কেরিয়ারের ঝুলিতে রয়েছে বহু ব্যর্থ ছবি। বক্স অফিসে ১৩০০ কোটি টাকার লোকসানও করেছেন তিনি। তবুও জনপ্রিয়তায় শাহরুখ খান, সলমন খানের মতো তাবড় বলি তারকাদের সঙ্গে টক্কর দেন অভিনেতা।
১৯৯১ সালে ‘সৌগন্ধ’ ছবির হাত ধরে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন অক্ষয় কুমার। এক সময়ে সর্বাধিক উপার্জনকারী অভিনেতা ছিলেন তিনি। কিন্তু লোকসানের পরিমাণও কম নয় তাঁর কেরিয়ারে।
তিন দশকেরও বেশি সময় হিন্দি ফিল্মজগতে কাটিয়ে ফেলেছেন অক্ষয়। নব্বইয়ের দশকে অভিনয় শুরু করলেও ২০০০ সালের পর সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছিলেন তিনি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ২০০৭ থেকে ২০১৭— এই ১০ বছরের ব্যবধানে আয়ের নিরিখে অভিনেতাদের তালিকার প্রথম সারিতে নাম লিখিয়ে ফেলেন অক্ষয়।
২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর একাধিক হিট ছবি বক্স অফিসে উপহার দিয়েছেন অক্ষয়। তা হলে এত লোকসান কী ভাবে করলেন বলিউডের ‘খিলাড়ি’?
বলিপাড়ার অধিকাংশের দাবি, অক্ষয় তাঁর ৩৩ বছরের কেরিয়ারে এত ছবিতে অভিনয় করেছেন যে হিট ছবির সংখ্যার পাশাপাশি সংখ্যা বেড়েছে ফ্লপ ছবিরও। বক্স অফিসে তাঁর বেশ কয়েকটি ছবি বিশেষ লক্ষ্মীলাভ করেনি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ১৯৯১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত অক্ষয়ের যতগুলি ছবি বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছে সেই ছবিগুলি থেকে মোট লোকসানের পরিমাণ প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা।
এমনকি গত পাঁচ বছরে অক্ষয় অভিনীত অধিকাংশ ছবিই বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছে। অভিনেতার কেরিয়ারে সবচেয়ে ‘মন্দ’ সময় হিসাবে ধরা হয় এই পাঁচ বছর।
‘সেলফি’, ‘রাম সেতু’, ‘জোকার’, ‘জানি দুশমন’, ‘সম্রাট পৃথ্বীরাজ’-এর মতো অক্ষয়ের একাধিক ছবি বক্স অফিসে তেমন সফল হয়নি।
২০২২ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় অক্ষয় অভিনীত ‘সম্রাট পৃথ্বীরাজ’। এই ছবির হাত ধরে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন বিশ্বসুন্দরী মানুষী চিল্লর। বলিপাড়া সূত্রে খবর, এই ছবিটি মুক্তির পর ১৭০ কোটি টাকা লোকসান করে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘বড়ে মিঞা ছোটে মিঞা’। অক্ষয়ের সঙ্গে এই ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা যায় মানুষীকে। সঙ্গে ছিলেন টাইগার শ্রফ এবং আলয়া এফের মতো বলি তারকারা।
বলিপাড়ার গুঞ্জন, ‘বড়ে মিঞা ছোটে মিঞা’ ছবিটি তৈরি করতে ৩৫০ কোটি টাকা খরচ হয়। কিন্তু ছবি মুক্তির পর বক্স অফিসে প্রায় ২৬০ কোটি টাকার লোকসান করে অক্ষয়ের ছবি।
১৩০০ কোটি টাকার লোকসান করলেও বক্স অফিসে ৭০০০ কোটি টাকার ব্যবসাও করেছে অক্ষয়ের ছবি। ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ওএমজি ২’। বলিপাড়া সূত্রে খবর, ৫০ কোটি টাকা বাজেটে তৈরি ছবিটি বক্স অফিসে ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা করে।
তবে চলতি বছরে অক্ষয় প্রচুর ছবির শুটিং করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। বহু তারকার সঙ্গে একই ছবিতে অভিনয় করবেন আবার একাধিক একক ছবিতেও অভিনয় করার কথা অক্ষয়ের।
‘সিংঘম এগেন’ এবং ‘ওয়েলকাম টু দ্য জঙ্গল’-এর মতো তারকামন্ডিত ছবির পাশাপাশি ‘সরফিরা’ এবং ‘স্কাই ফোর্স’ নামের দু’টি একক ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা যাবে অক্ষয়কে।
অতীতে হিন্দি ফিল্মজগতে অক্ষয়ের যে ছবিগুলি হিট করেছে, সেগুলির মধ্যে দু’টি ছবির সিক্যুয়েল নিয়ে হাজির হতে চলেছেন অক্ষয়। কানাঘুষো শোনা যায়, ‘হেরা ফেরি ৩’ এবং ‘জলি এলএলবি ৩’-র সিক্যুয়েল ছবি মুক্তি পাবে শীঘ্রই।
২০২১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অতরঙ্গি রে’ ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন সারা আলি খান এবং দক্ষিণী অভিনেতা ধনুষ। ছবিতে ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয় করেন অক্ষয় কুমার।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘অতরঙ্গি রে’ ছবিতে ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয় করে ২৭ কোটি টাকা আয় করেন অক্ষয়।
বলিপাড়ার অধিকাংশের দাবি, মার্শাল আর্টসের প্রশিক্ষণ নিতে ব্যাঙ্ককে গিয়েছিলেন বলি অভিনেতা অক্ষয় কুমার। সেখানে ‘ব্ল্যাক বেল্ট’ও পান তিনি।
ব্যাঙ্ককে থাকাকালীন সেখানকার হোটেলে কাজ করতেন অক্ষয়। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে অক্ষয় জানিয়েছিলেন, ব্যাঙ্ককের কোনও হোটেলে খাবার সরবরাহকারী, আবার কোনও হোটেলে রাঁধুনি হিসাবেও কাজ করেছিলেন তিনি।
কানাঘুষো শোনা যায়, ব্যাঙ্কক থেকে দেশে ফিরে মার্শাল আর্টসের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন অক্ষয়। সেখানে তাঁর এক ছাত্র একটি ছোটখাটো সংস্থার তরফে মডেলিংয়ের প্রস্তাব দেন অক্ষয়কে। তার পর মডেলিং থেকে অভিনয়ের যাত্রা শুরু হয় বলিউডের ‘খিলাড়ি’র।
২০১১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ট্রান্সফরমার্স: ডার্ক অফ দ্য মুন’। এই ছবির হিন্দি ডাবিংয়ে অপটিমাস প্রাইম চরিত্রের নেপথ্যে কণ্ঠ দিয়েছিলেন অক্ষয়।
প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ার কারণে বলিউডের ‘খিলা়ড়ি’ অক্ষয়কে মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে ‘এক্স প্লাস’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয় বলে বলিপাড়া সূত্রে খবর।