নায়িকার পেশায় থাকলে কি হরদম কুপ্রস্তাব আসে? ‘মিটু’ আন্দোলন চলাকালীন এ রকম বহু ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে ইন্ডাস্ট্রির নামকরা তারকাদেরও। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন তেজস্বিনী পণ্ডিত। এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে সরব হয়েছেন অভিনেত্রী।
তেজস্বিনী মরাঠি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় নায়িকা। শুধু বড় পর্দায় নয়, মরাঠি ধারাবাহিকেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ছবির পাশাপাশি ‘সমান্তর’ এবং ‘অথং’ নামের ওয়েব সিরিজ়েও কাজ করেছেন তিনি।
২০০৪ সালে ‘আগা বাই আররেছা’ নামের একটি কমেডি ড্রামা ঘরানার মরাঠি ছবিতে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন তেজস্বিনী।
২০০৪ সালের পর বিভিন্ন ছবিতে কাজ করলেও তেজস্বিনীর কেরিয়ারের পারদ ওঠানামা করছিল। ২০০৯ সাল নাগাদ তিনি ফিল্মজগতে ‘স্ট্রাগল’ করছিলেন। পুণের একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন তিনি।
বাড়িওয়ালাকে মাসিক ভাড়া দিতে গিয়েছিলেন তেজস্বিনী। কিন্তু নায়িকাকে দেখার পর কুপ্রস্তাব দেন তাঁর বাড়িওয়ালা। তেজস্বিনীর কাছে বাড়ি ভাড়া চান না। বরং তাঁর সঙ্গে শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন ওই বাড়িওয়ালা।
বাড়িওয়ালার প্রস্তাব শুনে আর শান্ত থাকতে পারেননি তেজস্বিনী। টেবিলে জলের একটি গ্লাস রাখা ছিল। বাড়িওয়ালার দিকে গ্লাস ছুড়ে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
তেজস্বিনী বাড়িওয়ালাকে জানিয়েছিলেন, তিনি যদি এই ধরনের প্রস্তাবে রাজি হতেন, তা হলে এত দিন ধরে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন না। বিলাসবহুল বাড়ি থেকে শুরু করে গাড়ি পর্যন্ত কিনে ফেলতেন।
তেজস্বিনী কোন পেশায় রয়েছেন, তা নিয়ে অনবরত লোকজন তাঁকে খারাপ চোখে দেখতেন। এমনকি, তিনি কত উপার্জন করতেন, তা নিয়েও তেজস্বিনীকে কথা শোনাতেন অনেকে।
১৯৮৬ সালে মহারাষ্ট্রের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তেজস্বিনীর। মরাঠি ইন্ডাস্ট্রিতে ভালই পরিচিতি রয়েছে তাঁর। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে আসার কোনও পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না তেজস্বিনীর। পরিস্থিতির চাপে অডিশন দিতে গিয়েছিলেন তিনি।
তেজস্বিনীর বাবা-মা বরাবর চাইতেন, অভিনেত্রীর বোন যেন অভিনয় করেন। অডিশন দেওয়ার তারিখ পর্যন্ত ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু অডিশনের দিন তেজস্বিনীর বোন কোনও কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
কোনও ভাবেই অডিশন দিতে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না তেজস্বিনীর বোন। তাই তেজস্বিনীকে অডিশনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তাঁর বাবা-মা।
৩০ জন প্রতিযোগীর সঙ্গে অডিশন দিয়েছিলেন তেজস্বিনী। শেষ পর্যন্ত বিচারকেরা তাঁকেই নায়িকা হিসাবে বেছে নেন। তার পর থেকেই তাঁর যাত্রা শুরু।
কেরিয়ারে সাফল্যের পাশাপাশি নিজের ব্যক্তিগত জীবনেও সুখী ছিলেন তেজস্বিনী। ২০১২ সালে তাঁর বহু দিনের প্রেমিক ভূষণ বোপচেকে বিয়ে করেন তিনি।
বর্তমানে মরাঠি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন তেজস্বিনী। ছবিপ্রতি ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা উপার্জন করেন তিনি।