২৮ বছর বয়সে অভিনয়জগতে পা রেখেছেন রজত বেদী। সাধারণত স্বল্পদৈর্ঘ্যের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। টানা পাঁচ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার পর নিজের পরিচিতি গ়ড়ে তুলেছিলেন তিনি।
কিন্তু সাফল্যের সিঁড়িতে চড়তে পারেননি রজত। বরং ইন্ডাস্ট্রির ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন অভিনেতা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেন তিনি।
২০০৩ সালে রাকেশ রোশনের প্রযোজনায় এবং পরিচালনায় মুক্তি পেয়েছিল ‘কোই...মিল গয়া’ ছবিটি। হৃতিক রোশন, প্রীতি জ়িন্টা এবং রেখা অভিনীত এই ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন রজত।
রজত ভেবেছিলেন ‘কোই...মিল গয়া’ ছবিতে রাজ সাক্সেনার চরিত্রে অভিনয় করার পর আর কেরিয়ারে পিছন ফিরে তাকাতে হবে না তাঁকে। কিন্তু বাস্তবে ঘটল তার বিপরীত।
‘কোই...মিল গয়া’ ছবি মুক্তির পর রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও সাফল্যের সেই স্বাদ বেশি দিন স্থায়ী ছিল না। বড় চরিত্রে কাজ না পাওয়ায় মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। বলিপাড়া ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন রজত।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের অন্ধকার দিকের কথা ভাগ করে নিয়েছেন রজত। বলি অভিনেতা মুকেশ খন্নাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, হিন্দি ফিল্মজগৎ ছেড়ে কানাডায় গিয়ে নতুন জীবন গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
রজতের দাবি, ‘কোই...মিল গয়া’ ছবিতে হৃতিক এবং প্রীতির সঙ্গে বহু দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন তিনি। কাটছাঁট পর্ব শুরুর আগেও রজত জানতেন যে তাঁর দৃশ্যগুলি রাখা হবে। কিন্তু অভিনেতার স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যায়।
‘কোই...মিল গয়া’ ছবিতে কাঁচি চালানোর পর তা দেখানো হয় অভিনেতাদের। তা দেখে চমকে যান রজত। অভিনেতার দাবি, ছবি থেকে তাঁর বহু দৃশ্য না জানিয়েই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।
শুধু দৃশ্যে কাঁচি চালানোই নয়, ছবির প্রচার থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছিল রজতকে। ছবির প্রচারে কোথাও যাওয়া হলে নাকি ডাক পড়ত না তাঁর।
রজত সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘অভিনেতা হিসাবে আমারও কিছু চাওয়ার ছিল। কিন্তু আমি খুব আশাহত হতাম। খারাপ লাগত আমার।’’
‘কোই...মিল গয়া’র পাশাপাশি সুরেশ কৃষ্ণ পরিচালিত ‘রকি’ ছবি থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছিল রজতের বহু দৃশ্য। সেই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন জায়েদ খান।
বার বার দৃশ্য কেটে বাদ দেওয়ার ঘটনায় মুষড়ে পড়েছিলেন রজত। ধীরে ধীরে কাজ কমতে থাকে তাঁর। একসময়ে সংসার খরচ কী ভাবে চালাবেন বুঝতে পারছিলেন না তিনি।
রজত জানান, সানি দেওলের সঙ্গে একটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। সেই ছবি থেকে দৃশ্য বাদ না পড়লেও অন্য সমস্যার মুখে পড়েছিলেন রজত।
সানি অভিনীত ছবিতে অভিনয়ের জন্য উপযুক্ত পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছিল রজতকে। কিন্তু পুরো টাকাটাই চেকের মাধ্যমে দেওয়া হয়।
বহু দিন পর বড় অঙ্কের টাকার চেক পেয়ে খুশি হয়েছিলেন রজত। সঙ্গে সঙ্গে চেক ভাঙিয়ে টাকা তুলতে ব্যাঙ্কে যান তিনি। কিন্তু তাঁর চেক বাউন্স হয়ে যায়। শত চেষ্টা করেও সেই টাকা পাননি তিনি।
রজত বলেন, ‘জনপ্রিয়তা এক জায়গায়। কিন্তু টাকাপয়সা অন্য জায়গায়। আমার বন্ধুবান্ধব সকলে উচ্চবিত্ত ছিলেন সে সময়। ২০০০ কোটি টাকার ব্যবসা সামলাতেন এক বন্ধু। আর আমার সংসার চালানোর ক্ষমতা ছিল না।’’
মানসিক অবসাদ ধীরে ধীরে ঘিরে ধরে রজতকে। বর্তমানে হিন্দি ছবির পাশাপাশি দক্ষিণী ছবিতেও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।