রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ। দেশের অন্যতম সেরা শিল্পগোষ্ঠী। তিল তিল করে এই শিল্পকে গড়ে তুলেছিলেন ধীরুভাই অম্বানী। সেই ব্যবসা পরে এগিয়ে নিয়ে যান তাঁর দুই ছেলে মুকেশ এবং অনিল অম্বানী।
বর্তমানে দেশের অন্যতম সেরা শিল্পপতি হলেও এক সময় খুব সাধারণ জীবনযাপন ছিল অম্বানী পরিবারের। কিন্তু ধীরুভাইয়ের কিছু করে দেখানোর জেদের কারণেই রিলায়্যান্সের বিশাল সাম্রাজ্যের উত্থান।
অনিল বা মুকেশ অম্বানীরা এখন বিলাসবহুল বাড়িতে থাকলেও, বিলাসবহুল জীবনে অভ্যস্ত হলেও একটা সময় তাঁরা দু’কামরার বাড়িতে থাকতেন।
১৯৬০-৭০ সালে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবসা যখন বাড়তে শুরু করেছে, সে সময় পরিবারকে নিয়ে মুম্বইয়ের ভুলেশ্বরের জয় হিন্দ স্টেটে থাকতেন। সেখানে তাঁদের থাকার জন্য মাত্র দু’টি ঘর ছিল। সেই জয় হিন্দ স্টেট বর্তমানে বেণীলাল হাউস নামে পরিচিত।
ধীরুভাইয়ের ব্যবসা যখন আরও বড় হল তখন তিনি পরিবারকে নিয়ে কার্মিকাল রোডের ঊষাকিরণ সোসাইটিতে ফ্ল্যাট কেনেন। সেখানেই থাকা শুরু করেন।
এর পর অম্বানী পরিবারের নতুন ঠিকানা হয় কোলাবার সি উইন্ড নামে একটি অ্যাপার্টমেন্ট। ২০০২-এ ধীরুভাইয়ের মৃত্যু হয়। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর পরই পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে মুকেশ এবং অনিলের মধ্যে একটা বিবাদ শুরু হয়।
২০০৫-এ দুই ভাই তাঁদের মায়ের উপস্থিতিতে ব্যবসা ভাগাভাগি করে নেন। তেল, গ্যাস, পেট্রোরসায়ন এবং তৈল শোধন সংক্রান্ত ব্যবসার দায়িত্ব নেন মুকেশ। অন্য দিকে, অনিলের হাতে যায় নির্মাণ, টেলিযোগাযোগ এবং শক্তি উৎপাদন।
বিভিন্ন সূত্রের দাবি, দুই ভাইয়ের মধ্যে ব্যবসা নিয়ে বিবাদ শুরু হতেই কোলাবার অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মুকেশ অম্বানী।
২০১০-এ বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল বাড়ি ‘অ্যান্টিলিয়া’র নির্মাণ করেন মুকেশ। ২৭ তলার সেই বাড়িতে ২০১৩ থেকে থাকা শুরু করেন মুকেশ ও তাঁর পরিবার।
২০১০-এ অ্যান্টিলিয়া তৈরি সম্পূর্ণ হলেও কেন তিনি ২০১৩ থেকে থাকা শুরু করেছেন তার পিছনে বাস্তুকেই মূল কারণ হিসাবে দাবি করা হয়েছে অনেক প্রতিবেদনে।
৪ লক্ষ বর্গফুটের উপর গড়ে উঠেছে অ্যান্টিলিয়া। এই বাড়িতে রয়েছে তিনটি হেলিপ্যাড, ১৬৮টি গ্যারেজ, একটি বলরুম, দ্রুত গতিসম্পন্ন ৯টি লিফ্ট, ৫০ আসনের থিয়েটার, সুইমিং পুল, স্পা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মন্দির, স্নো রুম ইত্যাদি।
২০২১-এর নভেম্বরে লন্ডনের বাকিংহামশায়ারের স্টোক পার্কে ৫৯২ কোটি টাকা দিয়ে আরও একটি বাড়ি কেনেন মুকেশ অম্বানী।
নতুন ওই প্রাসাদে রয়েছে ৪৯টি ঘর, একটি ছোট হাসপাতাল, পাঁচতারা মানের হোটেল এবং তিনটি রেস্তরাঁ। এ ছাড়াও রয়েছে ১৩টি টেনিস কোর্ট এবং ২৭ হোলের গল্ফ কোর্স। লন্ডন শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের ৯০০ বছরের প্রাচীন এই প্রাসাদ আগে বসবাসের জন্য ব্যবহৃত হলেও ১৯০৮ সাল থেকে কান্ট্রি ক্লাব হিসেবে ব্যবহৃত হত।