কোনও জিনিসের কার্যকারিতা ফুরিয়ে গেলে তা বাতিলের তালিকায় ফেলে দিতে বেশি সময় লাগে না। বাতিলের তালিকা থেকে উঠে এসে নবজন্ম পেয়েছে খুব কম জিনিসই। ফেলিক্স ডেমিন এমনই এক কাজ করলেন। সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো পোস্ট করার পর এমন চর্চায় এলেন যে, তাঁকে নিয়ে আলোচনা করছেন ভারতীয় শিল্পপতি আনন্দ মাহিন্দ্রাও।
একটি বোয়িং ৭৩৭ সাধারণত ৯০ হাজার বার আকাশে উড়তে এবং অবতরণ করতে পারে। ৫৫ হাজার ঘণ্টা উড়তে পারে বিমানটি। কার্যকারিতা ফুরিয়ে যাওয়ার পর তা নতুন ভাবে সাজিয়ে একটি বিলাসবহুল ভিলা তৈরি করেছেন ফেলিক্স।
ফেলিক্স সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে ভিলাটি ঘুরিয়ে দেখান। তিনি জানান, একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমানকেই নতুন রূপ দিয়ে দুই বেডরুমবিশিষ্ট ভিলায় পরিণত করেছেন তিনি।
ইন্দোনেশিয়ার বালির ন্যাং ন্যাং সমুদ্রসৈকতের সামনে পাহাড়ের কোলে এই ভিলা প্রস্তুত করেছেন ফেলিক্স। ধাপে ধাপে সিঁড়ি উঠে গিয়েছে ভিলার দরজার সামনে।
দরজা খুলে ভিলার অন্দরমহলে প্রবেশ করলেই সামনের ঘরে একটি ডাইনিং রুম এবং অতিথিদের বসার জায়গা। সামনে দেওয়াল জুড়ে কাচের দরজা। সমুদ্রের অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায় সেখান থেকে।
কাচের দরজা ঠেলে ও পারে গেলেই রয়েছে খোলা বারান্দা। বারান্দায় বসার জায়গা রয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫০ মিটার উপরে থাকা এই বিমান-ভিলায় রয়েছে জাকুজ়ি এবং সুইমিং পুল।
ভিলার ভিতরে একটি সরু প্যাসেজের ভিতর দিয়ে হেঁটে গেলে দেখা যাবে, প্যাসেজের দু’দিকে দু’টি বাথরুম। তার মধ্যে একটি বাথরুমে রয়েছে শুধুমাত্র স্নান করার ব্যবস্থা।
আলমারির পাশাপাশি আলাদা ভাবে ঘর তৈরি করে রাখা হয়েছে। সেখানে রয়েছে চোখমুখ ধোওয়ার ব্যবস্থা। তার সামনে দিয়ে যাওয়া যায় একটি বেডরুমে।
বেডরুমের মধ্যে রয়েছে একটি ছোট বাথটাব। বাথটাবের সামনে রয়েছে কাচের জানলা। যেখান থেকে সমুদ্র দেখা যায়।
ভিলায় রয়েছে একটি স্মার্ট বেডরুম। সেখানে স্মার্ট ভয়েস পদ্ধতির মাধ্যমে ঘরের আলোর তীব্রতা কমানো-বাড়ানো যায়।
স্মার্ট বে়ডরুমের সঙ্গেও রয়েছে একটি বাথটাব। তবে এই বাথটাবের আকার অনেকটাই বড়।
বিমানে যে ধরনের দরজা ব্যবহৃত হয় বেডরুমে রয়েছে সেই ধরনের দরজা। দরজা খুললেই তলায় দড়ি দিয়ে জাল চোখে পড়ে। অতিথিরা যেন জালের উপর বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন, সে কারণেই এই ব্যবস্থা।
ফেলিক্স জানিয়েছেন, ভিলায় থাকার ন্যূনতম খরচ ৭ হাজার ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ছ’লক্ষ টাকা।
বিমান-ভিলার ভিডিয়ো নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে আনন্দ লেখেন, ‘‘যাঁরা নিজেদের স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত করতে পারেন তাঁরা ভাগ্যবান হন। আমি বুঝতে পারছি না এখানে কোনও দিন থাকার কথা পরিকল্পনা করে আনন্দ পাব, নাকি জেট ল্যাগের ফলে যে ক্লান্তি হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করব।’’