যৌন চাহিদা পরিতৃপ্ত করতেই যৌনবৃত্তির সৃষ্টি। দিনের আলোয় নয়, পৃথিবীর নানা প্রান্তে লালবাতি এলাকায় ভিড় জমে রাতের অন্ধকারে। ‘সভ্য সমাজের’ ভ্রুকুটি এড়িয়ে যৌনকর্মীদের দ্বারস্থ হন অনেকেই।
যৌনপল্লিগুলিতে রাতের অন্ধকারে মৃদু আলোর তলায় চলে যৌনতার খেলা। অনেকেই অর্থের বিনিময়ে যৌনকর্মীদের মাঝে খুঁজে নেন সুখ।
কিন্তু এই যৌনতার উত্তেজনাই যদি ডেকে আনে মৃত্যু? যদি মিলনের মাঝে আচমকা থমকে যায় জীবনের গতি? তেমনই এক ঘটনার সাক্ষী থেকেছিল আফ্রিকা। বেশি দিন নয়, মাত্র বছর দু’য়েক আগে।
চার্লস মাজাওয়া ছিলেন পূর্ব আফ্রিকার মালাওয়ি প্রদেশের বাসিন্দা। ৩৫ বছরের এই যুবকের মৃত্যু ডেকে এনেছিল সঙ্গম। অতিরিক্ত উত্তেজনাই তাঁর কাল হয়েছিল। যৌনকর্মীর সঙ্গে সঙ্গমকালে মারা যান তিনি।
২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে চার্লসের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে। অস্বাভাবিক এবং অপ্রত্যাশিত এই মৃত্যু শোরগোল ফেলে দিয়েছিল আফ্রিকায়। এমনকি, আফ্রিকার বাইরেও খবরটি লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে।
ঠিক কী ঘটেছিল চার্লসের সঙ্গে? স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি ঘর ভাড়া করে এক যৌনকর্মীকে ডেকে সময় কাটাতে গিয়েছিলেন চার্লস। ভাড়া করা ঘরের বিছানায় তাঁরা যৌনতায় লিপ্ত হন।
কিন্তু সঙ্গম চলাকালীন বিছানায় আচমকা সংজ্ঞা হারান চার্লস। তাঁর সঙ্গিনী ওই যৌনকর্মী জানিয়েছিলেন, চার্লস উত্তেজনায় অত্যধিক মাত্রায় ঘামছিলেন।
চার্লস অজ্ঞান হয়ে গেলে তাঁর সঙ্গিনী প্রথমে বিমূঢ় হয়ে পড়েছিলেন। তিনি কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। কী থেকে এমনটা ঘটল, তা-ও তাঁরা অজানা ছিল।
শেষমেশ অন্য সহকর্মীদের ফোন করে পরিস্থিতির কথা জানান চার্লসের সঙ্গিনী। তাঁদের পরামর্শে তিনি পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ওই যুবককে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকেরা চার্লসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চার্লসের মৃতদেহটিকে পরীক্ষা করে দেখা হয়। বিশেষজ্ঞেরা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৃত্যুর আসল কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হন। তাঁরা জানান, চার্লসের মৃত্যু হয়েছে প্রবল যৌনসুখ বা অর্গ্যাজ়মে।
মাত্রাতিরিক্ত অর্গ্যাজ়ম চার্লসের শরীরে উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে দিয়েছিল। সঙ্গমকালে সে কারণেই তিনি মারাত্মক ঘেমে গিয়েছিলেন। পরীক্ষা করে দেখা যায়, অতিরিক্ত উত্তেজনায় যুবকের মস্তিষ্কের রক্তনালি ফেটে গিয়েছিল।
রক্তনালি ফেটে যাওয়ায় চার্লসের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তার পর আর বেশি ক্ষণ সজ্ঞানে থাকতে পারেননি যুবক। বিছানায় জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। পরে মৃত্যু হয় সেখানেই।
এর আগে সঙ্গমরত অবস্থায় আচমকা মৃত্যুর একাধিক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে মৃত্যুর কারণ হার্ট অ্যাটাক।
তবে অর্গ্যাজ়মের কারণে মৃত্যুর কথা আগে জানা যায়নি। চার্লসের পরিণতিতে তাই উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ, চার্লসের বয়সও খুব বেশি নয়। ফলে বয়সের ভার, দুর্বলতা সঙ্গমের ধকল নিতে পারেনি, এ ক্ষেত্রে খাটে না সেই যুক্তিও।
বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য বলেন, শরীরে অন্য কোনও দুর্বলতা, রোগ না থাকলে, সঙ্গমরত অবস্থায় এমন মৃত্যুর ঘটনা বেশ বিরল। আশঙ্কাও অনেক কম।