বলিউডের নায়িকারা কি পরস্পরের বন্ধু হতে পারেন! রেকর্ড বলছে পারেন না। দু’জন নায়িকা সমসাময়িক এবং সফল হলে তো নয়ই। অন্তত তেমন কোনও উদাহরণ আজ পর্যন্ত দেখেনি বলিউড। তবে এই বলিউডেরই দুই নায়িকা না কি এক পুরস্কারের মঞ্চে ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ব্যারিকেড গড়েছিলেন!
ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে ইদানিং নায়িকাদের সদলবল ছবি চোখে পড়ে। সেই সব ছবিতে গলায় গলায় বন্ধুত্বও দেখা যায়। তবে বলিউড পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, এ সবই নাকি ‘লোক দেখানো’। সময় বিশেষে গলায় গলায় ভাব ভুলে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করতে বিন্দুমাত্র সময় নেন না এই নায়িকারা।
পুরস্কার মঞ্চের ওই দুই নায়িকাও ঝগড়ায় জড়িয়েছিলেন। ছবির শ্যুটিংয়ে সহ অভিনেত্রীকে কালো বেড়াল বলে কটাক্ষ করেছিলেন অন্য জন। সেটাই ছিল বলিউডে তাঁদের প্রথম এবং শেষ ছবি।
‘কালো বিড়াল’ বিতর্ক ২০০১ সালে রীতিমতো হইচই ফেলেছিল রূপোলি দুনিয়ায়। শোনা যায়, রাগের মাথায় এক জন অন্য জনকে থাপ্পড়ও কষিয়েছিলেন। এই দুই নায়িকার কারা? এক জনের নাম করিনা কপূর। অন্য জন বিপাশা বসু।
বলিউডে দু’জনের ঝগড়া মারাত্মক আকার নিয়েছিল এক সময়। নিন্দকেরা বলেন, শালীনতা আর পেশাদার সৌজন্যবোধের সীমা লঙ্ঘন করে কুৎসিত পর্যায়ে পৌছেছিল দুই অভিনেত্রীর লড়াই।
ঝগড়ার শুরু হয়েছিল ‘আজনবি’ ছবির সেটে। বলিউডে বিপাশার প্রথম ছবি ‘আজনবি’। ছবিতে তাঁর সহ অভিনেত্রী ছিলেন করিনা। দুই নায়িকার ঝগড়া হয়েছিল তাঁদের পোশাকশিল্পীকে নিয়ে।
করিনার ব্যক্তিগত পোশাকশিল্পী নাকি তাঁর অনুমতি না নিয়েই বিপাশাকে তাঁর পোশাকের ব্যাপারে সাহায্য করেছিলেন। তাতে করিনা রেগে যান। দু’জনের তুমুল ঝগড়া হয়। করিনা প্রকাশ্যে চড় মারেন বিপাশাকে। বলিউডে নবাগতা বাঙালি নায়িকাও না কি পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েননি।
নায়িকাদের মনমালিন্য প্রকাশ্যে চলে আসে বিপাশার দেওয়া সাক্ষাৎকারে। ২০০১ সালে ওই সাক্ষাৎকারে বিপাশা বলেছিলেন, ‘‘আমার কোনও সমস্যা ছিল না। ওরই (করিনার) পোশাকশিল্পীর সঙ্গে সমস্যা হয়েছিল। এর মধ্যে আমায় কেন টানা হল জানি না।’’ তবে একই সঙ্গে বিপাশা জানিয়েছিলেন, ভবিষ্যতে করিনার সঙ্গে আর কখনও ছবি করবেন না তিনি।
কারণ জানতে চাওয়া হলে নায়িকা বলেছিলেন, ‘‘ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল না হলে পর্দায় তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। ওঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত স্তরে কথাবার্তা নেই। তাই ভবিষ্যতে আমরা কখনও একসঙ্গে ছবি করব বলে মনে হয় না।’’
বিপাশাকে এই মন্তব্যের জবাব দিতে দেরি করেননি করিনাও। ২০০২-এ একটি সাক্ষাৎকারে বেবো বলেন, ‘‘চার পাতার সাক্ষাৎকারের তিন পাতা জুড়ে আমার কথাই বলে গিয়েছে (বিপাশা)। আমার মনে হয়, ওর নিজের কাজ সম্পর্কে বলার কিছু নেই। ওর খ্যাতির একমাত্র কারণ আমার সঙ্গে ঝগড়া। তাই এই নিয়েই কথা বলেছে।’’
এমনই সেই ঝগড়ার যে টানা ১৩ বছর মুখোমুখি হননি করিনা-বিপাশা। ২০১৪ সালে তাঁদের একসঙ্গে দেখা যায় এক মঞ্চে। সেখানেই ঘটনাটি ঘটে। ছবিশিকারিদের কাছে ধরা পড়ে যান দু’জনে।
পুরস্কারের মঞ্চে হঠাৎই দেখা যায় করিনার ঠোঁট ছুঁয়েছে বিপাশার ঠোঁট। বিপাশার হাত করিনার কাঁধে। চোখ বুঝেছেন করিনাও। মোক্ষম মুহূর্তটি ধরা পড়ে যায় ক্যামেরায়। ছবিটি ভাইরালও হয়ে যায়।
দুই নায়িকার ভক্তরা প্রশ্ন তোলেন তা হলে কি ১৩ বছরের বরফ গলল! জবাব আসে পরে। জানা যায়, মঞ্চে বিপাশাকে সৌজন্য দেখাতে গালে গাল ছুঁইয়ে অভিনন্দন জানাতে এসেছিলেন করিনা। দুর্ঘটনাবশত গালের বদলে ঠোঁট ছুয়ে যায় দু’জনের।
বিপাশা-করিনার ঘনিষ্ঠরা অবশ্য বলেছিলেন, দু’জনের ঝগড়া থামানোর ইঙ্গিত ছিল ওই ঘটনা। পুরনো ঘটনা ভুলে এ বার দু’জনেরই এগিয়ে যাওয়ার সময়।