আফ্রিকার দেশ গ্যাম্বিয়ায় ৬৬টি শিশুমৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের ওষুধ প্রস্তুতকারী মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালস্ সংস্থার বিরুদ্ধে নির্দেশিকা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
এই সিরাপগুলি পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের কিডনি বিকল হওয়ার কারণ বলে জানা গিয়েছে। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, এই চারটি ওষুধের প্রতিটিতেই ডাইইথিলিন গ্লাইকল এবং ইথিলিন গ্লাইকল নামের দূষক পদার্থের মাত্রা গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি।এই পদার্থগুলি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণে শিশুদের শরীরে প্রবেশ করলে দেখা দিতে পারে পেটব্যথা, বমি, মূত্রত্যাগের সমস্যা-সহ কিডনির নানাবিধ সমস্যা।
প্রাথমিক তদন্তের পর মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি চারটি সিরাপ— প্রোমেথাজি়ন ওরাল সলিউশন, কফেক্সমালিন বেবি কাফ সিরাপ, মেকফ বেবি কাফ সিরাপ এবং মাগরিপ এন কোল্ড সিরাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে হু।
এই সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা ১৯৯০ সালের নভেম্বর মাসে। সংস্থার প্রধান দফতর নয়াদিল্লিতে।
ভারতে এই সংস্থার ওষুধ তৈরির দু’টি কারখানা রয়েছে। দু’টিই রয়েছে হরিয়ানায়।
হু সম্প্রতি সংস্থার বিরুদ্ধে নির্দেশিকা জারি করলেও এর আগে ২০১১ সালে মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের যাবতীয় ওষুধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভিয়েতনাম। সংস্থার তরফে যে ওষুধ তৈরি করা হয় তার মান খারাপ বলে অভিযোগ তোলে ভিয়েতনাম।
শুধু ভিয়েতনামই নয়, ভারতের চারটি রাজ্যেও এই সংস্থার বেশ কিছু ওষুধ নিষিদ্ধ।
২০০৮ সালে বিহার এই সংস্থা তৈরি এরিথ্রোমাইসিন স্টিয়ারেট ১২৫ মিলিগ্রাম সিরাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সিরাপের মান নিয়ে অভিযোগ তোলে রাজ্য।
মিথাইলএর্গোমেট্রিন ট্যাবলেটটি ভুয়ো বলে ২০১১ সালে এই ওষুধের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিহার।
তার ঠিক দু’বছর পর দ্রবীভূতকরণজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ায় মাসিপ্রো ট্যাবলেটটির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে গুজরাত।
গুণগত পরিমাণ কম থাকার অভিযোগে ২০২০ সালে সিপ্রোহেপ্টাডাইন হাইড্রোক্লোরাইড সিরাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জম্মু ও কাশ্মীর।
২০২১ সালে মেটফরমিন ১০০০ ট্যাবলেট, মেটফরমিন ৫০০ মিলিগ্রাম, ইসিপ্রিন, মাইকাল ডি ট্যাবলেট— এই চারটি ওষুধের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেরল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অভিযোগের আধ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু করে সিডিএসসিও, বলে জানিয়েছে কেন্দ্র সরকার। হরিয়ানার ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোলার’-এর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে,যে সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল সেই সংস্থাটি হরিয়ানার ‘স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোলার’-এরই লাইসেন্সপ্রাপ্ত। তবে, সিরাপগুলি সংস্থার তরফে শুধুমাত্র গ্যাম্বিয়াতেই পাঠানো হয়েছে বলে মনে করছে প্রশাসন।