ফোবর্সের বিচারে মালয়েশিয়ার ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় তাঁর নাম তৃতীয় স্থানে। তাঁর সম্পদের মোট পরিমাণ ভারতীয় মুদ্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।
আনন্দ কৃষ্ণণ মালয়েশিয়ার বাণিজ্য জগতের এক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। অসাধারণ ব্যবসায়িক দক্ষতা এবং জনহিতৈষীমূলক কাজের জন্য মালয়েশিয়া জুড়ে আনন্দ এক সুপরিচিত নাম।
নিজের যোগ্যতায় ধাপে ধাপে ব্যবসায়িক সফলতা অর্জন করে মালয়েশিয়ার ব্যবসায়িক জগতে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন আনন্দ।
তাঁর ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু হয় মালয়েশিয়ায় একটি পরামর্শদানকারী সংস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। পরে মাল্টিমিডিয়া সংস্থার হাত ধরে উত্থান এই ধনকুবেরের।
বর্তমানে তিনটি যোগাযোগ সম্পন্নকারী উপগ্রহের মালিকানা রয়েছে আনন্দ কৃষ্ণণের হাতে। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে ম্যাক্সিস কমিউনিকেশন, মিস্যাট ব্রডকাস্ট নেটওয়ার্ক সিস্টেম এবং এসইএস ওয়ার্ল্ড স্কাইস নামের তিনটি সংস্থার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মাল্টিমিডিয়ার জগতে পা রাখেন তিনি।
বর্তমানে টেলিযোগাযোগ ব্যবসার শীর্ষস্থানীয় নাম হিসাবে গণ্য করা হয় আনন্দ কৃষ্ণণকে। সফল ভাবে একটি মাল্টিমিডিয়া সাম্রাজ্য গড়ে তোলার পর বিনোদন ব্যবসার দিকে ঝুঁকেছিলেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ধনকুবের।
‘লাইভ এড কনসার্টের’ মাধ্যমে বিনোদন ব্যবসার জগতে পা দেন তিনি। ধীরে ধীরে এই জগতেও তিনি পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময়ে কৃষ্ণাণ আইরিশ গায়ক-গীতিকার বব গেলডফের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এই অনুষ্ঠান সাফল্য এনে দেয় কৃষ্ণাণকে।
আনন্দ কৃষ্ণন ১৯৩৮ সালে কুয়ালা লামপুরের ব্রিকফিল্ডসে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তাঁর পারিবারিক শিকড় রয়েছে শ্রীলঙ্কার জাফনায়।
কৃষ্ণণ অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হন এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি এক্সোয়েল ট্রেডিং নামে একটি সংস্থার মালিক। এই সংস্থা তেল ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
ভারতীয় মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা এয়ারসেলের মালিকানার কিছু অংশ ছিল কৃষ্ণণের সংস্থার হাতে।
কৃষ্ণণের মালিকানাধীন সংস্থা উসাহা টেগাসের মাধ্যমে তেল, টেলি যোগাযোগ ও গণমাধ্যমের ক্ষেত্রগুলিতে বড় বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে। এটিকেই তাঁর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের মেরুদণ্ড বলে ধরা হয়।
এত বড় ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের মালিকানা হাতে থাকলেও অতি সাধারণ জীবনযাপন করতে পছন্দ করেন কৃষ্ণণ। ব্যবসা ছাড়াও তাঁর নাম জড়িয়েছে নানা জনহিতকর কাজে। মালয়েশিয়ার সামাজিক উন্নতির জন্য তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
আনন্দ কৃষ্ণণের একমাত্র পুত্র ইরিপানি বৌদ্ধ ধর্মের অনুগামী। বাবার এত বড় সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার হওয়া সত্ত্বেও বৌদ্ধ ভিক্ষুর জীবন বেছে নিয়েছেন। যে ধর্মের অনুসারী হয়েছেন আনন্দ-পুত্র তার প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ ছিলেন শাক্য রাজবংশের রাজপুত্র। সিংহাসনের মোহ ত্যাগ করে যিনি নিজেই ভিক্ষুর জীবন বেছে নিয়েছিলেন।তিনি।