মাত্র দু’মিনিট। সেই সময়ের জন্য পৃথিবীর সব থেকে ধনী মানুষ হয়েছিলেন তিনি। ভেবেও ফেলেছিলেন, কোটি কোটি টাকা দিয়ে কী করবেন! সবেরই নেপথ্যে ছিল টাকা লেনদেনের অ্যাপ ‘পেপাল’-এর একটি ভুল।
২০১৩ সালের ঘটনা। পেনসিলভেনিয়ার বাসিন্দা ক্রিস রেনল্ড নিজের ‘পেপাল’-এর অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখছিলেন। তা করতে গিয়ে বিস্মিত হন তিনি।
অ্যাকাউন্টে থাকার কথা ছিল ১৪০ ডলার। রবিবারের হিসাবে ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১১ হাজার টাকা। কিন্তু ক্রিস দেখেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৯২ লক্ষ কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় পাঁচ হাজার কোটি কোটিটাকা।
সেই মুহূর্তে ক্রিস বিশ্বের সব থেকে ধনী ব্যক্তি ছিলেন। পাশাপাশি, আরও একটি নজির তৈরি করে ফেলেছিলেন তিনি। তাঁর আগে পৃথিবীতে কেউ এত টাকার মালিক হতে পারেননি।
প্রথমে ক্রিস ভেবেছিলেন, তিনি হয়তো কোনও লটারিতে ওই টাকা জিতেছেন। বা কারও টাকা তাঁর কাছে ভুল করে চলে এসেছে। ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট ফেসবুকেও পোস্ট করেন তিনি।
ফেসবুকেই এক জন জানিয়ে দেন, ওই বিপুল পরিমাণ টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে (ক্রেডিট হয়েছে)। এর আগে নিজের অ্যাকাউন্টে সর্বাধিক ১০০০ ডলার দেখেছিলেন ক্রিস। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৮০ হাজার টাকা।
নিজের পুরনো বিএমডব্লিউয়ের টায়ার বিক্রি করে ওই টাকা পেয়েছিলেন ক্রিস। যদিও তাঁর আনন্দ স্থায়ী হয়েছিল মাত্র দু’মিনিট। ওইটুকু সময়েই তাঁর অ্যাকাউন্টে ছিল ওই কোটি কোটি টাকা।
এর পর আবার ‘পেপাল’-এর অ্যাকাউন্টে ঢুকে তিনি দেখেন, সেখানে কোনও ডলার নেই। যদিও ওই সময়ের মধ্যে তাঁর মাথায় এসে গিয়েছিল অনেক পরিকল্পনা।
পরে যখন ভেবেছিলেন সেই সময়ের কথা, বার বার মনে হয়েছিল অত টাকা দিয়ে কী কী করতে পারতেন তিনি।
অবসর সময়ে গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রি করতেন ক্রিস। সেই করেই তাঁর রোজগার। কোটি কোটি টাকা হাতে পেলে কী করতেন তিনি? জবাবে জানিয়েছিলেন, তিনি দেশের ঋণ মিটিয়ে দিতেন।
এখানেই শেষ নয়। টাকা পেলে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ার বেসবল দল ‘ফিলিস’ কিনে নিতেন। তাতেই জীবনের বড় স্বপ্নপুরণ হত।
এই বেসবল দলের মূল্য প্রায় ২৫৮ কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা।
পরে ‘পেপাল’ বিবৃতি দিয়ে জানায়, তাদের তরফে একটি ভুল হয়েছিল। ক্রিস যে এটা বুঝেছেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।
সংস্থা এও জানিয়েছিল, ক্রিস চাইলে কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে তারা অর্থদান করবে। কত টাকা দান করবে, তা প্রকাশও করা হবে না। কিন্তু ক্রিস এই প্রস্তাব খারিজ করে দেন। জানান, বিষয়টিকে ঠাট্টা হিসাবেই দেখছেন তিনি।
পরে ‘পেপাল’-এর তরফে জানানো হয়, ওই বিপুল পরিমাণ টাকা পেয়ে ক্রিস যে দেশের ঋণ শোধ করার কথা ভেবেছিলেন, তা অনেককে অনুপ্রাণিত করবে। এ রকম গ্রাহক পেয়ে তারা খুশি।