রোহিত শর্মাদের কাছে এশিয়া কাপে ‘হেরে’ গিয়েছেন বিরাট কোহলী! ঠিকই পড়েছেন। আন্তর্জাতিক স্তরের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৩৩১টি ছয় হাঁকালে কী হবে, ওই টুর্নামেন্টে রোহিতদের ছয়ের রেকর্ডে থাবা বসাতে পারেননি বিরাট। তাঁর থেকে এই রেকর্ডে এগিয়ে রয়েছেন রোহিত-সহ আরও পাঁচ ভারতীয়।
রবিবার এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামবেন রোহিতরা। গত বছরের ২৪ অক্টোবর বিশ্বকাপের পর দুবাইয়ে মুখোমুখি দুই ‘চিরশত্রু’। স্বাভাবিক ভাবেই কোহলীর ব্যাটের দিকেও নজর রয়েছে সকলের। প্রায় তিন বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটিও শতরান না থাকলে কী হবে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনিই তো সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি রানের মালিক। তিন সপ্তাহের বিশ্রামের পর রবিবার পুরনো কোহলীকে দেখা যাবে?
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাতটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৩১১ রান বেরিয়েছে কোহলীর ব্যাট থেকে। গড় ৭৭.৭৫। তবে এশিয়া কাপে ছয় হাঁকানো সেরা পাঁচ ভারতীয়ের তালিকায় রোহিতদের নাম থাকলেও কোহলী নেই।
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি ছয় হাঁকিয়েছেন এমন প্রথম পাঁচ ভারতীয়দের তালিকায় পঞ্চম নামটি বীরেন্দ্র সহবাগের। টেস্টের মতো ধীরলয়ের ম্যাচগুলিতে যিনি বহু মারকাটারি ইনিংস খেলেছেন। নজফগড়ের নবাবের ঝুলিতে রয়েছে দু’টি ত্রিশতরানও (৩০৯ এবং ৩১৯)।
বর্তমান টি-টোয়েন্টির আঙিনায় সহবাগ খেললে বহু রেকর্ডই যে ধুলোয় লুটিয়ে পড়ত, তা নিয়ে সংশয় নেই বহু ক্রিকেট-পণ্ডিতের। এই ফরম্যাটের ১৯টি ম্যাচে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৪৫.৩৮। রয়েছে ৩৯৪ রান। ছয় মেরেছেন ১৬টি। তার মধ্যে শুধু এশিয়া কাপেই রয়েছে ১৩টি ইনিংসে ১২টি। যদিও সহবাগের সময় এই টুর্নামেন্টে টি-টোয়েন্টির বদলে এক দিনের ম্যাচ খেলা হয়েছিল।
এশিয়া কাপে ছয় মারার নিরিখে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের রেকর্ডও হেলাফেলার মতো নয়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির ঝুলিতে প্রায় দু’হাজারের কাছাকাছি টি-টোয়েন্টি রান রয়েছে। স্ট্রাইক রেট ১০৭।
এশিয়া কাপে ভারতীয়দের ছয় মারার তালিকায় সৌরভ রয়েছেন চার নম্বরে। এই টুর্নামেন্টের ১২ ইনিংসে ১৩টি ছয় হাঁকিয়েছেন তিনি। প্রায় ১৪ বছর আগে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন সৌরভ। তবে এ রেকর্ডের তালিকায় এখনও তাঁকে ঠেলে নামাতে পারেননি কেউ। সহবাগের মতো তাঁর ছয়গুলিও এসেছে এশিয়া কাপের এক দিনের ম্যাচে।
শেষ বলে ছক্কা মেরে বহু টি-টোয়েন্টি জিতিয়েছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। এই তালিকা তাঁকে ছাড়া বোধ হয় অসম্পূর্ণই থেকে যেত। মাহি রয়েছেন তিন নম্বরে। ৯৮টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যাঁর স্ট্রাইক রেট ১২৬.১৩। রয়েছে ১৬১৭ রান।
টি-টোয়েন্টি কেরিয়ারে ৫২টি ছক্কা মেরেছেন মাহি। তার মধ্যে এশিয়া কাপের ২০টি ইনিংসে রয়েছে ১৬টি ছয়। এই টুর্নামেন্টে তাঁরা স্ট্রাইক রেট ৯১.৩।
আইপিএলে মাহির সঙ্গে মিলে বহু ম্যাচের রং বদলে দিয়েছেন সুরেশ রায়না। তবে টি-টোয়েন্টিতে স্ট্রাইক রেটের নিরিখে মাহিকে টপকে গিয়েছেন তিনি (১৩৪.৮৭)। যদিও এ ফরম্যাটে মাহির থেকে সামান্য কম রানের মালিক রায়না (১৬০৫)।
এশিয়া কাপের ১৬টি ইনিংসে ১৮টি ছয় মেরে এই তালিকায় দু’নম্বরে রয়েছেন রায়না। টিম ইন্ডিয়ার মিডল অর্ডারের এই বাঁ-হাতির এশিয়া কাপে স্ট্রাইক রেট ছিল ১১২.৪।
এই টুর্নামেন্টে ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছয় হাঁকিয়েছেন রোহিত শর্মা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রোহিতের ব্যাট থেকে বেরিয়েছে ৩৪৮৭ রান। এই তালিকায় তাঁর স্ট্রাইক রেটও সবচেয়ে বেশি (১৪০.২৬)। শতরান চারটি।
এশিয়া কাপের ২৬টি ইনিংসে ২১টি ছয় মেরেছেন রোহিত। স্ট্রাইক রেট ৯০। সঙ্গে রয়েছে একটি শতরান এবং সাত-সাতটি অর্ধশতরান।
এশিয়া কাপে ছক্কা মারার নিরিখে রোহিতদের থেকে কতটা পিছিয়ে রয়েছেন কোহলী? পরিসংখ্যান বলছে, এই টুর্নামেন্টের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তবে এশিয়া কাপে টি-টোয়েন্টি এবং এক দিনের ম্যাচ মিলিয়ে মোট চারটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন কিং কোহলী।