গে অভিনয় করেন মহম্মদ। সেখানেও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান তামাশা’, ‘দ্য রুফিয়া’, ‘ভোদকা ডায়েরিজ়’, ‘রাগদেশ’-এর মতো একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন মহম্মদ। ২০১৫ সালে একটি হিট ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি।
২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ ছবিতে সলমন খানের সঙ্গে অভিনয় করেন মহম্মদ। তাঁর কেরিয়ারের ঝুলিতে যোগ হয় একটি সুপারহিট ছবি। কিন্তু তাতে আখেরে খুব একটা লাভ হয়নি অভিনেতার। কারণ এই ছবিতেও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
অভিনেতা হিসাবে বলিপাড়ায় তেমন প্রচার পাননি মহম্মদ। ২০১৭ সালে ‘ভোগা খিড়িকি’ নামে একটি অসমিয়া ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
২০২০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইয়ারা’ ছবিতে বিদ্যুৎ জামওয়াল এবং শ্রুতি হাসনের সঙ্গে অভিনয় করেন মহম্মদ। এই ছবিতেও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। তার পর আর কোনও ছবিতে অভিনয় করেননি তিনি। বর্তমানে মোটিভেশনাল স্পিকার হিসাবে কাজ করেন নাসিরুদ্দিনের ভাইপো।