Jack the Ripper

খোঁজ মিলল ‘জ্যাক দ্য রিপারের’? যৌনকর্মীদের খুনিকে কি চিনিয়ে দিল পুলিশকর্তার বেতের লাঠি?

লন্ডনের রাস্তায় একে একে ৫ যৌনকর্মীর ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ মিলেছিল। সে প্রায় ১৩৪ বছর আগেকার কথা। কে বা কারা ওই যৌনকর্মীদের খুনি? সে রহস্যের সমাধান আজও অধরা।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:১৭
Share:
০১ ২০

নিপুণ হাতে গলার নলি কাটা। প্রায় প্রত্যেকেরই নাড়িভুঁড়ি, কিডনি খুবলে নেওয়া। লন্ডনের রাস্তায় এ ভাবেই একে একে ৫ যৌনকর্মীর ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ মিলেছিল। সে প্রায় ১৩৪ বছর আগেকার কথা। কে বা কারা ওই যৌনকর্মীদের খুনি? সে রহস্যের সমাধান আজও অধরা। যদিও সে সময় লোকমুখে ‘খুনির’ নাম ছড়িয়ে পড়েছিল— এ কাজ নিশ্চয়ই ‘জ্যাক দ্য রিপারের’!

ছবি: সংগৃহীত।

০২ ২০

জ্যাক দ্য রিপারের আসল পরিচয় কী? স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের বাঘা বাঘা তদন্তকারীরাও এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। ১৮৮৮ সালের শেষ দিকে ৩ মাসের মধ্যে লন্ডনে প্রায় একই কায়দায় খুন হয়েছিলেন এই যৌনকর্মীরা। তাঁদের খুনি হিসাবে জ্যাক দ্য রিপারের নাম আজও ভেসে বেড়ায়। তবে কে এই সিরিয়াল কিলার, তাঁর চেহারাই বা কেমন, তা রহস্যই থেকে গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

Advertisement
০৩ ২০

সম্প্রতি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডগুলি দাবি করেছে, ১৩৪ বছর পর জ্যাক দ্য রিপারের আসল চেহারা দেখা গিয়েছে। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের যে পুলিশকর্তা ওই মামলাগুলির তদন্তে নেমেছিলেন, তাঁর উপহার পাওয়া একটি বেতের লাঠিতেই নাকি খোদাই করা রয়েছে জ্যাক দ্য রিপারের মুখ। যদিও সামলোচকদের পাল্টা দাবি, বিক্রিবাটা বাড়াতেই বেতের লাঠিতে ওই রকম একটি মুখ খোদাই করেছিলেন ফেরিওয়ালারা।

ছবি: সংগৃহীত।

০৪ ২০

ব্রিটেনের অপরাধ জগতের ইতিহাসে জ্যাক দ্য রিপারের মতো নৃশংস খুনি নাকি দেখা যায়নি। খুনের সংখ্যার থেকেও নৃশংসতায় বহু সিরিয়াল কিলারকে ছাপিয়ে গিয়েছে সে। লন্ডনের ইস্ট এন্ডের বস্তিতে যে সমস্ত যৌনকর্মীরা থাকতেন, তাঁরাই ছিলেন জ্যাক দ্য রিপারের শিকার। লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল এলাকায় ঘোরাফেরা করা ওই মহিলাদের উপরে নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছিল সে।

ছবি: সংগৃহীত।

০৫ ২০

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সম্প্রতি একটি বেতের লাঠি উদ্ধার করেছেন ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের পেশাদার পুলিশদের সংস্থা ‘কলেজ অফ পুলিশিং’-এর গবেষকরা। তাতেই খোদাই করা রয়েছে হুডে মাথাঢাকা এক শীর্ণ বৃদ্ধের মুখ। লম্বাটে গড়নের সে মুখে অজস্র পেশির ভাঁজ। নির্লিপ্ত কঠোর চাউনি। এ চেহারাই নাকি জ্যাক দ্য রিপারের।

ছবি: সংগৃহীত।

০৬ ২০

১৮৮৮ সালে যৌনকর্মীদের খুনির সন্ধানে তদন্ত করছিলেন চিফ ইনস্পেক্টর ফ্রেডরিক অ্যাবারলাইন। তাঁর সঙ্গে ছিল ৭ সদস্যের পুলিশের একটি দল। অনেকের নাম তাঁর সন্দেহের তালিকায় থাকলেও শেষমেশ খুনিকে ধরতে পারেননি ফ্রেডরিক।

প্রতীকী ছবি।

০৭ ২০

জ্যাক দ্য রিপার কে? সে রহস্যের জট ছাড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় চিফ ইনস্পেক্টর ফ্রেডরিককে শেষমেশ তদন্ত থেকে সরিয়ে দিয়েছিল স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। অনেকের দাবি, বিদায়বেলায় নিজের দলের কাছ থেকে উপহার হিসাবে ওই বেতের লাঠিটি পেয়েছিলেন ফ্রেডরিক।

ছবি: সংগৃহীত।

০৮ ২০

পুলিশের গবেষকরা জানিয়েছেন, ওয়ারউইকশায়ারের রটন-অন-ডানসমোরের আর্কাইভে কোথাও একটা চাপা পড়েছিল ওই বেতের লাঠিটি। সেটিই খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

০৯ ২০

কলেজ অফ পুলিশিং-এর গবেষক অ্যান্টনি ক্যাশ বলেন, ‘‘বেতের লাঠিটি খুঁজে পাওয়ায় আমরা যারপরনাই উত্তেজিত। আমাদের দেশের ইতিহাসে কুখ্যাত খুনিদের মধ্যে অন্যতম জ্যাক দ্য রিপার। রিপারের মামলাটি আরও কয়েকটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সে সময় থেকে খুনের মামলার সমাধান করতে পুলিশি ও ফরেন্সিক তদন্তে নানা আধুনিক পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করা শুরু হয়েছিল।’’

