হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল গত বছর। আমেরিকার শেয়ার বিশ্লেষক সংস্থার নিশানায় ছিলেন আদানি গ্রুপের মালিক গৌতম আদানি। অভিযোগ উঠেছিল, আদানি গ্রুপ কারচুপি করে নিজের সংস্থার শেয়ারের দর বাড়িয়ে নিয়েছে। ঘটনার এক বছর পূর্ণ হল সদ্য।
এক বছর পরে সংস্থার কর্ণধার শিল্পপতি আদানি মুখ খুললেন এই অভিযোগ নিয়ে। ঘটনার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে একটি সংবাদপত্রে নিবন্ধ লিখে আত্মপক্ষ সমর্থন করলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত গৌতমকে সুপ্রিম কোর্টের রায় অবশ্য ইতিমধ্যেই অনেকটা স্বস্তি দিয়েছে।
শেয়ার বাজায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘সেবি’র অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান পর্বে ভরসা রেখে চলতি মাসেই প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ ‘বিশেষ তদন্তকারী দল’ (সিট) গঠনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে।
সেই সঙ্গে স্পষ্ট ভাষায় বলেছে, ‘‘কোনও ‘অসমর্থিত রিপোর্ট’ (পড়ুন হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট)-এ ভরসা করে জাতীয় স্তরের নিয়ন্ত্রক সংস্থার (সেবি) তদন্তে সন্দেহ করা যথাযথ নয়।’’
এই আবহে বৃহস্পতিবার ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’য় লেখা নিবন্ধে গৌতমের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তাই, বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও আমি এটি (হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট) সম্পর্কে আর চিন্তা করিনি।’’
তবে সাধারণ ভাবে তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে এমন ‘আক্রমণ’ অতীতে আর্থিক বাজারে (কর্পোরেট জগতে) সীমাবদ্ধ থেকেছে বলে জানিয়েছেন আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার।
এর পরেই হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এ বার আক্রমণ ছিল দ্বিমুখী। একটি আর্থিক বাজারে। অন্যটি রাজনৈতিক পরিসরে।’’
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট ঘিরে কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম-সহ বিরোধীরা দিনের পর দিন সংসদে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। আদানির কলমে ইঙ্গিত করা হয়েছে সে দিকেই।
বিরোধীদের পাশাপাশি গৌতম নিশানা করেছেন সংবাদমাধ্যমের একাংশকেও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সংবাদমাধ্যমের কিছু ব্যক্তির প্ররোচনায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চলেছে। যার ফলে ক্ষতি হয়েছে শেয়ার বাজারে। আমার আরও বেশি কষ্টের যে যে হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী তাদের সঞ্চয় হারিয়েছেন।’’
তবে তাঁর শত্রুদের পরিকল্পনা পুরোপুরি সফল হয়নি বলে দাবি গৌতমের। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমাদের শত্রুদের ছক পুরোপুরি সফল হলে তার প্রভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো সম্পদ, সমুদ্রবন্দর এবং বিমানবন্দরগুলিকে পরিচালন ব্যবস্থা পঙ্গু হয়ে যেতে পারত। দেশের পক্ষে যা হতে পারত একটি বিপর্যয়ের মতো পরিস্থিতি।’’
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলায় তাঁর সংস্থা দৃঢ় পদক্ষেপ করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধারের।