আট সপ্তাহ আগে বলি অভিনেতা সলমন খানের সঞ্চালনায় ওটিটি প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু করেছিল ‘বিগ বস্ ওটিটি’ রিয়্যালিটি শোয়ের দ্বিতীয় সিজ়ন। সোমবার এই শোয়ে অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিযোগীকে হারিয়ে জয়ের সিংহাসনে বসলেন এলভিস যাদব।
‘বিগ বস্ ওটিটি’র নজরকাড়া ট্রফি হাতে নিয়ে ‘এলভিস আর্মি’কে (এলভিসের অনুরাগীমহলের নাম) ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেন না এলভিস। শেষ ১৫ মিনিটে নাকি ২৮ কোটি ভোট পেয়েছেন তিনি, জয়ের পর দাবি করলেন এমনটাই। পরমুহূর্তেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন এলভিস।
১৯৯৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর হরিয়ানার গুরুগ্রামে জন্ম এলভিসের। বাবা, মা এবং বোনকে নিয়ে গুরুগ্রামেই থাকতেন তিনি।
গুরুগ্রাম থেকে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে দিল্লিতে যান এলভিস। স্নাতক স্তরের পড়াশোনার জন্য দিল্লির কলেজে ভর্তি হন তিনি।
ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিলেন এলভিস। প্রতিটি পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট নিয়ে পাশ করতেন তিনি। কানাঘুষো শোনা যায়, ইউপিএসসি পরীক্ষা দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ইউটিউব তাঁর জীবন বদলে দেয়।
২০১৬ সালে ইউটিউবে নিজের চ্যানেল খোলেন এলভিস। প্রথমে স্কেচ ভিডিয়ো তৈরি করে পোস্ট করতেন তিনি। তার পর মজাদার ভিডিয়োও বানাতে শুরু করেন।
ইউটিউবে ভিডিয়ো বানানোর পাশাপাশি টিকটকেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন এলভিস। তাঁর একটি ভিডিয়ো হঠাৎ সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দর্শকের একটা বড় অংশের কাছে এক মুহূর্তে পৌঁছে যান এলভিস।
ইউটিউবে দু’টি চ্যানেল রয়েছে এলভিসের। একটি চ্যানেলে মজাদার ভিডিয়ো পোস্ট করেন তিনি। দ্বিতীয় চ্যানেল থেকে এলভিস তাঁর বানানো কিছু শর্ট ফিল্ম পোস্ট করেন।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ইউটিউব থেকে অধিকাংশ আয় হয় এলভিসের। প্রতি মাসে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা উপার্জন করেন তিনি।
তবে ভিডিয়ো বানানোর ফলে বলি অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর থেকে শুরু করে ধ্রুব রাঠীর মতো ইউটিউবারের সঙ্গে বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েছিলেন এলভিস।
কানাঘুষো শোনা যায়, স্বরা নাকি এলভিসের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। ‘বিগ বস্ ওটিটি’-র ঘরেও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এলভিস।
‘বিগ বস্ ওটিটি’ শুরু হওয়ার কিছু দিন পর ২৭তম পর্বে ‘ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি’ হিসাবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন এলভিস। আশিকা ভাটিয়া নামে অন্য এক প্রতিযোগীও এলভিসের সঙ্গে রিয়্যালিটি শোয়ে অংশ নিয়েছিলেন।
‘বিগ বস্ ওটিটি’-র ঘরে যাওয়ার পর এলভিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন আশিকা। এলভিস নাকি আশিকার শরীরী গঠন নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেছেন। এই নিয়ে অশান্তিও কম হয়নি ‘বিগ বস্ ওটিটি’-এর ঘরে।
ইউটিউবে ভিডিয়ো বানানোর পাশাপাশি পোশাক বিক্রির ব্যবসাও করেন এলভিস। তা ছাড়া শেয়ার বাজারে অর্থ বিনিয়োগের প্রতিও আগ্রহ রয়েছে তাঁর।
‘বিগ বস্ ওটিটি’-তে জয়ী হওয়ার পর এলভিস জানান, শেষ ১৫ মিনিটে ২৮ কোটি ভোট পেয়েছিলেন তিনি। এলভিসের দাবি, জিয়ো সিনেমার প্রধান জ্যোতি দেশপাণ্ডে নিজে তাঁকে এই কথা জানিয়েছেন।
১৫ মিনিটে কী করে এলভিস ২৮ কোটি ভোট পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নেটব্যবহারকারীদের মধ্যে। নেটব্যবহারকারীদের একাংশের দাবি, ৭০ লক্ষ দর্শক ‘বিগ বস্ ওটিটি’-এর শো দেখেন। সে ক্ষেত্রে কী করে ২৮ কোটি ভোট পেতে পারেন এলভিস?
এলভিসের অনুরাগীরা আবার পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, জিয়ো সিনেমার ব্যবহারকারীরা একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৯ বার ভোট দিতে পারেন। এক অনুরাগীর দাবি, ‘‘আমি নিজেই ১০ খানা ফোন থেকে ৭০০-র বেশি ভোট দিয়েছি।’’
এলভিস ঘুরতে ভালবাসেন। গিটার বাজাতেও পছন্দ করেন তিনি। শরীরচর্চা করতে নিয়মিত জিমেও যান।
ইউটিউবার হিসাবে আগে থেকেই জনপ্রিয় ছিলেন এলভিস। ‘বিগ বস্ ওটিটি’-র মঞ্চে বিজয়ী হয়ে যেন তাঁর জনপ্রিয়তা বেড়ে গিয়েছে। ইনস্টাগ্রামে দেড় কোটি অনুরাগী রয়েছেন এলভিসের।