ছবি: সংগৃহীত।

১০ ২০

গবেষকদের দাবি, জ্যাক দ্য রিপার হিসাবে চিফ ইনস্পেক্টর ফ্রেডরিককের সন্দেহভাজনদের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন চিকিৎসক আলেকজ়ান্ডার পেডাচেঙ্কো। বেতের লাঠিতে খোদাই করা মুখটি আসলে পেডাচেঙ্কোর। যদিও রিপারকে নিয়ে বহু গবেষকের পাল্টা দাবি, ওই রহস্য নিয়ে ব্যবসা ফাঁদতে মুখটি খোদাই করেছিলেন লন্ডনের ফেরিওয়ালারা।

ছবি: সংগৃহীত।

১১ ২০

স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৮৮ সালের ৩১ অগস্ট থেকে ৯ নভেম্বরের মধ্যে ৫ যৌনকর্মীকে খুন করেন জ্যাক দ্য রিপার। তাঁর শিকার হয়েছিলেন মেরি অ্যান নিকোলস, অ্যানি চ্যাপম্যান, এলিজ়াবেথ স্ট্রাইড, ক্যাথরিন এডোয়স এবং মেরি জেন কেলি।

ছবি: সংগৃহীত।

১২ ২০

গলার নলি কেটে খুনের পর ৩ জন যৌনকর্মীর দেহের ভিতরের বহু প্রত্যঙ্গ বার করে নেওয়া হয়েছিল। এক জনের কিডনির অর্ধেকটা কেটে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেয় খুনি। সঙ্গে একাধিক চিরকুট। নীচে স্বাক্ষর করা— জ্যাক দ্য রিপার।

প্রতীকী ছবি।

১৩ ২০

১৮৮৮ সালের শীতের মরসুমে তদন্ত শুরু করেছিলেন চিফ ইনস্পেক্টর ফ্রেডরিক। বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। তবে আসল খুনিকে ধরা যায়নি।

প্রতীকী ছবি।

১৪ ২০

রিপার হিসাবে কারা সন্দেহের তলিকায় ছিলেন? সে তালিকাটিও কম দীর্ঘ নয়। পুলিশের সন্দেহ ছিল, যে নিপুণ কায়দায় যৌনকর্মীদের গলার নলি কাটা হয়েছে, তা কোনও কসাই বা শল্য চিকিৎসকের কাজ। এমনকি, ব্রিটেনের রাজপরিবার থেকে বিশিষ্ট লেখকের নামও তালিকায় উঠে এসেছিল।

ছবি: সংগৃহীত।

১৫ ২০

পুলিশের প্রথমেই সন্দেহ হয়, এ কাজ রাজপরিবারের চিকিৎসক স্যর উইলিয়াম গালের। অনেকের দাবি, খুনের পর দেহগুলিকে সরাতে সাহায্য করেছিলেন তিনি। অনেকের মতে আবার তিনিই ছিলেন আসল রিপার। ঘটনাচক্রে, খুনের সময় হোয়াইটচ্যাপেলে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছিল।

প্রতীকী ছবি।

১৬ ২০

বস্ত্র ব্যবসায়ী জেমস মেব্রিকের কতগুলি ডায়েরি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে তাঁকে সন্দেহ করেছিল পুলিশ। আবার অনেকের দাবি, ডরসেটের আইনজীবী মন্টাগু জন ড্রুইটই আসলে রিপার। নভেম্বরের শেষ খুনের ৭ সপ্তাহ পর আত্মহত্যা করেছিলেন ড্রুইট।

প্রতীকী ছবি।

১৭ ২০

পুলিশের তালিকায় জর্জ চ্যাপম্যান বা অ্যারন কসমিন্সকির নামও ছিল। ৩ স্ত্রীকে বিষ খাইয়ে মারার দায়ে ১৯০৩ সালে প্রথম জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। কসমিন্সকিকে মানসিক রোগীদের হোমে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই মারা যান তিনি।

প্রতীকী ছবি।

১৮ ২০

রিপার হিসাবে নামও উঠেছিল টমাস নিল ক্রিম নামে এক চিকিৎসকের। যদিও ৪ জন যৌনকর্মীকে বিষাক্ত ইঞ্জেকশন দিয়ে খুনের দায়ে ১৮৯২ সালে তাঁকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল।

প্রতীকী ছবি।

১৯ ২০

সন্দেহভাজনদের তালিকা থেকে বাদ যাননি বেশ কয়েক জন খ্যাতনামীও। ছিলেন ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’-এর লেখক লুইস ক্যারল বা উইস্টন চার্চিলের বাবা লর্ড র‌্যান্ডলফ চার্চিলও। এই তালিকায় আরও অনেকেরই নাম ছিল। তবে কারও বিরুদ্ধে রিপার হওয়ার প্রমাণ মেলেনি।

ছবি: সংগৃহীত।

২০ ২০

রিপারের মুখই কি বেতের লাঠিতে রয়েছে? এ নিয়েও কম রহস্য ছড়ায়নি। তবে ওই লাঠিটি ব্রামশিলের পুলিশকর্মীদের একটি কলেজে রাখা আছে। সঙ্গে রয়েছে জ্যাক দ্য রিপার মামলা নিয়ে সে সময়কার বিভিন্ন সংবাদপত্রের অংশবিশেষ।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement