মোবাইল নেটওয়ার্কের ব্যবসায় ঢুকে প্রতিযোগীদের বেহাল করে দিয়েছিলেন মুকেশ অম্বানী। এবার তিনি নামছেন আপ্যায়নের ব্যবসায়।
তেল, টেলিকম, টেক্সটাইলের ব্যবসায়ী মুকেশ তাঁর সাম্রাজ্যের গণ্ডি সম্প্রতি কিছুটা বাড়িয়েছেন। নতুন বছরের শুরুতেই দখল করেছেন নতুন সম্পদ।
নিউ ইয়র্কের বিলাসবহুল হোটেল ম্যান্ডারিন ওরিয়েন্টাল ২৭ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে কিনে নিয়েছে রিল্যায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। ভারতীয় মুদ্রায় কত খরচ হয়েছে শুনলে তাক লেগে যেতে পারে। নতুন হোটেল কিনতে ২০০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করেছেন অম্বানি।
নিউ ইয়র্কের হাডসন নদীর কাছেই সেন্ট্রাল পার্কের কলম্বিয়াল সার্কেলে এই হোটেল। তার দখল নিয়েই মুকেশ চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন আপ্যায়ন দুনিয়ার অন্যতম সেরা ব্যবসায়ী টাটা গোষ্ঠীকে।
নিউ ইয়র্কর সেরা বিলাসবহুল হোটেলগুলির মধ্যে অন্যতম টাটার তাজ হোটেল। মুকেশ যে হোটেল কিনেছেন, সেখান থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই রয়েছে নিউ ইয়র্কের তাজ।
সূত্রের খবর, মুকেশ ইতিমধ্যেই ম্যান্ডারিনের আগের সমস্ত ধার দেনা মিটিয়ে দিয়েছেন এবং নতুন করে শুরু করার পরিকল্পনা করেছেন হোটেলটিকে।
ম্যান্ডারিন হোটেলের দাম ছিল ৯.৮ কোটি মার্কিন ডলার। তবে তার দেনার অঙ্ক ছাড়িয়েছিল সাড়ে ১১ কোটি মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। এ ছাড়া হোটেলের আরও বেশ কিছু রদবদল সমেত মোট ২৭ কোটি মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে মুকেশের।
যাঁরা এই হোটেলে এসেছেন তাঁরা বলেন, ম্যান্ডারিনের বিশেষত্ব হল– এই হোটেল বিলাসিতার শেষ কথা বলে। ২৪৮টি ঘর। তার প্রত্যেকটির সাজসজ্জা থেকে চুঁইয়ে পড়ে বৈভব।
অতিথিদের কী করে যত্নে রাখতে হয়, তা নাকি ম্যান্ডারিন ওরিয়েন্টালের কাছে শিক্ষণীয়। সমৃদ্ধি এখানে কথা বলে। লক্ষ্মীর বরপুত্র মুকেশের স্পর্শে তা আগামী দিনে আরও উচ্চকিত হবে বলে অনুমান।
অ্তিথিদের জন্য সেরা খাবার থেকে শুরু করে সেরা পানীয়, সবই রয়েছে ম্যান্ডারিনের ভাঁড়ারে। তবে এঁদের বিশেষত্ব হল এখানে অতিথিদের জন্য এমন সব খাবার তৈরি করা হয়, যা সচরাচর দেখা যায় না।
১৪ হাজার ৫০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে বিস্তৃত শুধু ম্যান্ডারিন ওরিয়েন্টালের স্পা এবং ফিটনেস সেন্টার।
সেখানে আলাদা একটি সাঁতারের পুলও রয়েছে। ৭৫ ফুট দীর্ঘ ওই ল্যাপ পুল শুধু শারীরিক কসরৎ করার জন্য। এ ছাড়া স্নানের আলাদা পুল তো রয়েইছে।
আছে অতিথিদের মনোরঞ্জনের সব রকম ব্যবস্থা। ডাইনিং লাউঞ্জ এবং বার।
এ ছাড়়া ম্যান্ডারিনের প্রতিটি ঘর থেকই সেন্ট্রাল পার্ক, হাডসন নদী অথবা নিউ ইয়র্কের দিগন্তরেখার দৃশ্য দেখা যায়।
হলিউডের তারকা থেকে শুরু করে শিল্পপতি, ধনকুবেরদের এই হোটেলে আকছার যাওয়া আসা।
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের বিখ্যাত সব জায়গা ব্রডওয়ে থিয়েটার, লিঙ্কন সেন্টার, সেন্ট্রাল পার্ক এই হোটেল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে।
এই হোটেলে এক রাত থাকার ন্যূনতম খরচ ভারতীয় মুদ্রায় ৫৫ হাজার টাকা। সবচেয়ে দামি ঘরটিতে এক রাত থাকতে খরচ একদিনে ১১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।
তেল, টেলিকম ব্যবসার সম্রাট মুকেশ। এ বার নামছেন হোটেল ব্যবসায়। আগামী দিনে আপ্যায়ন জগতেও কি তিনি হিমালয় ছোঁবেন। দেখা যাক...