Patanjali Products

‘শ্বাসরি বটি’ থেকে ‘শক্তিবর্ধক’, ১৪টি পণ্য বিক্রি বন্ধ করল রামদেবের পতঞ্জলি, প্রকাশ্যে তালিকা

তালিকায় প্রথমেই রয়েছে পতঞ্জলির ‘শ্বাসরি গোল্ড’ ক্যাপসুল। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস এবং ফুসফুসের সমস্যার সমাধানের দাবি তুলে এই পণ্য বিক্রি করত পতঞ্জলি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪ ১২:০২
Share:
০১ ২০

যোগগুরু রামদেবের পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থার ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, গত এপ্রিলে উত্তরাখণ্ড সরকারের লাইসেন্সিং বিভাগ পতঞ্জলির যে ১৪টি পণ্য উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল, অবিলম্বে ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম, সমাজমাধ্যম-সহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে সেগুলির বিজ্ঞাপন মুছে ফেলতে হবে।

০২ ২০

ওই সব বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার সংক্রান্ত পুরো বিষয়টির নজরদারির ভার ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএমএ)-কে দিয়েছে বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতাকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, পতঞ্জলির বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল আইএমএ।

Advertisement
০৩ ২০

এই মামলায় পতঞ্জলির আইনজীবী মুকুল রোহতগি মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বিজ্ঞাপনগুলি ডিজিটাল মাধ্যম থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

০৪ ২০

পাশাপাশি, যোগগুরুর পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ লিমিটেড মঙ্গলবার জানিয়ে দিয়েছে, উত্তরাখণ্ড সরকারের লাইসেন্সিং বিভাগের তরফে ওই ১৪টি পণ্যের উৎপাদন লাইসেন্স স্থগিত করার পরে তারা ওই পণ্যগুলির বিক্রি বন্ধ করেছে। পাশাপাশি, দেশের ৫,৬০৬টি দোকানকে ওই পণ্য ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।

০৫ ২০

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক পতঞ্জলির কোন ১৪টি পণ্যের লাইসেন্স বাতিল হয়েছে।

০৬ ২০

এই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে পতঞ্জলির ‘শ্বাসরি গোল্ড’ ক্যাপসুল। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস এবং ফুসফুসের সমস্যার সমাধানের দাবি তুলে এই পণ্য বিক্রি করত পতঞ্জলি।

০৭ ২০

তালিকায় এর পরেই রয়েছে ‘শ্বাসরি বটি’ নামে একটি ট্যাবলেট। এই পণ্যও কাশির নিরাময় করে বলে দাবি করা হত।

০৮ ২০

পাশাপাশি, বাতিল করা হয়েছে ‘ব্রঙ্কোম’ বলে একটি পণ্যের লাইসেন্স।

০৯ ২০

এই তালিকার চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে, ‘শ্বাসরি প্রবাহী’ এবং ‘শ্বাসরি অবলেহ’ নামে দু’টি পণ্য।

১০ ২০

তালিকায় কয়েছে পতঞ্জলির ‘শক্তিবর্ধক’ পণ্য ‘মুক্তবতী এক্সট্রা পাওয়ার’ এবং হৃদ্‌যন্ত্রের প্রদাহ কমানোর দাবি করে বিক্রি করা পণ্য ‘লিপিডম’।

১১ ২০

‘বিপি গ্রিট’ নামে একটি ট্যাবলেটও রয়েছে তালিকায়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে বলে দাবি পতঞ্জলির। ‘মধুগ্রিট’ নামে একটি ট্যাবলেটেরও লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। পতঞ্জলির দাবি ছিল, উচ্চ রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি এই পণ্য রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে।

১২ ২০

পতঞ্জলির ‘মধুনাশিনীবটি এক্সট্রা পাওয়ার’-এর লাইসেন্সও রদ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বাতিল করা হয়েছে ‘লিভামৃত অ্যাডভান্স’, ‘লিভোগ্রিট’ নামে দু’টি ট্যাবলেটের লাইসেন্স।

১৩ ২০

বাতিলের তালিকায় রয়েছে ‘আইগ্রিট গোল্ড’ এবং ‘পতঞ্জলি দৃষ্টি আই ড্রপ’। এই দু’টি পণ্য চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখার দাবি নিয়ে বিক্রি করা হত।

১৪ ২০

উত্তরাখণ্ডের রাজ্য লাইসেন্স কর্তৃপক্ষ একটি হলফনামায় জানিয়েছিল, ‘ড্রাগস অ্যান্ড ম্যাজিক রেমেডিজ় (আপত্তিকর বিজ্ঞাপন)’ আইন-এর বার বার লঙ্ঘনের কারণেই ওই পণ্যগুলির লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১৫ ২০

গত বছরের নভেম্বরে পতঞ্জলিকে বিভিন্ন রোগের প্রতিকার হিসাবে নিজেদের ওষুধ সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ প্রচার করার বিষয়ে সতর্ক করেছিল শীর্ষ আদালত। জরিমানা হতে পারে বলেও মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছিল।

১৬ ২০

সেই মামলাতেই চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রের নিন্দা করে সুপ্রিম কোর্ট। মামলার শুনানি চলাকালীন পর্যবেক্ষণে বলা হয়, এই ধরনের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গোটা দেশকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ‘‘সরকার চোখ বন্ধ করে বসে আছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’

১৭ ২০

২০২০ সালের ২৩ জুন প্রথম বার করোনিল কিট বাজারে এনেছিল পতঞ্জলি। ‘করোনিল’ এবং ‘শ্বাসারি বটি’ নামে দু’ধরনের ট্যাবলেট এবং ‘অণু তৈল’ নামের ২০ মিলিলিটারের একটি তেলের শিশি নিয়ে তৈরি ওই কিটের দাম রাখা হয়েছিল ৫৪৫ টাকা।

১৮ ২০

চাইলে আলাদা ভাবে ট্যাবলেট এবং তেল কেনা যাবে বলেও জানানো হয়েছিল। তার পর ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২৩ লক্ষ ৫৪ হাজার করোনিল কিট বিক্রি হয়েছে বলে সংস্থার তরফে বিজ্ঞাপনে জানানো হয়েছিল।

১৯ ২০

সেই বিজ্ঞাপন নিয়ে আপত্তি জানিয়ে রামদেবের সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল আইএমএ। আইএমএ-র অভিযোগ ছিল, পতঞ্জলির বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা এবং চিকিৎসককে অসম্মান করা হয়েছে।

২০ ২০

বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগও আনা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, কোভিড প্রতিরোধী না-হওয়া সত্ত্বেও শুধু করোনিল কিট বিক্রি করেই আড়াইশো কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছিল রামদেবের পতঞ্জলি। আর তার জন্য ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ বিজ্ঞাপনী প্রচার চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল আইএমএ-র। সেই মামলার জেরে পতঞ্জলির ১৪টি পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement