বরফে ঢাকা পাহাড়। অভিনেতার পরনে শীতবস্ত্র, গলায় স্কার্ফ। অভিনেত্রীর পরনে কিন্তু শিফনের শাড়ি। বলিউডের রোম্যান্টিক ঘরানার ছবিতে এমন দৃশ্য থাকা যেন বাধ্যতামূলক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে রোম্যান্টিক ঘরানার ছবি মুক্তি পেলেও এমন দৃশ্য যেন হারিয়ে গিয়েছিল বলিউডি ছবি থেকে। সম্প্রতি বলি পরিচালক কর্ণ জোহর আবার সেই স্বাদ ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন তাঁর আসন্ন ছবি ‘রকি অওর রানি কি প্রেম কহানি’র গানের মাধ্যমে।
কর্ণ পরিচালিত ‘রকি অওর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবির প্রথম ঝলক মুক্তির পর হইচই পড়েছিল সমাজমাধ্যমে। কর্ণ যে এই ছবির মাধ্যমে আবার বলিউডি বাণিজ্যিক রোম্যান্টিক ঘরানার স্বাদ ফিরিয়ে আনছেন তা স্পষ্ট। কিন্তু ছবির গান মুক্তির তারিখ ঘোষণা করার সময় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন কর্ণ।
চলতি বছর বিনোদনজগতে ২৫ বছর পূর্ণ করলেন কর্ণ। ‘রকি অওর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবির মাধ্যমে তারই উদ্যাপন করছেন তিনি। রণবীর সিংহ, আলিয়া ভট্ট, ধর্মেন্দ্র, শাবানা আজমি, জয়া বচ্চনের মতো বলিপাড়ার নক্ষত্রেরা এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে টলি অভিনেতা টোটা রায়চৌধুরীকেও।
সম্প্রতি ‘রকি অওর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবির একটি গান মুক্তি পেয়েছে। অরিজিৎ সিংহ এবং শ্রেয়া ঘোষালের কণ্ঠে রয়েছে ‘তুম কয়া মিলে’ গানটি। রণবীর এবং আলিয়া জুটি বেঁধে এই গানের দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। গানের দৃশ্যের ঝলক সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিজের ‘ড্রিম টিম’কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কর্ণ। তার পরেই বিপাকে পড়েছেন তিনি।
‘ড্রিম টিম’-এ রণবীর, আলিয়ার পাশাপাশি গানের সঙ্গে যুক্ত অরিজিৎ, প্রীতম এবং অমিতাভ ভট্টাচার্যকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কর্ণ।
কর্ণের ‘ড্রিম টিম’-এর তালিকায় ছিল পোশাকশিল্পী মণীশ মলহোত্রের নামও। বলিপাড়া সূত্রে খবর, গানের দৃশ্যে মণীশের পোশাক পরেই শুট করেছেন রণবীর এবং আলিয়া।
কর্ণের সৌজন্যমূলক পোস্টের পরেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। অরিজিতের সঙ্গে ডুয়েট গেয়েছেন শ্রেয়া। অথচ পরিচালকের ‘ড্রিম টিম’থেকে বাদ পড়ে গেলেন নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী।
শ্রেয়া এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও প্রসঙ্গটি সকলের নজরে আসে। কানাঘুষো শোনা যায়, এক টুইটার ব্যবহারকারী কর্ণের ‘ড্রিম টিম’ সংক্রান্ত পোস্টটি ভাগ করে লেখেন, ‘‘শ্রেয়া এই গানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ গেয়েছেন। তাঁকে অগ্রাধিকার না দেওয়ার বিষয়টি আমার পছন্দ হয়নি।’’ টুইটার ব্যবহারকারীর এই পোস্টটি নেটপাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
শ্রেয়ার অনুরাগীরা সমাজমাধ্যমেই কর্ণকে কটাক্ষ করতে শুরু করেন। শ্রেয়ার নাম কেন উল্লেখ করেননি সে প্রশ্নও করেন অনেকে। গায়িকার অনুরাগীদের একাংশের দাবি, শ্রেয়ার নাম উল্লেখ করা বা না করাতে গায়িকার কোনও ক্ষতি হবে না। উনি যে বলিউডের প্রথম সারির গায়িকা তা নিয়ে শ্রোতাদের সন্দেহ নেই বলেই দাবি করেন অনুরাগীরা।
কানাঘুষো শোনা যায়, টুইটার ব্যবহারকারীর পোস্টটি আবার রিটুইট করেন শ্রেয়া। পরে নাকি আবার সেই টুইটটি মুছেও ফেলেন সমাজমাধ্যম থেকে। নেটব্যবহারকারীদের একাংশ স্ক্রিনশট নিয়ে সমাজমাধ্যমে ভাগও করেন। যদিও এই স্ক্রিনশটটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
গান মুক্তি পাওয়ার পর শ্রেয়া টুইট করে লেখেন, ‘‘বহু দিনের অপেক্ষার পর এমন গানের মাধ্যমে ফিরে আসা। এ যেন কর্ণ জোহরের ধরন যা বলিপাড়া এত দিন মিস্ করেছিল।’’
অরিজিতের গায়কিরও প্রশংসা করেন শ্রেয়া। টুইট করে শ্রেয়া লেখেন, ‘‘অরিজিৎ, হৃদয় বিগলিত কণ্ঠে কী সুন্দর গেয়েছ!’’
গান মুক্তির পর আলিয়ার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন কর্ণ। কনকনে ঠান্ডার মধ্যে শিফন শাড়ি পরে আলিয়াকে শুট করানোর জন্য অভিনেত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
কর্ণ সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানান, সন্তানের জন্মের পর প্রথম শুটিং করেছেন আলিয়া। তা-ও ঠান্ডায় শিফন শাড়ি পরে অভিনয় করতে হয়েছে। শুট চলাকালীন কর্ণ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কর্ণের দাবি, আলিয়াকে ঠান্ডার মধ্যে গরমের পোশাক পরতে দেননি বলেই সেই কর্মের ফল পেয়েছেন তিনি।
গানের মাধ্যমে বলিপাড়ার জনপ্রিয় ছবি নির্মাতা যশ চোপড়াকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কর্ণ। হিন্দি ছবিতে এমন দৃশ্যের চল শুরু করেছিলেন যশ। তাঁর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই কর্ণ এই গানটি তৈরি করেছেন বলে জানান তিনি।