বলিউড তারকা থেকে ক্রিকেটার— বিজ্ঞাপনী দুনিয়ার সঙ্গে সেলেবদের বন্ধন অত্যন্ত নিবিড়। তারকাদের আয়ের একটা মোটা অংশ আসে বিজ্ঞাপনে মুখ দেখিয়েই। কে কতগুলি সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসডর, সেই নিয়ে খ্যাতনামীদের মধ্যে রীতিমতো টক্করও চলে। বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রচারের কাজ পেতে কয়েক জনের উপর নির্ভর করতে হয় খ্যাতনামীদের। তাঁদের হাত ধরেই বিজ্ঞাপনী দুনিয়ায় লক্ষ্মীলাভ হয় তারকাদের। তেমনই এক জন বান্টি সাজদেহ।
ভারতীয় ক্রিকেটে এই মুহূর্তে অন্যতম উজ্জ্বল তারকা বিরাট কোহলি। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১০৪০ কোটি টাকা। এই আয়ের অধিকাংশটাই বিজ্ঞাপন এবং সমাজমাধ্যম থেকে অর্জন করেছেন বিরাট। আর এর নেপথ্যে ‘বিরাট’ ভূমিকা রয়েছে বান্টির।
বান্টির নিজস্ব সংস্থা রয়েছে। খ্যাতনামীদের প্রচারের আলোয় আলোকিত করার নেপথ্যে বড় ভূমিকা পালন করে ওই সংস্থা।
শুধু বিরাট নন, দেশের অনেক তারকাই বান্টির উপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করেন। আর এ ভাবেই বাইশ গজের দুনিয়ার পাশাপাশি বি-টাউনেও বেশ পরিচিত মুখ বান্টি।
মুম্বইয়ের স্কুলে পড়াশোনার পাঠ শেষ করে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দিয়েছিলেন বান্টি। সেখানে বন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। পরে মুম্বইয়ে এইচআর কলেজ থেকে বাণিজ্য এবং অর্থনীতি নিয়ে পড়েন।
তার পরই পা রাখেন বিনোদন দুনিয়ায়। একটি সংস্থায় ‘ট্যালেন্ট অ্যাকুইজিশান অ্যাডভাইসর’ হিসাবে কাজ শুরু করেন বান্টি।
বলিপাড়ায় বান্টির বাজিমাত হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। করোনাকালে সেই সময় প্রযোজক-পরিচালক কর্ণ জোহরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটি ট্যালেন্ট ম্যানেজেমন্ট সংস্থা খোলেন বান্টি।
বলিউডের হাল আমলের জনপ্রিয় মুখ অনন্যা পাণ্ডে, দক্ষিণী তারকা বিজয় দেবরেকোন্ডাকে সই করিয়েছিল বান্টির সংস্থা। তার পর থেকেই বলিপাড়ায় ক্রমেই পরিচিতি পেতে শুরু করেন বান্টি।
ওই সংস্থায় ‘স্পোর্টস ম্যানেজার’ হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন বান্টির তুতো বোন ঋতিকা সাজদেহ। বিরাট, রোহিত শর্মাদের কেরিয়ার সামলাতেন তিনি। কোহলির ম্যানেজার ছিলেন ঋতিকা। পরে রোহিতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন তিনি।
অর্থাৎ, সম্পর্কে ক্রিকেটার রোহিত শর্মার শ্যালক বান্টি। বাইশ গজের তারকা কোহলির কেরিয়ারে ‘বিরাট’ কৃতিত্ব রয়েছে বান্টির।
কোহলি যে সব বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রচারমুখ হিসাবে কাজ করেন, তার পুরোটাই সামলান বান্টি। কোন সংস্থার হয়ে বিরাট প্রচার চালাবেন, সেই চুক্তির নেপথ্যে হাত থাকে বান্টিরই। শোনা যায়, বান্টির হাতযশেই হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি অর্জন করেছেন বিরাট।
বিরাট ছাড়াও ক্রীড়া দুনিয়ার তারকা কে এল রাহুল, সানিয়া মির্জার হয়েও কাজ করে বান্টির সংস্থা।
ক্রিকেটার রোহিতের যেমন আত্মীয় হন বান্টি, তেমনই বলি সুপারস্টার সলমন খানেরও অতিথি হন তিনি।
সলমনের ছোট ভাই অভিনেতা সোহেল খানের শ্যালক হন বান্টি। বান্টির দিদি সীমার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সোহেলের। পরে সীমার সঙ্গে সোহেলের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
যাঁর হাত ধরে এত তারকাদের লক্ষ্মীলাভ হয়েছে, সেই বান্টির কত সম্পদ রয়েছে? শোনা যায়, বান্টির মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
মডেল অম্বিকা চৌহানের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বান্টির। তবে পরে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের প্রাক্তন বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে বান্টির প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে জোর জল্পনা ছড়িয়েছিল। তবে এই নিয়ে কখনওই মুখ খোলেননি বান্টি।
সুশান্তের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে বান্টিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। বান্টির সংস্থা কাজ করেছিল সুশান্তের জন্য। সেই সূত্রেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বান্টি।