কখনও গাড়ির সামনের আসনে বসে, কখনও ঘরের মধ্যেই মেয়ের সঙ্গে ভিডিয়ো বানিয়ে আপলোড করছেন নেটমাধ্যমে। এমনকি, মা-মেয়ে জুটিকে এখন মাঝেমধ্যেই ফোটোশ্যুট করতে দেখা যাচ্ছে।
১৯৯৭ সালে ‘পরদেশ’ ছবিতে শাহরুখ খানের বিপরীতে যে নায়িকাকে দেখে দর্শকরা স্তম্ভিত হয়েছিলেন, সম্প্রতি তাঁর কন্যা আবার যেন একই ভাবে অবাক করল ভক্তদের। ১৫ বছর বয়সি মহিমা-কন্যার কথা এখন লোকের মুখে মুখে।
এর আগেও বহু ‘স্টারকিড’কে নিয়ে মাতামাতি হয়েছে, তবে অভিনেত্রী মহিমা চৌধরীর মেয়ের সাম্প্রতিক কালের ছবির প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণের কারণ ভিন্ন। তার মুখের গড়ন ঠিক যেন মহিমার মতো।
মহিমার অনেক ভক্তই মন্তব্য করেছেন এই বিষয়ে। মা ও মেয়ের এ রকম সাদৃশ্য বলিউড জগতে বড় একটা দেখা যায়নি। কেউ বলছেন, ‘মহিমা কি মহিমা’। কেউ আবার বলছেন, মহিমার মেয়েকে দেখে মনে হচ্ছে যেন মায়ের ‘ফোটোকপি’।
২০১৩ সালে ববি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর একা হাতেই মেয়ে আরিয়ানাকে বড় করছেন মহিমা। মেয়েও যেন মা অন্তপ্রাণ। প্রিয় বন্ধুর মতোই সম্পর্ক তাঁর সঙ্গে।
মহিমা তাঁর মেয়ের সঙ্গে কাটানো বিভিন্ন মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে ভাগ করে নিচ্ছেন ভক্তদের সঙ্গে। আরিয়ানা যেন সৌন্দর্যের দিক দিয়ে ছাপিয়ে গিয়েছে মহিমাকেও।
সম্প্রতি দু’জনকে এক সঙ্গে একটি অনলাইন বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছে। অভিনয় জগতে শিশু-অভিনেতার কোনও চরিত্রে আরিয়ানাকে দেখা যাবে কি না, এই নিয়ে মুখ খোলেননি মহিমা।
নব্বইয়ের দশকে সাফল্যের চূড়ায় থাকা মহিমা এখন নিজেও সিনেমা জগৎ থেকে বহু দূরে। ২০১৬ সালে ‘ডার্ক চকোলেট’ নামে একটি বাংলা ছবিতে শেষ বারের মতো অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
২৩ বছর আগে এক ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনা মহিমার পেশাগত জীবনে প্রভাব ফেলে। ‘দিল কেয়া করে’ ছবির শ্যুটিং চলাকালীন বেঙ্গালুরুতে তাঁর গাড়ির সঙ্গে একটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। গুরুতর আহত হন তিনি। অস্ত্রোপচারের সময় তাঁর মুখে বিদ্ধ ৬৭টি কাচের টুকরো বের করা হয়।
তার পর সুস্থ হয়ে শ্যুটিংয়ের কাজে ফিরে এলেও তাঁর আত্মবিশ্বাস পুরোপুরি ভেঙে যায়। এক সাক্ষাৎকারে মহিমা জানিয়েছেন, তখন তিনি কেমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন।
সাংবাদিকরা তাঁকে ‘স্কারফেস’ (অর্থাৎ যাঁর মুখ গভীর ক্ষতচিহ্নে ভর্তি) বলে ডাকাডাকি করতেন। এর ফলে তিনি মানসিক ভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।
তবে বলিউডের রোশনাই থেকে নিজেকে সরিয়ে এক ভিন্ন জগৎ তৈরি করেছেন মহিমা। এই জগৎ তাঁর মেয়েকে ঘিরে। ছবিতে অভিনয় না করলেও তিনি ফোটোশ্যুট এবং ছোটখাটো সংস্থার জন্য অনলাইন বিজ্ঞাপনে অবতীর্ণ হন।
বর্তমানে মুম্বইয়ে মেয়ের সঙ্গেই থাকেন মহিমা। অভিনেত্রী হিসাবে নয়, শুধুমাত্র ‘শিল্পী’ হিসাবেই নিজের পরিচয় দেন তিনি। দিনের বেশির ভাগ সময় কাটান আরিয়ানার সঙ্গে। মা ও মেয়ের এমন বন্ধুত্ব দেখে মুগ্ধ ভক্তরা।