Chinese Hydroelectric Projects

জলবিদ্যুতে বলীয়ান হতে পড়শিদের ‘শুকিয়ে মারার’ চেষ্টা, চিনের গ্রাসে এশিয়ার পাঁচ দেশ

নদীমাতৃক দেশ চিন। ছোট বড় অনেক নদী বিস্তীর্ণ এই ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। সেই নদীর জলকে কাজে লাগিয়ে বলীয়ান হয়ে উঠেছে জিনপিংয়ের দেশ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৫
Share:
০১ ১৯

আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় যে কোনও দেশের ক্ষমতার চাবিকাঠি লুকিয়ে থাকে তার প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, শিল্প, বাণিজ্যের উপর। চিনের ক্ষমতার অন্যতম উৎস তাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎশক্তি।

০২ ১৯

নদীমাতৃক দেশ চিন। ছোট-বড় অনেক নদী বিস্তীর্ণ এই ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। একসময় চিনকে বার বার কাঁদিয়েছে সে সব নদী। বন্যায় ভেসেছে বিস্তীর্ণ উপত্যকা।

Advertisement
০৩ ১৯

কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নদীকে ঠেকিয়েছে চিন। প্রাকৃতিক বিপর্যয় রুখতে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েছে তারা। বাঁধ দিয়ে আটকেছে নদীর জল। ফলে বন্যার পরিমাণ আগের চেয়ে কমে এসেছে।

০৪ ১৯

নদীতে বাঁধ দিয়ে সেই নদীর জলকেই কাজে লাগিয়েছে চিন। জলের স্রোতের সাহায্যে তৈরি করেছে বিদ্যুৎ। যা তাদের বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশে পরিণত করেছে।

০৫ ১৯

চিনের দুঃখ বলা হয় হোয়াংহো নদীকে। এই নদীতে এক সময় বছর বছর বিধ্বংসী বন্যা হত। বর্তমানে বন্যার পরিমাণ কমে আগের চেয়ে ১০ ভাগ হয়েছে। চিনের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ নদীর নাম ইয়াংসিকিয়াং।

০৬ ১৯

জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বরাবরই এগিয়ে চিন। বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যান্য পন্থাগুলির চেয়ে এই জলবিদ্যুতে বেশি আস্থা রাখে দেশের প্রশাসন। সেই অনুযায়ী আরও বেশি করে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে জোর দেয় শি জিনপিং সরকার।

০৭ ১৯

বর্তমানে চিনে মোট নদীবাঁধের সংখ্যা ৯৮ হাজার। এর মাধ্যমে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। চিনের কাছে যা অগ্রগতির হাতিয়ার, সেটাই কিন্তু তার পড়শি দেশগুলির অগ্রগতির অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

০৮ ১৯

জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যথেচ্ছ পরিমাণে নদীবাঁধ নির্মাণ করেছে চিন। আরও বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা তাদের রয়েছে। কিন্তু নদীতে বাঁধ দিতে গিয়ে অন্য কোনও দেশের কথা তারা ভাবছে না বলে অভিযোগ।

০৯ ১৯

ভূপ্রকৃতিগত কারণে চিনের অবস্থান পড়শি দেশগুলিকে তার উপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে। সেই সঙ্গে চিনের অর্থনৈতিক এবং ভূ-রাজনীতিগত ক্ষমতা তো রয়েছেই। যে কারণে চাইলেও জিনপিংয়ের উপর কথা বলতে পারে না ছোট দেশগুলি।

১০ ১৯

চিনে বড় বড় নদীতে বাঁধ দেওয়ার কারণে নিচু এলাকার দেশগুলিতে জলসঙ্কট দেখা দেয়। এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের উপর। চিন থেকে বয়ে আসা ব্রহ্মপুত্র নদের জল বাংলাদেশের অন্যতম ভরসার নাম।

১১ ১৯

ব্রহ্মপুত্র নদে চিনের বাঁধের কারণে বাংলাদেশে পর্যাপ্ত জল প্রবেশ করে না। ফলে অনেক সময়েই বিপদে পড়তে হয় হাসিনা সরকারকে। বাংলাদেশে বহু নদী রয়েছে। তবে ব্রহ্মপুত্র সেগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান।

১২ ১৯

বাংলাদেশ ছাড়াও চিনের নদীবাঁধ সংক্রান্ত নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশ। তালিকায় আছে লাওস, তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশ।

১৩ ১৯

চিনের ১৩টির মধ্যে অন্তত ১১টি জলবিদ্যুৎ উৎপন্নকারী নদীবাঁধের বিরুদ্ধে জল আটকানোর সরাসরি অভিযোগ রয়েছে। শুকনো আবহাওয়ার সময়েও জল ছাড়া হয় না বলে অভিযোগ। যে কারণে খরার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় দেশগুলিতে।

১৪ ১৯

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে কার্যকরী এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চিনা নদী মেকং। এই নদীতেও বাঁধ দিয়ে জল আটকানোর অভিযোগ রয়েছে জিনপিংয়ের সরকারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, জল আটকানোর বিষয়ে চিন অত্যন্ত স্বার্থপর মানসিকতা নিয়ে চলে।

১৫ ১৯

একের পর এক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করে পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি করছে চিন। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, হিমালয় সংলগ্ন এলাকায় ভূমিধস এবং বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের নেপথ্যেও দায়ী চিনের এই সব প্রকল্প।

১৬ ১৯

উচ্চতর ভূখণ্ডে অবস্থানের কারণে পাহাড়ি নদীগুলির সুতো ধরা আছে চিনের হাতেই। ব্রহ্মপুত্র, সিন্ধু, ইরাবতী, মেকং প্রভৃতি নদীর উৎস চিনে। তাই জলের জন্য নীচের দেশগুলিকে জিনপিংয়ের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়।

১৭ ১৯

২০২০ সালের নভেম্বরে করোনা অতিমারির আতিশয্যের মাঝেই চিন তিব্বত সংলগ্ন এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের উপরিভাগে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিল। এই বাঁধের উচ্চতা হবে ৫০ ফুট।

১৮ ১৯

ব্রহ্মপুত্র নদ ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, অসম এবং বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। এই বাঁধ তৈরি হলে ব্রহ্মপুত্রের উপকূলে জলসঙ্কট দেখা দিতে পারে। এই প্রকল্পটি থেকে বছরে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে চিনের।

১৯ ১৯

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, জলের বিষয়ে আরও বেশি সহনশীল হওয়া উচিত চিনের। জলবণ্টন নীতি, চুক্তিগুলি তাদের মেনে চলা উচিত। তা না হলে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ আগামী দিনে জলের অভাবে ধুঁকবে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement