ব্যাঙ্ক লুট করবার পরিকল্পনা করলে অনেক আটঘাট বেঁধে নামে ডাকাতের দল। তবে ব্যাঙ্ক ডাকাতির পরিকল্পনা করলে প্রথমেই এক জনের মাথায় আসবে যে, কী কী নিয়ে তিনি ব্যাঙ্ক লুট করতে যাবেন। তার মধ্যে থাকতে পারে অস্ত্র, মুখোশ, বিশেষ চাবি ইত্যাদি। একই সঙ্গে সিনেমা এবং বিভিন্ন ওয়েব সিরিজের সৌজন্যে সাধারণ মানুষের মনেও সম্যক ধারণা তৈরি হয়েছে যে, এক জন ডাকাত কী নিয়ে ডাকাতি করতে যেতে পারেন। তবে একটা জিনিস যা এক জন মানুষ কল্পনাও করতে পারবেন না, তা হল, এক জন ডাকাত একটি মাত্র ফল নিয়ে ব্যাঙ্ক ডাকাতি করেতে গিয়েছেন এবং সফলও হয়েছেন।
গল্প মনে হলেও এই ঘটনা বাস্তবেই ঘটেছিল। একটি অ্যাভোকাডো নিয়ে একটি নয় পর পর দু’টি ব্যাঙ্ক লুট করেন দক্ষিণ ইজরায়েলের এক ব্যক্তি।
২০১৯ সালের মে মাসে এই ঘটনাটি ঘটে। ৪৭ বছর বয়সি এক ব্যক্তি ইজরায়েলের দু’টি ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে পালিয়ে যান।
কী ভাবে শুধু মাত্র একটি ফলের জোরে ব্যাঙ্ক ডাকাতি করে নিয়ে পালিয়ে যান ডাকাত?
ইজরায়েলের বেদুইন গ্রামের বাসিন্দা ওই ডাকাত, মে মাসের মাঝামাঝি বিগ বিরশেবা শপিং মলে একটি পোস্টাল ব্যাঙ্কের শাখায় প্রবেশ করেন।
ব্যাঙ্কে ঢুকে গট গট করে ক্যাশ কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যান ওই ব্যক্তি। ক্যাশিয়ারের কাছে গিয়ে এগিয়ে দেন একটি নোট। আর এই নোটের উপরের লেখা দেখেই চোখ ছানাবড়া ক্যাশিয়ারের।
নোটের উপর লেখা ছিল, ‘ড্রয়ারে রাখা সমস্ত টাকা আমার হাতে তুলে দিন’। ইজরায়েলের স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই লেখা ছিল হিব্রু ভাষায় এবং বানানও ছিল ভুল।
ক্যাশিয়ার এর পর ইতস্তত হয়ে ব্যাঙ্ককর্মীদের ডাকতে উদ্যত হলে ডাকাতি করতে আসা ব্যক্তি একটি ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন, “তাড়াতাড়ি টাকা নিয়ে ব্যাগে রাখুন না হলে আমি এই গ্রেনেড ছুড়ব।” এই বলে হাতে রাখা একটা গাঢ় সবুজ রঙের গোলাকার জিনিস ক্যাশিয়ারকে দেখান ওই ডাকাত।
ডাকাত দাবি করেন, হাতে যে জিনিসটা রয়েছে, তা একটি গ্রেনেড। আসলে কিন্তু এটি ছিল একটি অ্যাভোকাডো।
‘গ্রেনেড’ দেখে ভয়ের চোটে ড্রয়ারে রাখা সমস্ত টাকা ব্যাগে ঢুকিয়ে ওই ব্যক্তির হাতে তুলে দেন ক্যাশিয়ার। ব্যাগে রাখা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে ব্যাঙ্কের শাখা থেকে বেরিয়ে যান ওই ডাকাত।
এই ঘটনার ঠিক পাঁচ দিন পর বীরশেবার ওরেন সেন্টার শপিং এলাকায় অন্য একটি পোস্টাল ব্যাঙ্কের অন্য শাখায় যান ওই ডাকাত।
ঠিক একই পদ্ধতিতে অ্যাভোকাডো দেখিয়ে এবং ব্যাঙ্ক উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ওই ব্যাঙ্ক লুট করেন ওই ব্যক্তি। যাওয়ার সময় লুট করে নিয়ে যান প্রায় তিন লক্ষ টাকা।
সিসিটিভি দেখে পুলিশ বুঝতে পারে যে দুই ব্যাঙ্কে ডাকাতি করা ব্যক্তি আসলে এক জনই। দু’টি ব্যাঙ্কেই একই টুপি এবং চশমা পরে গিয়েছিলেন তিনি। মুখে থাকা মুখোশও ছিল হুবহু এক।
অ্যাভোকাডো নিয়ে ভয় দেখিয়ে ডাকাতি করেও বিশেষ লাভ করতে পারেননি ওই ব্যক্তি। ফোন ট্র্যাক করে ওই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হয়। এর আগেও ডাকাতির অভিযোগে তিন বছরের জন্য জেল খেটেছিলেন ওই ব্যক্তি।