বাবা ছিলেন হিন্দি ফিল্মজগতের জনপ্রিয় অভিনেতা। পরিবারের প্রায় সকলেই অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু ৪০ বছর হিন্দি ফিল্মজগতে কাজ করার পর মাত্র চারটি ছবিতে অভিনয় করেছেন বলি অভিনেতা দেব আনন্দের পুত্র সুনীল আনন্দ। এখন কী করছেন তিনি?
১৯৫৬ সালের ৩০ জুন সুইৎজ়ারল্যান্ডের জ়ুরিখে জন্ম সুনীলের। সেখানেই স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। ওয়াশিংটনের একটি ইউনিভার্সিটি থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে পড়াশোনা করেন সুনীল।
চল্লিশের দশকে কেরিয়ার শুরু করলেও সত্তর থেকে আশির দশকে অভিনেতা হিসাবে খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছন দেব আনন্দ। অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনা এবং পরিচালনার ক্ষেত্রেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, সুনীলও যেন তাঁর বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে হিন্দি ফিল্মজগতে আত্মপ্রকাশ করেন তাই চাইতেন দেব আনন্দ। বাবার ইচ্ছাকে সম্মান জানান সুনীল। অভিনয়ে নামার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
১৯৮৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘আনন্দ অওর আনন্দ’। সুনীলের কেরিয়ারের প্রথম ছবি। এই ছবির পরিচালনা এবং প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন দেব আনন্দ।
‘আনন্দ অওর আনন্দ’ ছবিতে সুনীলের সঙ্গে অভিনয় করেন দেব আনন্দ। কানাঘুষো শোনা যায় পুত্রের কেরিয়ারের প্রথম ছবি হিট হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে ভেবেই নাকি এই ছবিতে অভিনয় করেন দেব আনন্দ।
দেব আনন্দ ছাড়াও সুনীলের কেরিয়ারের প্রথম ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় রাখী, স্মিতা পাটিল এবং রাজ বব্বরের মতো বলি তারকারা। কিন্তু ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।
প্রথম ছবি ব্যর্থ হওয়ার দু’বছর পর ‘কার থিফ’ নামে একটি ছবিতে অভিনয় করেন সুনীল। ১৯৮৬ সালে ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। কিন্তু সে ছবিও বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করতে ব্যর্থ হয়।
কাকা বিজয় আনন্দ পরিচালিত এবং দেব আনন্দ প্রযোজিত ‘ম্যায় তেরে লিয়ে’ ছবিতে অভিনয় করেন সুনীল। সুনীলের পাশাপাশি এই ছবিতে অভিনয় করেন রাজেন্দ্র কুমার, আশা পারেখ এবং মীনাক্ষি শেশাদ্রি।
১৯৮৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় সুনীলের কেরিয়ারের তৃতীয় ছবি ‘ম্যায় তেরে লিয়ে’। কিন্তু মুক্তির পর তেমন ব্যবসা করতে পারেনি ছবিটি। তিনটি ছবি পর পর ফ্লপ হওয়ায় পরিচালনার কাজে হাত লাগান সুনীল।
হং কংয়ে গিয়ে মার্শাল আর্টসের প্রশিক্ষণ নেন সুনীল। ২০০১ সালে ‘মাস্টার’ ছবির মাধ্যমে পরিচালনা শুরু করেন তিনি।
পরিচালনার পাশাপাশি এই ছবিতে অভিনয়ও করতে দেখা যায় দেব আনন্দের পুত্র সুনীলকে। কিন্তু সে ছবিও মুক্তির পর বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়।
অভিনয়ে কোনও ভবিষ্যৎ নেই তা বুঝতে পেরে প্রযোজনা এবং পরিচালনার ক্ষেত্রকেই কেরিয়ারের জন্য বেছে নিলেন সুনীল।
২০১৪ সালে ‘ভাগাটর মিক্সার’ নামে একটি হলিউড ছবি পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন সুনীল। সেই ছবিতে অভিনয়ও করেন তিনি।
নিজস্ব একটি প্রযোজনা সংস্থাও খোলেন সুনীল। বর্তমানে সেই সংস্থার কাজের সঙ্গেই নিজেকে যুক্ত রেখেছেন তিনি। আলোর রোশনাই থেকে দূরে থাকেন দেব আনন্দের পুত্র।